তামিম-সৌম্যর সেঞ্চুরিতে প্রস্তুতি ম্যাচে দাপুটে জয়

51

স্পোর্টস ডেস্ক :
ওয়ানডে সিরিজের প্রস্তুতি ভালোই হয়েছে মাশরাফিদের। জোড়া সেঞ্চুরিতে এসেছে বড় জয়। বিকেএসপিতে গতকাল প্রস্তুতি ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ডার্ক ওয়ার্থ ল্ইুস পদ্ধতিতে ৫১ রানে হারিয়েছে মাশরাফির নেতৃত্বে বিসিবি একাদশ। সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার।
দুইজনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৩৩২ রানের বিরাট লক্ষ্যে খেলতে নেমে মাত্র ৪১ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩১৪ রান করে ফেলে বিসিবি একাদশ। কিন্তু শেষ দিকে আলোকস্বল্পতার কারণে বাকি খেলাটুকু শেষ হতে পারেনি। তখন দরকার ছিল মাত্র ১৮ রান, হাতে ৯ ওভার। ৪১ ওভারে রানের তুলনামুলক বিচারে ( ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতি ) ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে ৫১ রানে এগিয়ে থাকায় বিসিবি একাদশকে জয়ী ঘোষণা করা হয়।
বিকেএসপিতে বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ছুঁড়ে দেয়া বড় লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন তামিম ইকবাল আর ইমরুল কায়েস। দলীয় ৮১ রানে ইমরুল ফিরলে ভাঙে এই জুটি। রস্টন চেজের বলে শিমরন হেটমায়ারের হাতে ক্যাচ তুলে দেন এই বাঁহাতি। ফেরার আগে ২৫ বলে ৪ বাউন্ডারিতে করেন ২৭ রান।
সঙ্গী ইমরুলকে হারালেও ব্যাটের ধার এতটুকুও কমেনি তামিমের। সৌম্য সরকারকে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের কচুকাটা করতে থাকেন তিনি। তামিমের ব্যাটিং দেখে মোটেও মনে হয়নি দীর্ঘ ইনজুরি কাটিয়ে এসেছেন তিনি। মাত্র ৭৩ বলে ১৩ চার আর ৪ ছক্কায় ১০৭ রান করে আউট হন দেশসেরা এই ওপেনার। তামিম ফেরার পর দ্রুতই আরও কয়েকটি উইকেট হারায় বিসিবি একাদশ। আউট হয়ে ফিরে যান মোহাম্মদ মিথুন (৫), আরিফুল হক (২১), তৌহিদ হৃদয় (০) আর শামীম পাটওয়ারি (৯)। ২৬৫ রানে ৬ উইকেট খুইয়ে বসা বিসিবি একাদশকে পথ দেখান সৌম্য। অধিনায়ক মাশরাফির কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দলকে জয়ের পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন। শেষ ৯ ওভারে যখন মাত্র ১৮ রান দরকার তখন আলোকস্বল্পতার কারণে খেলার সমাপ্তি ঘোষণা করেন আম্পায়ার। তাতে ডার্কওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে জয়ী হয় বিসিবি একাদশ।
মাত্র ৮৩ বলে ৭ বাউন্ডারি আর ৬ ছক্কায় ১০৩ রান করে অপরাজিত থাকেন সৌম্য। মাশরাফিও কম যাননি। ১৮ বলে ২ চার আর এক ছক্কায় তিনি অপরাজিত থাকেন ২২ রানে।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে আট উইকেটে ৩৩১ রান সংগ্রহ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সফরকারীদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮১ রান করেন শাই হোপ। ৫১ বলে ৬৫ রান করে অপরাজিত থাকেন রস্টন চেজ।
অন্যদের মধ্যে ৩২ বলে ৪৮ রান করেন ফ্যাবিয়ান অ্যালেন। দশ রান করে অপরাজিত থাকেন সুনিল আমব্রিস। বিসিবি একাদশের পক্ষে রুবেল হোসেন ২টি, মেহেদী হাসান রানা ২টি, শামীম পাটোয়ারী ১টি, মাশরাফি বিন মর্তুজা ১টি ও নাজমুল ইসলাম অপু ২টি করে উইকেট শিকার করেন।
দুই ওপেনার পাওয়েল আর হোপ মিলে ১৫ ওভারেই ১০১ রান তুলে ফেলেছিলেন। পাওয়েলকে ইমরুল কায়েসের ক্যাচ বানিয়ে এই জুটি ভাঙেন বাঁহাতি স্পিনার অপু। এরপর ডারেন ব্রাভোকে তুলে নেন মেহেদী হাসান রানা। দীর্ঘদিন বাদে জাতীয় দলে ফিরে প্রস্তুতিটা খুব একটা মন্দ হয়নি ব্রাভোর। ৩৩ বলে ২৪ রান করেছেন এই বাঁহাতি। ক্যারিবীয় শিবিরে তৃতীয় আঘাত হানেন অধিনায়ক মাশরাফি। মারলন স্যামুয়েলসকে (৫) রানার ক্যাচ বানিয়ে ফেরান তিনি। এরপর কোনো রান যোগ না করেই ফিরেছেন রোভম্যান পাওয়েল। তার উইকেটটি দখল করেন শামীম পাটওয়ারি। উইকেটে এসে থিতু হয়েও বড় ইনিংস খেলতে পারেনি শিমরন হেটমায়ার। ২৭ বলে ৩৩ রান করে রুবেলের বলে সৌম্যর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ২১৬ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় ক্যারিবীয়রা।
তখন মনে হচ্ছিল, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বুঝি তিনশ’র আগেই বেঁধে ফেলবে টাইগাররা। কিন্তু এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত ৩৩১ রানে থেমেছে তারা। পুরোটাই চেজ আর অ্যালেনের অবদান।
উল্লেখ্য, আগামী ৯ ডিসেম্বর মিরপুরে অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচ। ১১ ডিসেম্বর একই ভেন্যুতে হবে দ্বিতীয় ম্যাচ। এই দুটি ম্যাচ শুরু হবে দুপুর একটায়। ১৪ ডিসেম্বর সিলেটে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের শেষ ম্যাচ। এই ম্যাচটি শুরু হবে দুপুর বারোটায়।