সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ ॥ যুক্তরাজ্যে স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করায় দেশে ভাইদের হয়রানি

71

যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বোন স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করায় দেশে অবস্থানরত ভাইদের মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন জকিগঞ্জ উপজেলার শরীফগঞ্জ গনিপুর গ্রামের আব্দুন নূর চৌধুরীর পুত্র বর্তমানে সিলেট নগরীর ধোপাদীঘির উত্তরপারের বাসিন্দা দিনাত হোসেন চৌধুরী।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে দিনাত হোসেন চৌধুরী বলেন, জকিগঞ্জ উপজেলার বারহাল চক বড়বাড়ি গ্রামের হাজী মকবুল হোসেন চৌধুরীর পুত্র যুক্তরাজ্য প্রবাসী মো. লোকমান হোসেন চৌধুরীর সাথে বড় বোন মোছা. ইমরানা ইয়াছমিন চৌধুরীর ২০১১ সালে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই লোকমান ইমরানার উপর নির্যাতন চালাতে থাকেন লোকমান। যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পর নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকে। বাধ্য হয়ে ইমরানা স্বামীর বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যের স্থানীয় কাউন্সিলরের আশ্রয় গ্রহণ করেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সেখানকার সোশ্যাল ওয়ার্কার অ্যামি স্মিথ নামীয় কর্মকর্তা সরেজমিনে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পান। গত ৩১ জানুয়ারি হোম অফিসে বোন ও বোনের সন্তানদের উপর নির্যাতনের বিবরণসহ একটি প্রতিবেদন জমা দেন স্মিথ। বর্তমানে ইমরানার সাথে লোকমানের বিবাহ বিচ্ছেদ যুক্তরাজ্যে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
দিনাত আরো বলেন, ইমরানা কাউন্সিলর অফিসে অভিযোগ দেওয়ার পর লোকমান ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এরপর থেকে তিনি এবং বোন ইমরানা ইয়াছমিন চৌধুরী, ভাই শাহাদত হোসেন চৌধুরী ও ভগ্নিপতি বিরাজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিচ্ছে লোকমান। ইতিমধ্যে দুটি মামলা থেকে আদালত তাদেরকে অব্যাহতি প্রদান করেছেন। এছাড়া পুলিশ কমিশনার বরাবরে লোকমানের করা অভিযোগের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে পুলিশি তদন্তে উল্লেখ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গত ৩০ নভেম্বর ধোপাদীঘিরপারস্থ বাসা থেকে কোতোয়ালী থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানায়, তিনি ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে ঢাকার ভাটারা থানা থেকে নারী নির্যাতন মামলায় একটি ওয়ারেন্ট এসেছে। ঢাকার ভাটারা থানায় খোঁজ নিয়ে জানেন, ওই থানায় কোনো মামলা নেই। বিষয়টি আদালতকে অবহিত করলে আদালত তাকে মুক্তি দেন। ইমরানা গত ৮ আগস্ট লোকমানের মিথ্যা মামলা, নির্যাতনের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে একটি অভিযোগ দেন। হাইকমিশন থেকে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অভিযোগটি প্রেরণ করা হয়। মন্ত্রণালয় অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দায়িত্ব দেয় সিলেটের পুলিশ সুপারকে। অভিযোগের তদন্ত করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জকিগঞ্জ সার্কেল) মোস্তাক সরকার গত ৭ নভেম্বর প্রতিবেদন পুলিশ সুপারের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন। ওই প্রতিবেদনে মোস্তাক সরকার উল্লেখ করেন, লোকমান তার স্ত্রী ইমরানাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন বলে অনুসন্ধানে জানতে পেরেছেন। তিনি (লোকমান) ‘চরিত্রহীন-লম্পট প্রকৃতির লোক’। মোস্তাক সরকার আরো উল্লেখ করেন, বিদেশে কোন ক্ষতি করতে না পেরে লোকমান বাংলাদেশে বাদীনির (ইমরানা) ভাইদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। সংবাদ সম্মেলনে লোকমান হোসেন চৌধুরীর মিথ্যা মামলা ও অভিযোগের হাত থেকে রেহাই পেতে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।