সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল ॥ ফলাফল প্রত্যাখ্যান, অবিলম্বে পুন:নির্বাচন দাবী

57

কাজিরবাজার ডেস্ক :
একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটে কারচুপির অভিযোগ তুলে তা বাতিল করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বিএনপির নতুন জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণতন্ত্রের সঙ্গে মশকরা করেছে সরকার। দীর্ঘদিনের জন্য ক্ষতি হয়ে গেছে।
সকাল আটটা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত ভোট চলাকালেই বিএনপির পক্ষ থেকে নানা অভিযোগ করে আসছিল। আর ভোটের ফল আসতে শুরুর করার পর দেখা যাচ্ছে, ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা কোথাও দাঁড়াতেই পারেনি।
বেশিরভাগ আসনেই বিএনপি এবং তার জোটের শরিকরা জামানত হারিয়েছেন। আর রাত আটটায় সংবাদ সম্মেলন করেন ড. কামাল। সেখানে ছিলেন বিএনপি মহাসচিবও।
ড. কামাল বলেন, ‘নির্বাচনের কথিত ফলাফল আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। সেই সঙ্গে নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবিলম্বে পুনঃনির্বাচন দাবি করছি।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘গণতন্ত্রের নামে তামাশা হয়েছে। প্রমাণ হয়েছে, দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না।’
প্রাথমিক ফলাফলে পিছিয়ে পড়লেও পরে যদি ঐক্যফ্রন্ট নেতারা জিতে যায় তাহলে কী করবেন- এমন প্রশ্নে ফখরুল বলেন, ‘আমরা এই পুরো নির্বাচনটাকেই প্রত্যাখ্যান করছি। দিস ইজ নট অ্যান ইলেকশন। দিস ইজ অ্যা ক্রুয়েল কমারি উইথ ডেমোক্রেসি। আমরা কী করব, তা কালকে (আজ) বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে জানাব।’
‘অনেকেই বলেন, ২০১৪ সালে আমাদের ভোট বর্জন সঠিক ছিল না। আজ প্রমাণ হয়েছে, আমাদের সেই সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল।’
গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন চলবে জানালেও কোনো কর্মসূচি দেয়নি ঐক্যফ্রন্ট। ড. কামাল ও মির্জা ফখরুল বলেন, এ বিষয়ে তারা বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। আবার বসবেন। পরে সিদ্ধান্ত জানাবেন।
ড. কামাল বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন তো চলছে। এটা চালু থাকবে।’
এর আগে গুলশানে দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ফখরুল বলেন, ‘এ ধরনের নির্বাচন অত্যন্ত ক্ষতিকর৷ আমি মনে করি এটি জাতির জন্য দীর্ঘকালের ক্ষতি হয়ে গেল। এই ক্ষতি জাতি কাটিয়ে উঠতে পারবে কিনা তা নিয়ে শংসয় রয়েছে।
সকালে রাজধানীর ভিকারুননিসা স্কুল কেন্দ্রে ভোট দেন ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেন। ওই সময় তিনি গত ৪৭ বছরে এমন নির্বাচন দেখেননি বলে মন্তব্য করেন। বলেন, সারাদেশে নির্বাচনের পরিবেশ ভীতিকর ও উদ্বেগজনক। তবে নিজের কেন্দ্রে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে ভোট হচ্ছে বলেও গণমাধ্যমকে তিনি জানান।
রাতে ড. কামাল বলেন, ‘আমরা এই নির্বাচনের কথিত ফলাফল প্রত্যাখান করছি। দেশের প্রায় সব আসন থেকে ভোট ডাকাতির খবর এসেছে। আমরা এখন যত দ্রুত সম্ভব তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি পরিস্কার নির্বাচনের দাবি করছি।’
‘শতাধিক আসনে আমাদের প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছেন। এই অবস্থায় আমরা অবিলম্বে এই প্রহসনের নির্বাচন বাতিলের দাবি জানাই।’
অবিলম্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ফের নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে কামাল বলেন, ‘এই নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখান করছি। একই সঙ্গে অবিলম্বে নির্দলীয় তত্ত্ববধায়ক সরকারের অধীনে একটি পরিস্কার নির্বাচন দেয়ার দাবি করছি।’
লিখিত বক্তব্যে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে বলা হয়, গতকাল (শনিবার) রাতে আওয়ামী লীগ নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের সহায়তায় নৌকা মার্কায় সিল মেরে বাক্সে ভরে রাখে। এছাড়া এজেন্টদের বের করে দেওয়া, বুথ তালা মেরে রাখাসহ মারধর করা হয়।
ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, ‘কেউ অন্য মার্কায় ভোট দিতে চাইলে তাদের বের করে দেওয়া হয়। এভাবে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’
দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে সংশয় থাকলে নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়েও জানতে চাইলে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা যা করেছি, গণতন্ত্রের জন্য করেছি।’