হবিগঞ্জে পৃথক হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদন্ড

39

হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে এক যুবককে হত্যা মামলায় ২ জনের মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এসএম নাসিম রেজা এ রায় দেন। মৃত্যুদন্ড প্রাপ্তরা হচ্ছেন আজমিরীগঞ্জ উপজেলার শিবপাশা গ্রামের আব্দুল হাই চৌধুরীর ছেলে সাকিউর চৌধুরী ও রমিজ মিয়ার ছেলে গাজিউর চৌধুরী। মামলার আসামী অপর ১৩ জনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৩ সালের ৯ জুন রাত ১০টায় আসামীরা মোবাইল ফোনে তাদের প্রতিবেশি বদিউজ্জামান চৌধুরীর ছেলে বাছির মিয়া চৌধুরী (৩০) কে ডেকে নেয়। এরপর থেকে সে নিখোঁজ ছিল। উক্ত ঘটনায় ১৩ জুন আজমিরীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করা হয়। ২৪ জুন বাছিরের বড় ভাই যীশু মিয়া চৌধুরী বাদি হয়ে ১২ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই দিনই মামলার আসামী সাকিউরকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নাইয়ারখারা বিলের পাশের একটি জমিতে মাটি চাপা দেয়া অবস্থায় বাছির মিয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। উক্ত ঘটনায় সাকিউর ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে বলে সে আদালতকে জানায়। পরে পুলিশ তদন্ত শেষে একই বছরের ১৫ ডিসেম্বর ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। মামলায় ১৫ জন সাক্ষির সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিচারক বুধবার উল্লেখিত রায় দেন। রায় ঘোষণাকালে সাকিউর আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অপর আসামী গাজিউর ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আব্দুল আহাদ ফারুক।
এদিকে হবিগঞ্জে চাচাতো বোনের ছেলেকে (ভাগ্নে) হত্যা মামলায় অরবিন্দু দাশ নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে তার সম্পত্তি বিক্রি করে তা আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ৮ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। বুধবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আমজাদ হোসেন এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি অরবিন্দু দাশ নবীগঞ্জ উপজেলার চৌকি গ্রামের মনিন্দ্র দাশের ছেলে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০০৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারী রাত ১০টায় বানিয়াচং উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের সত্যজিৎ দাশ কীর্ত্তন শুনতে গ্রামের মাঠে যায়। এরপর থেকে সে নিখোঁজ ছিল। ১৫ ফেব্রুয়ারী বিকেলে গ্রামের শ্মশানঘাট সংলগ্ন ডোবা থেকে হাত বাঁধা অবস্থায় তার গলিত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহতের বোন অনিকা রাণী দাশ বাদী হয়ে ১৬ ফেব্রুয়ারি অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বানিয়াচং থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে একই বছরের ১৩ জুন ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। রাষ্ট্রপক্ষে ১৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক আজ আসামিদের উপস্থিতিতে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
হবিগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) কাজী কামাল হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
হবিগঞ্জ পাবলিক প্রসিকিউটর সিরাজুল হক চৌধুরী জানান, হত্যার অভিযোগে এক জনকে ফাঁসি ও অভিযোগ প্রমানীত না হওয়ার কারণে ৮ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।