পউষ এলো গো! পউষ এলো…

274

কাজিরবাজার ডেস্ক :
‘পউষ এলো গো!/ পউষ এলো অশ্র“-পাথার হিম পারাবার পারায়ে।/ ঐ যে এলো গো…।’ এসেছে পৌষ। আজ শনিবার ১ পৌষ ১৪২৫ বঙ্গাব্দ। শুরু হলো শীতের কাল।
আজ থেকে আনুষ্ঠানিক শুরু হলেও, শীত শীত অবস্থা চলমান ছিল অনেকদিন ধরে। দিন যত গেছে, বেড়েছে শীত। আর তার পর আনুষ্ঠানিক শুরু। কবিগুরুর ভাষায়- শীত এসেছে লাগলো কাঁপন, লাগলো দোলা প্রাণে/ শীত এসেছে হিমেল হাওয়া, আনন্দ আর গানে…। শীত উৎসবে সকলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। কবিগুরুর ভাষায়- পৌষ তোদের ডাক দিয়েছে, আয় রে চলে, আ য় আ য় আয়…।
পৌষের প্রকৃত রূপ গ্রামেই দেখা যায়। এ সময় নানা উৎসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সবার প্রিয় হলেও শীত সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে গ্রামীণ জীবনকে। পৌষে কৃষকের ফসল ঘরে তোলার কাজ শেষ হয়ে যায়। হাতে তেমন কাজ থাকে না। সবাই উৎসব আনন্দে মাতে। নতুন ধান থেকে পাওয়া চালে ঘরে ঘরে চলে পিঠাপুলির আয়োজন।
পৌষের প্রকৃতি অদ্ভুত সুন্দর। প্রতিবারের মতোই নতুন রূপে সেজেছে। বদলে গেছে অনেক ধরাবাঁধা নিয়ম। এখন সকাল হলেই সূর্যালোকের দেখা মেলে না। ঘন কুয়াশায় ঢাকা চারপাশ। রাতে শিশির ঝরছে। প্রকৃতির এ রূপ বর্ণনা করেই জীবনানন্দ লিখেছিলেন: শিশির পড়িতেছিল ধীরে-ধীরে খ’সে;/নিমের শাখার থেকে একাকীতম কে পাখি নামি/উড়ে গেলো কুয়াশায়,-কুয়াশার থেকে দূর-কুয়াশায় আরো…। অন্য কবির কবিতায় বর্ণনাটি এরকম- বিষাদের প্রতিমূর্তি হে শীত, সবুজের পোষাক খসিয়েছ/ নিয়েছ জড়িয়ে কুয়াশার শুভ্র চাদরে তপসীর সাধনায়…। পৌষে এই কুয়াশা এত হয় যে প্রতিদিনের সূর্য ওঠা ভোরও দেখা যায় না। সূর্যের আলোর জন্য প্রতিক্ষা করতে হয়। সুকান্ত তাই লিখেছিলেন: সকালের এক-টুকরো রোদ্দুর-/ এক-টুকরো সোনার চেয়েও মনে হয় দামী।/ ঘর ছেড়ে আমরা এদিক-ওদিকে যাই-/এক-টুকরো রোদ্দুরে তৃষ্ণায়…। গ্রামের সাধারণ কৃষক অবশ্য সূর্যের অপেক্ষা করেন না। ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে আইল্যায় হাত শেকে নেন। এভাবে যেটুকু সম্ভব উষ্ণতা সঞ্চয় করে চলে যান ফসলের মাঠে।