শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন ॥ সিলেটের ১২ উপজেলায় বেশির ভাগেই নৌকার জয় জয়কার

84
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিতরা হচ্ছেন- (উপরের বা থেকে) সিলেট সদরে আলহাজ্ব আশফাক আহমদ, দক্ষিণ সুরমায় আবু জাহিদ, বিশ্বনাথে এস এম নুনু মিয়া, বালাগঞ্জে মোস্তাকুর রহমান মফুর, (মাঝের বা থেকে) কানাইঘাটে আব্দুল মোমেন চৌধুরী, জকিগঞ্জে লোকমান উদ্দিন চৌধুরী, গোলাপগঞ্জে ইকবাল আহমদ চৌধুরী, বিয়ানীবাজারে আবুল কাশেম পল্লব, (নিচের বা থেকে) গোয়াইনঘাটে ফারুক আহমদ, জৈন্তাপুরে কামাল আহমদ, ফেঞ্চুগঞ্জে নুরুল ইসলাম, কোম্পানীগঞ্জে শামীম আহমদ।

সিন্টু রঞ্জন চন্দ :
৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে সিলেটের ১২টি উপজেলায় গতকাল সোমবার দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্তএকটানা এই ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। তবে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে এবার ভোটার উপস্থিতি ছিল কম।

সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দুটি কেন্দ্রে মহিলা ভোটারদের দীর্ঘ লাইন। ছবি- রেজা রুবেল

বেসরকারীভাবে প্রাপ্ত ফলাফল বিজয়ী প্রার্থীরা হলেন যারা:
সিলেট সদর উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতীকে ৩য় বারের মতো চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন আলহাজ্ব আশফাক আহমদ। ৯১টি কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে।
ঘোষিত ফলাফলে আশফাক আহমদ নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৪৫ হাজার ৫শ’ ৩২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মাজহারুল ইসলাম ডালিম আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ২৭ হাজার ১২৪ ভোট এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এডভোকেট নুরে আলম সিরাজী মোটরসাইকেল প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৪ হাজার ৭৩৬ ভোট। ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে সদর উপজেলা গঠিত। এখানে স্থায়ী ভোটকেন্দ্র রয়েছে ৯১টি। এছাড়াও স্থায়ী ভোটকক্ষ ৪৮২ ও অস্থায়ী ভোটকক্ষ রয়েছে ৬১টি। এ উপজেলায় মোট ভোটকক্ষের সংখ্যা ৫৪৩টি। প্রিজাইডিং অফিসার ৯১জন ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ৫৪৩জন। এখানে পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন ১০৮৬জন। এ উপজেলায় মোট ভোটার ২ লাখ ১৯ হাজার ৩৩৫জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ১২ হাজার ৭১২ ও নারী ভোটার ১ লাখ ৬৬ হাজার ২৩জন।

আখালিয়ায় জাল ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষের সময় পুলিশের উপস্থিতি ও আটককৃত ১ জন।

