হাকালুকি হাওর তীরে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি, ওএমএস চালুর দাবি

30

কুলাউড়া থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজার জেলার হাকালুকি হাওর তীরের কুলাউড়া জুড়ী ও বড়লেখা সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ইতোমধ্যে অতিবাহিত চলেছে প্রায় ৪ মাস। এমন পরিস্থিতিতে হাওর তীরের বন্যাকবলিত ইউনিয়গুলোকে বন্ধ হওয়া ওএমএস চালুর দাবি জানিয়েছেন ইউনিয়ন ও উপজেলার জনপ্রতিনিধিরা।
সরেজমিন হাকালুকি হাওর তীরে গেলে গত ৭দিনে ভারী বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হচ্ছে। হাওর এলাকায় ধীরে ধীরে পানি কমছে বলে জানান বানভাসী মানুষ।
মৌলভীবাজার জেলায় ১ লাখ ৬৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি। অকাল বন্যায় হাওর তীরের মানুষ শতভাগ বোরো ফসল হারিয়েছে। বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। ভয়াবহ বন্যায় জেলায় ৩৩টি ইউনিয়নে ৭২২টি গ্রামে গ্রামীণ অবকাঠামো স্কুল কলেজ, রাস্তাঘাট, লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। ৩৩টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৬ শতাধিক পরিবার অপেক্ষায় কবে পানি কমবে আর বাড়ী ফিরে যাবে। তবে প্রতিদিনকার বৃষ্টি তাদের অপেক্ষা দীর্ঘায়িত করছে।
এদিকে ০১ জুলাই থেকে হাওর পারের ১৬ ইউনিয়নে চালের সংকটের কথা বলে ওএমএস এর চাল বিক্রি  বন্ধ করে দেয়া। এতে হাকালুকি হাওর তীরের মানুষ বিপাকে পড়ে। গত ৪ জুলাই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া কুলাউড়ায় বন্যা দুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণকালে হাকালুকি হাওর এলাকায় ওএমএস চালু করার দাবি জানানো হয়।
ভুকশিমইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমান মনির জানান, বন্যা প্রায় অতিবাহিত হওয়ার পথে। এখন ভরা বর্ষাকাল। বৃষ্টিপাত আরও হবে। বন্যার পানি সাময়িক কমলেও তা আবার বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে বলে এখন খুশি হওয়ার কিছু নেই। বরং হাওর তীরের বন্যা কবলিত ইউনিয়নগুলোতে বন্ধ হওয়া ওএমএস দ্রুত চালু করলে মানুষের কিছুটা হলেও দুর্ভোগ লাঘব হবে।
কুলাউড়া উপজেলা চৌ. মো. গোলাম রাব্বি জানান, আমরা বিষয়টি ত্রাণ মন্ত্রী মহোদয়কে বলেছি। তিনি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে কথা বলে ওএমএস চালু করার উদ্যোগ নেবেন বলে জানান। আর কুলাউড়ার  প্রতিটি মানুষই ত্রাণ পেয়েছে। আমরা মানুষের মাঝে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটও বিতরণ করেছি।
হাকালুকি হাওর তীরের জুড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান গুলশান আরা মিলি জানান, হাওর এলাকায় যখন শতভাগ বোরো ফসল ভাসিয়ে নিয়ে যায়, তখনই ক্ষতিগ্রস্ত হাওর এলাকাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করা উচিত ছিলো। প্রায় ৪ মাসে পুরো এলাকার অবস্থা নাকাল। রাস্তাঘাট অবকাঠামো সবকিছু লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। এ অবস্থায় ওএমএস চাল বিক্রি বন্ধ করা দু:খজনক।
স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল মতিন জানান, মন্ত্রীর কাছে ওএমএস’র দাবি জানালে তিনি চালুর ব্যাপারে আশ^াস দিয়েছেন। সরকার পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ দিচ্ছে। কিন্তু তারপরও চাহিদা মিটছে না।