মাদক নিয়ন্ত্রণে সামাজিক সচেতনতা

55

সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে। মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। সম্প্রতি শতাধিক মাদক কারবারি সরকারের কাছে আত্মসমর্পণও করেছে। কিন্তু তার পরও থেমে নেই মাদকের কারবার। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ার পরও মাদকের চালান আসছে। সমাজের সর্বস্তর থেকে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হলে মাদক কারবারিরা নিজেদের গুটিয়ে নিতে বাধ্য হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ জন্য সবাইকে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে। দেশে মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসন ঠেকাতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের পাশাপাশি উচ্চ আদালত থেকেও দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর পরও সারা দেশে সাড়ে তিন লাখ মামলা ঝুলে আছে বলে খবর রয়েছে। তা সত্ত্বেও ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত চার মাসে মাদকদ্রব্য আইনের ১৯টি মামলায় ২২ আসামির সবাইকে সাজা দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন আদালত।
মাদকের মামলা শেষ পর্যন্ত নিষ্পত্তি হওয়ার ক্ষেত্রে নানা বাধার সম্মুখীন হতে হয়। আদালতে সাক্ষী গরহাজির থাকা, সাক্ষীকে প্রভাবিত করার ঘটনা যেমন ঘটে, তেমনি মামলা দায়ের করার ক্ষেত্রেও বিভিন্ন ত্রুটি থাকে। এসব কারণে অনেক সময় খালাসও পেয়ে যায় আসামিরা। কিন্তু ১৯টি মামলার রায়ে সব আসামির দোষী সাব্যস্ত হওয়া ও শাস্তির রায় সব পক্ষেরই প্রশংসা পাবে। এ রায় থেকে মাদক কারবারিদের কাছে কঠোর বার্তা যাবে। একই সঙ্গে অন্য মাদক মামলাগুলো নিষ্পত্তিতে উদাহরণও সৃষ্টি হলো এই রায়ের মাধ্যমে। আদালত এভাবে দ্রুত বিচার করে মামলার নিষ্পত্তি করলে অপরাধীদের শাস্তিপ্রাপ্তির বিষয়টি যেমন ত্বরান্বিত হয়, তেমনি বিচারপ্রার্থীদেরও ভোগান্তি দূর হয়।
মাদক এখন আমাদের সমাজের এক নম্বর সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। মাদকের বিস্তার সমাজকে কলুষিত করছে। মাদকাসক্তরা নিজেদের ধ্বংস করছে, পরিবারকেও ঠেলে দিচ্ছে ভয়াবহ এক দুর্গতির দিকে। মাদক সংগ্রহের অর্থ জোগাড় করতে গিয়ে নানা রকম অপকর্মে জড়িয়ে যাচ্ছে মাদকসেবীরা। মাদকাসক্তরা অপরাধকর্মে জড়িয়ে পড়ায় সমাজের স্থিতি নষ্ট হচ্ছে। এ অবস্থায় সরকার ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থানই কাম্য। সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার পাশাপাশি আদালতের মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি হলে মাদক নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে বলে আমরা মনে করি।