এদিকে, এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে পালকি প্রতীকে ১১ হাজার ৫শ’ ৩২ ভোট পেয়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের তালিকাভুক্ত রেফারি ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মিল্লাত আহমদ চৌধুরী নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রাজু গোয়ালা বৈদ্যুতিক বাল্ব প্রতীকে লড়াই করে পেয়েছেন ৮ হাজার ৬শ’ ৬টি ভোট।
অপরদিকে সদর উপজেলা নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয় পেয়েছেন শামীমা আক্তার। ফুটবল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি ভোট পেয়েছেন ৩৭ হাজার ২শ’ ১৫। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দিলরুবা বেগম পদ্মফুল মার্কায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ভোট পেয়েছেন ২৬ হাজার ১৫ ভোট। এ উপজেলায় মোট ভোটার ২ লাখ ১৯ হাজার ৩শ’ ৩৫ ভোট। এরমধ্যে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোট কাষ্ট হয়েছে ৮০ হাজার ৩৪ ভোট। এছাড়া উপজেলায় মোট ভোটার ২ লাখ ১৯ হাজার ৬শ’ ৩৫। এরমধ্যে কাষ্ট হয়েছে ৮০ হাজার ১শ’টি।
দক্ষিণ সুরমায় উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ আবু জাহিদ নৌকা প্রতীক নিয়ে ১৮ হাজার ৫শ’ ১৩ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় বারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আ’লীগের বিদ্রোহী প্রাথী আলহাজ্ব ময়নুল ইসলাম অনারস প্রতীকে ১৫ হাজার ৭শ’ ২৫ ভোট পেয়েছেন।
এছাড়া এই উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে মাইক প্রতীক নিয়ে মো: মাহবুর রহমান ২০ হাজার ২শ’ ৬৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নন্দন চন্দ্র পাল টিউওয়েল প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ৭ হাজার ৪৪টি ভোট। অপরদিকে এ উপজেলা থেকে এবার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ফুটবল প্রতীকে আইরিন রহমান কলি ২৩ হাজার ৯শ’ ১৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হাঁস প্রতীকে মোচ্ছা: লায়লা বেগম ১০ হাজার ৯শ’ ৬৫ ভোট পেয়েছেন।
বিশ্বনাথ উপজেলায় ৩১ হাজার ৫ শত ২২ ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এস এম নুনু মিয়া নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার

চা বাগান অধ্যুষিত লাক্কাতুরা কেন্দ্রে ভোট দিচ্ছেন একজন মহিলা ভোটার।

নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কাপ পিরিচ প্রতীক নিয়ে উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান সোহেল আহমদ চৌধুরী পেয়েছেন ১৮ হাজার ৫ শত ৯৬ ভোট।
এছাড়া এই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী বই প্রতীকের মাওলানা হাবিবুর রহমান লিটু বেসরকারীভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি বাংলাদেশ আনজুমানে আল-ইসলাহ এর সমর্থিত প্রার্থী ছিলেন। নির্বাচন ফলাফলে ৭৪টি কেন্দ্র তিনি মোট ভোট পেয়েছেন ২২হাজার ৯৩৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তালা প্রতীকের আলতাফ হোসেন পেয়েছেন ১৫ হাজার ৩২১ ভোট। এ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
বালাগঞ্জ উপজেলার ৩৪টি কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী স্থানীয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান মফুর ২৫ হাজার ৩শ’ ৮৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান আবদাল মিয়া ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৮ হাজার ৮৮ ভোট। এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের ফলাফল তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব লোকমান উদ্দিন চৌধুরী নৌকা প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৪৮ হাজার ২শ ৩৯টি এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টি মনোনীত কেন্দ্রীয় যুব সংহতি নেতা মরতুজা আহমদ চৌধুরী দলীয় প্রতীক লাঙ্গল নিয়ে ভোট পেয়েছেন ১১ হাজার ৩শ ৫২ টি ভোট।
এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন আল-ইসলাহ্ সমর্থিত মাওলানা আব্দুস সবুর। তিনি চশমা প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ৩০হাজার ১শ ২৭ টি এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী উপজেলা শ্রমিকলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সজল কুমার সিংহ মাইক প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ১২হাজার ১শ ৭৮টি। এদিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদিকা মানবাধিকার কর্মী মাজেদা রওশন শ্যামলী। তিনি কলস প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ২৫ হাজার ৬শ ৬টি এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সুলতানা বেগম ফুটবল প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ২৪ হাজার ৮শ ৮২টি।

সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী আশফাক আহমদ একটি কেন্দ্রে ভোট দিচ্ছেন।

