একজন এম সাইফুর রহমান

24

মো: আব্দুল হাছিব

২০০১ সালে বিএনপি তথা চারদলীয় জোট ক্ষমতায় আসার পর তৎকালীন অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমান সিলেটের উন্নয়নের জন্য নিজেকে আত্মনিয়োগ করেন।
তিনি সিলেটে ওসমানী বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, সিলেট কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, সিলেট শিক্ষাবোর্ড, সিলেট আধুনিক রেলওয়ে ষ্টেশন, সিলেট কীন ব্রীজ সংস্কার, তেমুখি ব্রীজ নির্মাণ, শাহপরান সেতু নির্মাণ, কাজিরবাজার সেতুর কাজ প্রায়ই সম্পন্ন, তেমুখি বাইপাস সড়ক নির্মাণ, সুরমা নদীর তীর সংরক্ষণ ও সৌন্দর্য বর্ধন, আধুনিক সার্কিট হাউস নির্মাণ, কোর্ট এর আধুনিকায়ন ও ভবন নির্মাণ, তালতলা, লামাবাজার চৌহাট্টা হয়ে আম্বরখানা রোডকে ভিআইপি রোড নির্মাণ, কদমতলীতে মুক্তিযোদ্ধা চত্ত্বর ও হুমায়ুন রশীদ স্কয়ার নির্মাণ, এসএমপি গঠন, লাক্কাতুরায় আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম নির্মাণ, দক্ষিণ সুমার আলমপুরে ফায়ার সার্ভিস, শিশু পার্ক, বিভাগীয় পর্যায়ে অফিস আলমপুরে স্থাপন, বিআরটিসির ডিপো ও ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করেন।
এছাড়া তিনি সিলেটে রাস্তাঘাট, মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির, গীর্জার ব্যাপক উন্নয়ন করেন। নগরীর শাহী ঈদগাহ ও চালিবন্দরের শ্মশানঘাটের উন্নয়ন করেন। সিলেট অডিটোরিয়াম বর্তমানে নজরুল অডিটোরিয়াম আধুনিকায়ন করেন।
ওসমানী মেডিকেল কলেজে হার্ট চিকিৎসার জন্য এর আলাদা ওয়ার্ড সহ ব্যাপক উন্নয়ন করেন। চৌহাট্টায় তৎকালীন সদর হাসাপতালের উন্নয়নেও ভূমিকা রাখেন।
হযরত শাহজালাল (রহ.), হযরত শাহপরান (রহ.) ও বুরহান উদ্দীনের মাজার, মসজিদ ও মাদ্রাসার অবকাঠামো নির্মাণ সহ ব্যাপক উন্নয়ন করেন। সিলেট এমসি কলেজ, মদনমোহন কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ সহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবকাঠামো নির্মাণ করেন। এছাড়া প্রেসক্লাব ও মাতৃমঙ্গল হাসপাতালেরও উন্নয়ন করেন।
এমনকি মৃত্যুর আগের দিনেও বন্দরবাজার মসজিদে ২০০ শত বস্তা সিমেন্ট দান করেন। এত অল্প সময়ে এই বিশাল উন্নয়ন কর্ম সাধন মনে হয় দেশের কোথাও হয় নাই।
এম সাইফুর রহমানের উন্নয়নে অভিভূত হয়ে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত তখনকার সময়ে বলেছিলেন, আমি সিলেটে কি করবো? সব কাজ তো এম সাইফুর রহমান করে গেছেন।
জনাব এম সাইফুর রহমানের উন্নয়ন কর্মকান্ড লিখে শেষ করা যাবে না।
তিনি উন্নয়ন কর্মকান্ড নিজ চোখে দেখার জন্য সপ্তাহে একদিন সিলেট আসতেন। তিনি প্রায়ই সভা, সেমিনারে বলতেন, কাজ নিয়ে আসেন, আমি আপনাদের কাজ করে দিবো।
একদিন কদমতলীর মকবুল ভাইয়ের বাড়িতে সভায় অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান বলেন পোশাক শিল্প বা গার্মেন্ট সেক্টর আমাদের অর্থনীতিতে বিশাল ভূমিকা রাখছে, কিন্তু ডাউন করে দেয়ার জন্য ষড়যন্ত্র হচ্ছে।
কদমতলীতে সানাই সেন্টারে আরেক প্রোগ্রামে বলেন শেয়ার মার্কেটে এত সূচক বৃদ্ধি শুভকর নয় যে কোন সময় পড়ে যেতে পারে, তাঁর আশংকায় পরবর্তীতে সত্যি হয়েছিলো।
একদিন নগরীর ২৭নং ওয়ার্ডে বিসিক এরিয়া গোটাটিকর-আলমপুরে এসে গাড়ি থেকে নেমে বলেন এই এলাকা বাইরের দেশের মতো।
সত্যি কথা হলো, এম সাইফুর রহমান কর্মপাগল ও সব সময় উন্নয়নকর্মে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি ছিলেন সিলেট বন্ধু।
সিলেটের উন্নয়ন ও এম সাইফুর রহমান সমার্থক শব্দ, সিলেটের নামের পাশে এম সাইফুর রহমানে নাম আজীবন থাকবে।
১০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে এই দোয়া করি, মহান আল্লাহতায়ালা মরহুম এম সাইফুর রহমানকে যেনো জান্নাতবাসী করেন। আমীন।

লেখক : সভাপতি, নাগরিক অধিকার ও পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলন, সিলেট, সহ সভাপতি, সিলেট মহানগর ছাত্রদল।