হাজার হাজার জনতার স্বত:স্ফূর্ত উপস্থিতির মধ্য দিয়ে সিলেট সরকারী আলীয়া মাদরাসা ময়দানে সম্পন্ন হয়েছে বিচারিক হত্যাকান্ডের শিকার জামায়াতের সেক্রেটারী জেনারেল শহীদ আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের গায়েবানা জানাযা। গতকাল রবিবার বেলা ২ টায় জানাযা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও জোহরের নামাজ শেষ হতে না হতেই আলীয়া মাদরাসামুখী হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি এক সময় জনসমুদ্রে রূপ নেয়। প্রখর রোদ্র উপেক্ষা করে জানাযার পূর্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নেতৃবৃন্দের হৃদয়গ্রাহী মর্মস্পর্শী বক্তব্য শুনে অশ্র“সজল হয়ে পড়েন উপস্থিত মুসল্লীগণ। এ সময় সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা ঘটে। জানাযায় ইমামতি করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি অধ্যক্ষ মাওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী।
জানাযা পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ তথা গোটা বিশ্ববাসী দেখেছে বিচারের নামে বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম শীর্ষ নেতা আলী আহসান মো: মুজাহিদকে হত্যার বর্বর ঘটনা সমূহ। শহীদ মুজাহিদের কোন অপরাধ ছিল না। অপরাধ একটাই তিনি আমৃত্যু বাংলার সবুজ জমিনে কোরআনের সমাজ বিনির্মাণের প্রত্যয়দীপ্ত কাফেলা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মত একটি আদর্শিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ইসলামী আন্দোলনের ইতিহাস শাহাদাতের ইতিহাস। জুলুম-নিপীড়নের ইতিহাস। তবে ইতিহাস সাক্ষী পৃথিবীর জালিম শাহীদেরও নিষ্ঠুর পরিণতির শিকার হতে হয়েছে। কথিত বিচার প্রক্রিয়া সূচনালগ্ন থেকেই ছিল বিতর্কিত, আইন ও মানবাধিকার বিবর্জিত। এই কালো আইনে বিচারের নামে হত্যার পূর্ব মুহূর্তেও বাকশালী সরকার প্রাণভিক্ষার ভুয়া দাবী তুলে জাতিকে বিভ্রান্ত করেছে। যারা আল্লাহর সান্নিধ্য লাভে ব্যাকুল তারা দুনিয়ার কোন মানুষের কাছে প্রাণ ভিক্ষা চাইতে পারে না। শাহাদাতের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত আলী আহসান মুজাহিদ ছিলেন দৃঢ় ঈমানের অধিকারী। যা ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। হায়েনার দল একজন মুজাহিদকে হত্যা করে বাংলার জমিন থেকে ইসলামী আন্দোলনকে নিশ্চিহ্ন করার স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু শহীদ মুজাহিদের রক্ত থেকে বাংলার ঘরে ঘরে লাখ লাখ মুজাহিদ তৈরী হয়ে শহীদের আদর্শ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে চূড়ান্ত সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাবে। ইনশাআল্লাহ।
কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগর আমীর এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের-এর সভাপতিত্বে ও মহানগর সেক্রেটারী মাওলানা সোহেল আহমদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত জানাযা পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট বিভাগীয় আঞ্চলিক দায়িত্বশীল অধ্যাপক ফজলুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও সিলেট জেলা দক্ষিনে আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান, সিলেট জেলা উত্তরের আমীর হাফিজ আনোয়ার হোসাইন খান, সিলেট মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর হাফিজ আব্দুল হাই হারুন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্যও সিলেট মহানগর সভাপতি মু. আব্দুর রাজ্জাক, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় শিবির সভাপতি সাইফুল ইসলাম সুজন, সিলেট জেলা পূর্ব শিবির সভাপতি হাবীবুল্লাহ দস্তগীর ও সিলেট জেলা পশ্চিম শিবির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর মো: ফখরুল ইসলাম, সিলেট জেলা দক্ষিণের নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান ও মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান, জেলা উত্তরের সেক্রেটারী মাওলানা ইসলাম উদ্দিন, মহানগর সহকারী সেক্রেটারী মো: শাহজাহান আলী, আব্দুর রব ও নুরুল ইসলাম বাবুল, অফিস সেক্রেটারী জাহেদুর রহমান চৌধুরী, জৈন্তাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জয়নাল আবেদীন, বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন মাওলানা আব্দুস সালাম আল মাদানী, জামায়াত নেতা আব্দুস শাকুর, মুফতী আলী হায়দার, মাওলানা আব্দুল মুকিত, আব্দুলাহ আল মুনিম, শামীম আহমদ, সাজিদ মোহাম্মদ, খাজাঞ্চি ইউপি চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন সিদ্দীকি, বাদেপাশা ইউপি চেয়ারম্যান রেহান উদ্দিন রায়হান ও সিলেট মহানগর ছাত্র শিবির সেক্রেটারী মাসুক আহমদ প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি