প্রবারণা পূর্ণিমার ফানুস উড়ালেন ৪ ধর্মের প্রতিনিধিরা

76

স্টাফ রিপোর্টার :
এবারের প্রবারণা পূর্ণিমায় সিলেট বৌদ্ধবিহার প্রথমবারের মতো ধর্মীয় সম্প্রীতির উদাহরণস্বরূপ ৪ ধর্মাবলম্বীদের 02 copyসাথে নিয়ে একসাথে ফানুস উড়ালেন। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে আয়োজিত উৎসবে এ কথা জানান সিলেট বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ সংখ্যানন্দ থের।
এ সময় তিনি আরো বলেন, মিয়ানমার সরকার যদি প্রকৃতভাবে গৌতম বুদ্ধের আদর্শিত হয়ে থাকে, তবে প্রবারণা পূর্ণিমাতেই আত্মসমালোচনা করে সব ধরনের নির্যাতন বন্ধ করবে।
এ সময় গণমাধ্যমকর্মীদের বৌদ্ধবিহারের অধ্যক্ষ সংখ্যানন্দ থের বলেন, মিয়ানমারে একটি জাতিগোষ্ঠীর ওপর যেভাবে নির্যাতন চলছে তা অমানবিক। রোহিঙ্গা নির্যাতনের প্রতিবাদে এবার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বড় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমায় তেমন কোনো জৌলুস চোখে পড়েনি। তবে ধর্মীয় সব আচার পালন করা হয় সিলেট বৌদ্ধবিহারে। এ সময় পৃথিবীর সব প্রাণীর শান্তির জন্য প্রার্থনাও করা হয়।
এ ছাড়াও তিনি বলেন, এ বছর প্রবারনা পূর্নিমায় ফানুস না উড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেও সিলেট বৌদ্ধবিহার প্রথমবারের মতো ধর্মীয় সম্প্রীতির উদাহরণস্বরূপ মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও থ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে সন্ধ্যায় চারটি ফানুস উড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তিনি বলেন, এই দিনটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের আত্মশুদ্ধির দিন। ভুলগুলোকে পেছনে ফেলে ভালো গুণ নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার দিন। সংখ্যানন্দ থের বলেন, আপনারা জানেন সম্প্রতি মিয়ানমারে অমানবিক ঘটনা ঘটছে, সেখানে সরকার এবং সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর ওপর যে নির্মম নির্যাতন চালাচ্ছে, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং প্রতিকার কামনা করছি।207 copy
প্রসঙ্গত, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা। প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপনের মাধ্যমে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা ভিক্ষুদের কাছে পাপমোচনের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এর মাধ্যমে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা তাদের ত্রৈমাসিক বর্ষবাস শেষ করেন। এই পূর্ণিমা পালনের মাধ্যমে বৌদ্ধ ভিক্ষু ও গৃহীদের পাপমোচন হয় বলে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বিশ্বাস। এই দিনে বৌদ্ধ পূজা, সংঘদান, পিন্ডদান, অষ্টপরিষ্কার দান, পঞ্চশীল প্রার্থনা, শীলগ্রহণ, প্রদীপ পূজা, ফানুস উড়ানোর মতো নানা আচার পালন করা হয়।
সিলেট বৌদ্ধ সমিতির উদ্যোগে সিলেট বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ সংঘানন্দ থের এর সভাপতিত্বে  অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক শাহ মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, রাম কৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ চন্দ্রনাথানন্দ  মহারাজ, ভিকার জেনারেল সিলেট ধর্মপ্রদেশ ফাদার স্ট্যানিসলাউস গমেজ।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন  সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর ইলিয়াছুর রহমান, রেজোয়ান আহমদ, রাজিক মিয়া, সুনামগঞ্জ সরকারী এস সি গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষক হাফিজ মশহুদ চৌধুরী,  সিলেট বৌদ্ধ সমিতির নেতৃবৃন্দ প্রমুখ।