সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ॥ নগরীর চৌহাট্টায় রাস্তা প্রশস্তকরণের নামে দোকানকোঠা উচ্ছেদ পাঁয়তারার অভিযোগ

36

স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর চৌহাট্টায় প্রভাবশালীদের ইন্ধনে মৌরসি জায়গা থেকে দখলদারদের গৃহ ও দোকানকোঠা উচ্ছেদ পাঁয়তারা করছে সিলেট সিটি করপোরেশন। আদালতে স্বত্ব (বাটোয়ারা) মোকদ্দমা বিচারাধীন থাকাবস্থায় রাস্তা প্রশস্তকরণের নামে দোকানকোঠা উচ্ছেদে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বারবার মৌখিকভাবে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন নগরীর মীরবক্সটুলার আজাদী এলাকার মরহুম আব্দুল মতিনের কন্যা নাছিমা বেগম। গতকাল সোমবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নাছিমা বেগম বলেন, মীরবক্সটুলায় উত্তরাধিকারী সূত্রে প্রাপ্ত জায়গাতে বসবাস করছেন। মিউনিসিপ্যালিটি মৌজার ৪৯৫৬ ও ৪৯৫৭ নং দাগে মোট ৪৯ শতক ভূমি তার পিতা এবং চাচারা রেখে যান।  তারা জীবিত থাকাকালে এ সম্পত্তির ভাগবাটোয়ারা না হওয়ায় চাচাতো ভাই আব্দুল আহাদ মান্না ও আব্দুল ওয়াব মিটুদের সাথে জটিলতা সৃষ্টি হলে এ ব্যাপারে এলাকার মুরব্বিয়ান ও কাউন্সিলরকে নিয়ে সমস্যা নিরসনে একাধিকবার সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিষয়টি সমাধান না হওয়ায় তিনি, তার মা রোকেয়া খানম, বোন নাজমা বেগম ও ভাই ওয়েছ আহমদ টিটু বাদী হয়ে একটি স্বত্ব (বাটোয়ারা) মোকদ্দমা (নং ২৪১/২০১৬) দায়ের করেন। এতে চাচাতো ভাই মান্না ও ওয়াব মিলে কতিপয় প্রভাবশালীর যোগসাজসে তাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি প্রদান করে।
তিনি বলেন, হুমকি দেয়ার পর তাদের দখলে থাকা গৃহ ও দোকানকোঠা নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করে। স্থানীয় একজন প্রভাবশালীকে দিয়ে সিটি করপোরেশনকে প্রভাবিত করে গৃহ ও দোকানকোঠা অপসারণ করতে নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশের জবাবে তার ছোট ভাই টিটু বলেন, ১৯৫৬ সালেরও আগ থেকে এই ভূমিতে গৃহ ও দোকানকোঠা বিদ্যমান আছে। পরবর্তীতে এখানে আর নতুন কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা হয়নি। পূর্ব পুরুষের আমল থেকেই এগুলো ভোগদখল করছেন তারা। গৃহ ও দোকানকোঠায় গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ এবং ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ করে কোনো ধরনের আপত্তি ছাড়া খাজনা পরিশোধ করে ভোগদখলে আছেন। এছাড়া এই ভূমি নিয়ে আদালতে স্বত্ব মোকদ্দমা বিচারাধীন আছে এবং আদালতের স্থিতাবস্থা জারি রয়েছে। সার্বিক দিক বিবেচনা করে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নোটিশের কার্যকারিতা প্রত্যাহারের অনুরোধ করা হয়। লিখিত জবাব আমলে না নিয়ে সিটি করপোরেশন রহস্যজনকভাবে আরো দুটি নোটিশ দেয়। তৃতীয় দফার নোটিশে ওয়ার্ড কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেন সজীব ও মহিলা কাউন্সিলর শাহানারা বেগমকে বলা হয় বাদী ও বিবাদীদের মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তি করে সিটি করপোরেশনকে অবহিত করতে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন. যেখানে এ জায়গা নিয়ে আদালতে বাটোয়ারা মামলা বিচারাধীন রয়েছে এবং আদালতের স্থিতাদেশও জারি রয়েছে, সেখানে সিটি করপোরেশন বিরোধ নিষ্পত্তি করতে নোটিশ প্রদান করতে পারে কি না। কোনো বক্তব্যই আমলে না নিয়ে বর্তমানে সিটি করপোরেশন চৌহাট্ট-নয়াসড়ক রাস্তা প্রশস্তকরণের নামে প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে দোকানকোঠা জোরপূর্বক উচ্ছেদের পাঁয়তারা করছে। লিখিত কোনো নোটিশ না দিয়ে মৌখিকভাবে দোকানকোঠা উচ্ছেদে তাদের উপর বারবার চাপ প্রয়োগ করছে। তিনি বলেন, আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুস্মরণপূর্বক তারা সংশ্লিষ্ট সকল মহলকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। যেহেতু আদালতে এ ভূমি নিয়ে স্বত্ব মোকদ্দমা বিচারাধীন রয়েছে, তাই বিষয়টি সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে বিবেচনার অনুরোধ জানান। সংবাদ সম্মেলনে নাছিমা বেগমের মা রোকেয়া খানম, বোন নাজমা বেগম ও সিলেট জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাধুবী গুণ উপস্থিত ছিলেন।