পুঁজিবাজার স্থিতিশীল হউক

30

নির্বাচনের বছরে এসে বাংলাদেশ ব্যাংক সতর্কতামূলক মুদ্রানীতি ঘোষণার পর থেকেই দেশের দুই পুঁজিবাজারে অস্থিরতা লক্ষ করা যাচ্ছে। লোকসান কিংবা কম দামে শেয়ার বিক্রি করে বিনিয়োগকারীরা সরে যাচ্ছে এমন খবর পাওয়া যাচ্ছে গণমাধ্যমে। গুজব ছড়ানো হয়েছে ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রায় নিয়েও। বিনিয়োগকারীদের আস্থা নষ্ট করার মিথ্যা তথ্য ও গুজবের কারণে এরই মধ্যে বাজারে পতন ঘটেছে। স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী মুদ্রানীতি ও রাজনৈতিক অস্থিরতার দোহাই দিয়ে বাজার প্রভাবিত করতে চাইছে। সাম্প্রতিক দরপতনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন ও ডিএসইর ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বিনিয়োগকারীদের গুজবে কান দিয়ে ভালো শেয়ার বিক্রি না করার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁদের মতে, সুযোগসন্ধানীরা গুজব ছড়িয়ে বাজার অস্থির করতে চাইছে। এই সুযোগসন্ধানীরাই কম দামে কেনা শেয়ার বেশি দামে বাজারে বিক্রি করবে। উভয় সংগঠনের নেতাদের ভাষ্য মতে, দ্রুতই বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। বাজার বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, মুদ্রানীতিতে এমন নেতিবাচক কোনো কিছু নেই, যার জন্য বাজারের পতন ঘটতে পারে। মুদ্রানীতিতে টাকাপ্রবাহ, মূল্যস্ফীতি ও প্রবৃদ্ধি নিয়ে নির্দেশনা থাকে। এর প্রভাব শেয়ারবাজারে কেন পড়বে? বাজার-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধারণা, বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন যে মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে, তাতে পুঁজিবাজার করপোরেট গ্রাহক ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে গ্রহণযোগ্য করবে। তারা বিনিয়োগে আগ্রহী হবে। ব্যাংকে আমানতের সুদ বাড়লে তাতে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ কিছুটা কমতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক হওয়াটা স্বাভাবিক; কিন্তু তার ফলে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হওয়ার কথা নয়। মুদ্রানীতি ঘোষণার আগে বাজার প্রভাবিত করতে ব্যাংকের ঋণ ও আমানত অনুপাতের দোহাই দেওয়া হয়েছে। আগের ব্যাংক কম্পানি অ্যাক্ট অনুযায়ী মোট দায়ের ১০ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সীমা ছিল। বর্তমান ব্যাংক কম্পানি অ্যাক্ট অনুযায়ী রেগুলেটরি ক্যাপিটালের ২৫ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। ঘোষিত মুদ্রানীতির কোনো প্রভাব বাজারে পড়বে না এমন পরিস্থিতি দেখার পর ছড়ানো হয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতার গুজব।
এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে হবে। এর জন্য প্রয়োজনে ডিএসই ও সিএসই বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বৈঠক করে মূল বিষয়টি তাদের অবহিত করা প্রয়োজন। আমরা আশা করব, পুঁজিবাজারের অস্থিরতা কাটাতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।