মৌ’বাজারে বন্যায় ১৪ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত, হাসপাতালে এখনো পানি

7
বন্যা কবলিত কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারে মনু কুশিয়ারা ধলাইসহ নদনদীর পানি কমলেও হাকালুকি হাওরের পানি এখনো কমেনি। কুলাউড়া জুড়ী বড়লেখা উপজেলায় তলিয়ে আছে অনেক বাড়িঘর। কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিতরে এখনো হাঁটু পর্যন্ত পানি। স্থানীয় কয়েক ব্যক্তির উদ্যোগে টিন ও তেলের ডাম দিয়ে ভাসমান সেতুর মতো সড়ক করে দেওয়ায় সেটা দিয়ে চিকিৎসক কর্মকর্তা কর্মচারী এবং রোগীরা যাতায়াত করছেন।
এদিকে গত ৩-৪ দিন বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় হাওরের পানি ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে। আবার দীর্ঘ সময় ধরে হাওরে বাড়িঘর তলিয়ে থাকায় পানির ঢেউয়ে অসংখ্য বাড়িঘর বিধস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাওর এলাকার জনপ্রতিনিধিরা । পাশাপাশি বন্যা কবলিত এলাকায় মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। শিশুকিশোরসহ বিভিন্ন বয়সী লোকজন সর্দি কাশি জ্বর এমনকি পানি বাহিত নানা রোগে ভোগছে। বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে ব্যাপক ত্রাণ তৎপরতা শুরু হলেও সরকারি ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে জানা গেছে ।
হাকালুকি হাওরের অভ্যন্তরে কুলাউড়া উপজেলার ভুকশিমইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির জানান, হাওরে পানি কমছে তবে তা খুবই কম। গত ৩/৪ দিনে হাওরে মাত্র ২ ইঞ্চি পরিমান পানি কমেছে।
হাকালুকি হাওর অভ্যন্তরের অপর ইউনিয়ন বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এখলাচুর রহমান জানান,দীর্ঘ সময় ধরে পানি জমে থাকায় হাওরের পানির ঢেউয়ে তার ইউনিয়নের ৭-৮টি গ্রামের ৩ শতাধিক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে প্রয়োজননের তুলনায় ত্রাণ যাচ্ছে কম। তিনি জানান সোমবার পর্যন্ত মাত্র ৩০০ লোকের জন্য ১০ কেজি করে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। তবে নতুন ৬ টন চাল পাওয়ায় তা মঙ্গলবার বিতরণ করার উদ্যোগ নিয়েছেন।
কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা ফেরদৌস জানান, আশ্রয়কেন্দ্রে এবং বন্যা কবলিত এলাকায় শিশুদের জ্বর সর্দিকাশি পেটের পীড়া আছে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রতি ইউনিয়নে একটি করে মেডিকেল টিম কাজ করছে
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্র জানায় চলতি বন্যায় মৌলভীবাজার জেলার ৭ উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সমাধি হয়েছে। জেলার ৭ উপজেলার ৬ হাজার পরিবারের ১৪ হাজারের বেশী ঘরবাড়ি বিধস্ত হয়েছে।
বন্যা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্রে আরও জানা গেছে মৌলভীবাজার জেলার ৭ উপজেলায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত লোকের সংখ্যা ২ লাখ ৬৩ হাজার ৪ শ। তবে বেসরকারি হিসেবে তা ৫ লাখের বেশী হবে বলে জানিয়েছেন ত্রাণ কাজে সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবীরা।
এদিকে মৌলভীবাজার জেলার ৭ উপজেলার বন্যার্তদের জন্য এপর্যন্ত ৫ শ ৮৫ মেট্রিকটন চাল এবং নগদ ৪০ লাখ ৫৫ হাজ্জার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়া ১লাখ ৪৫হাজার পিস পানি সরবরাহ ট্যাবলেট বিতরণ চলমান।