উন্নয়নবিষয়ক সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী ॥ দেশটাকে আমাদের মতো গড়বো

21

কাজিরবাজার ডেস্ক :
দেশের গবেষণা, শিক্ষায় আগ্রহ রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। দেশে আরও বেশি গবেষণা না হওয়ায় মন্ত্রিসভা বা একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আক্ষেপ করেন বলে জানান, পকিল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি আরও বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের হিসাব অনুযায়ী, দেশের মাথাপিছু আয় ১৯০৯ মার্কিন ডলার। ২০৪১ সালে দেশের মাথাপিছু আয় দাঁড়াবে সাড়ে ১২ হাজার ডলারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর ২০৪১ সালে সাড়ে ১২ হাজার ডলার মাথাপিছু আয় দাঁড়ানোর এই পরিকল্পনা আজ রবিবার তুলে ধরবেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর নীলক্ষেতে জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমিতে (এনএপিডি) প্রথম আন্তর্জাতিক পরিকল্পনা ও উন্নয়নবিষয়ক সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে এ তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, রবিবার আমরা বড় পরিকল্পনা নিয়ে যাচ্ছি প্রধানমন্ত্রী বরাবর। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০৪১ সালনাগাদ দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় হবে সাড়ে ১২ হাজার ডলার। এটা বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী। ২০৪১ সালে সেই বাজারদর বেড়ে ১৬ হাজার ডলারে দাঁড়াতে পারে। এম এ মান্নান বলেন, আমাদের সভ্য জাতি হিসেবে হাজির হওয়ার বোধ হয় একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের দলের নেতৃত্ব বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। যখন দল গঠন হয়েছিল সে সময় নেতারা উপলব্ধি করেছিলেন আমাদের কর্তৃত্ব হাতে নিতে হবে। আমাদের স্বাধীন হতে হবে। আমাদের নেতারা সে সময় সেই চেষ্টা চালিয়েছেন। বর্তমান দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী বুঝতে পারলেন অন্যায় থেকে দারিদ্র্য থেকে আমাদের মর্যাদার আসনে নিতে হবে। সুপরিকল্পিতভাবে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। তিনি এগিয়ে নিচ্ছেনও। মন্ত্রী বলেন, বাঙালী বাঙালীর পরিচয়ে ওপরে উঠবে।
গবেষণার কথা উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, দেশে আরও বেশি গবেষণা না হওয়ায় প্রতিটি মন্ত্রিসভা ও জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় আক্ষেপ করেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেশের গবেষণা, শিক্ষায় অত্যন্ত আগ্রহী। প্রতিটি একনেক সভায়, প্রতিটি মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি আক্ষেপ করেন যে, কেন আরও বেশি করে গবেষণা এখানে হবে না। কেন পশ্চিমারা বারবার এটা ওটা করে দুনিয়া জয় করবে। সেখানে আমরা কি ছোটখাটো কিছু করতে পারি না? সুতরাং যার যার যেখানে গবেষণার ক্ষেত্র রয়েছে, উদ্ভাবনের জায়গা রয়েছে, সেখানে আমাদের নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
পরিকল্পনা উন্নয়ন একাডেমি এখানে আরও ভূমিকা রাখতে পারে সে বিষয়ে তাদের কাজের আহ্বান জানান। মন্ত্রী বলেন, গবেষণার মাধ্যমে নতুন নতুন ধারণা নিয়ে আসলে আমরা পরিকল্পনা করে এগিয়ে যেতে পারব। যাতে করে আমাদের জনগণের অর্থ সঠিক কাজে, সঠিক জায়গায় ব্যয় করতে পারি। আমাদের দেশের যেসব নাগরিক অন্যায়ভাবে বঞ্চিত অবস্থায় আছে, তাহলে আমরা তাদের বঞ্চনা কিছুটা হলেও কমাতে পারব।
মন্ত্রী বলেন, দেশটা আমাদের। আমাদের মতো করে দেশটাকে গড়ব এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করব। দেশের সকল নাগরিক, সে যেই হোক, শেষ ব্যক্তিটি পর্যন্ত সর্বনিম্ন ন্যায়বিচার, সর্বনিম্ন সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করতে হবে। শেষ ব্যক্তিও যেন মনে করেন, প্রধান ব্যক্তি যে মর্যাদা ভোগ করেন, তিনিও সেই মর্যাদা ভোগ করছেন। এটা দুরূহ কাজ। কিন্তু এটা করতে হবে। এ সময় জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমির কাছে দেশের চিন্তা-চেতনা, গবেষণা বিদেশীদের সামনে তুলে ধরার জন্য আহ্বান জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।
এই কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল একাডেমি ফর প্ল্যনিং এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এনএপিডি) মহাপরিচালক মোঃ আবুল কাশেম, এনএপিডির অতিরিক্ত মহাপরিচালক এ এ এম নাসিহুল কামাল।
এছাড়াও দিনব্যাপী দুটি সেশন অনুষ্ঠিত হয়। একটি হলো ডিজিটালাইজেশন এ্যান্ড পাবলিক সার্ভিস ডেলিভারি নামে অন্যটি হলো ইন্ডাস্ট্রি রেভুলেশন। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন হসেবে আজ রবিবার দুটি সেশন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।