এ উপজেলায় ৭৭টি ভোট কেন্দ্রের ৩৫৩টি কক্ষে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়। এই নির্বাচনে মোট ১ লক্ষ ৫৪ হাজার ৫শ ২০ জন ভোটারের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন ৬২ হাজার ৭শ ৪৮জন। উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারি রিটার্নিং অফিসার মোঃ হারুন মোল্লা বলেন, ৪০.৬২% ভোটার উপস্থিত হয়েছেন এবং তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন।
কানাইঘাট উপজেলায় ৮১টি কেন্দ্রে ২৯ হাজার ৭শ’ ০৯ ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নৌকা প্রতীক নিয়ে আব্দুল মোমিন চৌধুরী বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোস্তাক আহমদ পলাশ মোটর সাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ২১ হাজার ২২ ভোট। এছাড়া এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে চশমা প্রতীকে ৩০ হাজার ৭শ’ ৭৯ ভোট পেয়ে মাওলানা আব্দুল্লাহ শাকির বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এমাদুর রহমান টিউবওয়েল প্রতীক নিয়ে ৮ হাজার ৪শ’ ৮৮ ভোট পেয়েছেন। এদিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে কোন প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় একক ভাবে খাদিজা বেগম পূর্বেই বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছেন।
গোলাপগঞ্জ উপজেলায় আ’লীগের মনোনীত প্রার্থী উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরী নৌকা প্রতীক নিয়ে ৪৯ হাজার ৯শ’ ১৩টি ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক এডভোকেট মাওলানা রশিদ আহমদ আনারস প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১৫হাজার ১৭১টি ভোট।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে সিলেট মহানগর সেচ্ছাসেবক লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনসুর আহমদ বই প্রতীক নিয়ে ৩৫ হাজার ২শ’ ৯৯টি ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী গোলাপগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আহাদ বৈদ্যুতিক বাল্ব প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১৩ হাজার ৮শ’ ৮৮টি ভোট। অপর প্রার্থী পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিপন তালা প্রতীকে ৮হাজার ১৭৯, জেলা যুবলীগ নেতা শাহিন আহমদ উড়োজাহাজ প্রতীকে পেয়েছেন ৭ হাজার ৪শ’ ৩২ ভোট ও উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক শরিফ উদ্দিন শরফ পেয়েছেন ৫১৭টি ভোট।

ভোটার নেই, তাই দায়িত্বরত আনসার সদস্য ঘুমিয়ে অলস সময় পার করছেন।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন সিলেট মহানগর যুব-মহিলা লীগের সভাপতি ও সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজিরা বেগম শীলা। তিনি ফুটবল প্রতীকে পেয়েছেন ৪০হাজার ৪শ’ ৮৪টি ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মাছুমা সিদ্দিকা পদ্মফুল প্রতীক নিয়ে ১৫হাজার ২৮০টি ও অপর প্রার্থী নার্গিস পারভীন কলস প্রতীকে ৮হাজার ৩শ’ ২৬টি ভোট পেয়েছেন। নির্বাচনে মোট ২লাখ ২২হাজার ৫৭৯জন ভোটারের মধ্যে মোট ভোট পড়েছে ৬৭ হাজার ১৯৬টি ৷ এর মধ্যে বৈধ ভোট ৬৪হাজার ১৩১টি। বাতিল হয়েছে ৩হাজার ৪৯টি ভোট। নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা সহকারী নির্বাচন কর্মকর্তা সাইদুর রহমান।
জৈন্তাপুর উপজেলায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ঘোড়া প্রতীক নিয়ে কামাল আহমদ বিজয়ী হয়েছেন। এছাড়া এ উপজেলায় ৪৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪৩টি কেন্দ্রে ভাইস চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী চশমা প্রতীক নিয়ে ১৪ হাজার ৫৬ ভোট পেয়ে মাওলানা কবির আহমদ নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পেয়েছেন ১১ হাজার ৫ ভোট।
ফেঞ্চুগঞ্জে উপজেলার ৩৬টি কেন্দ্রে কাপ পিরিচ প্রতীকে নিয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নূরুল ইসলাম ১২ হাজার ৮শ’ ৬৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির বহিষ্কৃত ওয়াহিদুজ্জাম সুফি দোয়াত কলম প্রতিক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ৬ হাজার ৬শ’ ৮৭টি।
এছাড়া এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন ফেঞ্চুগঞ্জ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান জাহিরুল ইসলাম মুরাদ তালা প্রতীকে ৯ হাজার ৫৫৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো.সাহাদ মিয়া টিউবওয়েল প্রতীকে পেয়েছেন ৮ হাজার ৮০৪ ভোট। মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন সেলিনা ইয়াসমীন ফুটবল প্রতীকে পেয়েছেন ১৪ হাজার ৮৬৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোছা: মোহিনী বেগম কলস প্রতীকে পেয়েছেন ৯ হাজার ৩০৪ ভোট।
গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমদ। তিনি মটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ৩০ হাজার ৭৭টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া হেলাল নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ২০ হাজার ৫৫২ ভোট।

কানাইঘাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ নিয়ে কয়েকটি চিত্র।

এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) জমিয়ত নেতা মাওলানা গোলাম আম্বিয়া কয়েছ চশমা প্রতীক নিয়ে ৩১ হাজার ৯২৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জয়নাল আবেদীন টিউবওয়েল প্রতীক নিয়ে ২৮ হাজার ১৫১ ভোট পেয়েছেন। এছাড়া এমসি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন মাইক প্রতীক নিয়ে ১০ হাজার ৩১৯ এবং মুসলিম উদ্দিন ভূঁইয়া উড়োজাহাজ প্রতীক নিয়ে ৩ হাজার ৫২৯ ভোট পেয়েছেন।
তাছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) আফিয়া বেগম ফুটবল প্রতীক নিয়ে ২৫ হাজার ২৬৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী খোদেজা রহিম কলি ২৪ হাজার ৫৬৮ ভোট পেয়েছেন। এছাড়া পদ্মাদেবী হাঁস প্রতীক নিয়ে ২১ হাজার ৪৩৬ এবং মনোয়ারা বেগম বীনা কলস প্রতীক নিয়ে ৭ হাজার ১৩৭ ভোট পেয়েছেন। উপজেলায় ৯টি ইউনিয়নে মোট ভোট কেন্দ্র ছিল ৬৯টি। নির্বাচনের ফলাফলের তথ্য নিশ্চিত করেছেন সহকারী নির্বাচন কর্মকর্তা ইকরামুল কবীর। তিনি বলেন, এবারের অনুষ্ঠিত নির্বাচনে গোয়াইনঘাট উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৮২হাজার। এর মধ্যে ভোট পড়েছে ৮২ হাজার ৩০৭। ২ হাজার ১৮০ ভোট বাতিল হয়। মোট ৮০ হাজার ১৫৭ভোট বৈধ ঘোষণা করা হয়।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শামীম আহমদ অনারস প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তবে তার ভোটের সংখ্যা পাওয়া যায়নি। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের ফলাফল তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
বিয়ানীবাজারে ৮৯টি কেন্দ্রে আ’লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী হেলিকপ্টার প্রতীক নিয়ে ২০ হাজার ১ ভোট পেয়ে আবুল কাশেম পল্লব বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আনারস প্রতিকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জাকির হোসেন পেয়েছেন ১১ হাজার ৬শ’ ২০ ভোট। এছাড়া আওয়ামীলীগের আতাউর রহমান নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১০ হাজার ৯ শত ৭২ ভোট।
এছাড়া বিয়ানীবাজারে ভাইস চেয়ারম্যান তালা প্রতিক নিয়ে ২৮ হাজার ০৫৮ ভোটে পেয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক মোহাম্মদ জামাল হোসেন নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী খছরুল হক খসরু ভোট পেয়েছেন ২৭ হাজার ১শ’ ৬০ ভোট। এদিকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সর্বাধিক ভোট পেয়ে ফের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন রোকশানা বেগম লিমা । তিনি ফুটবল প্রতিকে ৩৮ হাজার ১শ’ ০৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হাসিনা আক্তার হাঁস প্রতিকে পেয়েছেন ১৮ হাজার ৭ শ’ ৬৫ ভোট। প্রার্থীদের বেসরকারীভাবে বিজয়ী ঘোষণা করেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ মাছুম মিয়া।
উল্লেখ্য, ১২টি উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ১৭ লাখ ৯৩ হাজার ৭১০ জন এবং মোট ভোটকেন্দ্র ছিল ৮১৬টি। চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান ৩টি পদে লড়েছেন ১৭৬ জন প্রার্থী। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫৯ জন, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে ৭৬ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪১ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।