নবীগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
নবীগঞ্জ উপজেলার নির্জন পাহাড়ী পল্লী থেকে একটি বসত ঘরে একই রশিতে ফাঁস লাগানো স্বামী জুবেল মিয়া (২৫) ও স্ত্রীর রিমা বেগম (২২) এর রহস্য ঘেরা ঝুলন্ত লাশ গতকাল রবিবার সকালে উদ্ধার করেছে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ। এনিয়ে ধূম্রজাল সৃর্ষ্টি হয়েছে এটা হত্যা না আত্মহত্যা, এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। স্বামীর পরিবারের লোকজন বলছেন এটা আত্মহত্যা তবে স্ত্রীর পরিবারের লোকজনের এটি পরিকল্পিত হত্যা। স্থানীয়দের ধারনা এটি পরকিয়া নিয়ে পারিবারিক কলহের জের এ ঘটনাটি ঘটছে।
জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার পানিমদা ইউনিয়নের বটতল গ্রামের দুলাই মিয়ার ছেলে জুবেল মিয়ার সাথে প্রায় ২ বছর পূর্বে পার্শ্ববর্তী থানা বাহুবলের কালাপুর গ্রামের গবিল হোসেনের কন্যা রিমা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামীর বাড়ির লোকজন রিমাকে পরকিয়ার অসক্ত বলে দোষারূপ করলে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মনমালিন্য সৃষ্টি হয়। ফলে শ^শুর বাড়ির লোকজন রিমাকে মেনে নিচ্ছিল না। এক পর্যায়ে গত রমজান মাসে রিমা বেগম তার বাবার বাড়ি চলে গেলে স্ত্রীর সাথে স্বামী জুবেল মিয়াও সেখানে ঘর জামাই হিসেবে চলে যায়। এ নিয়ে জুবেলের সাথে তার পরিবারের সাথে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এনিয়ে কয়েক দফা সালিশ বৈঠক শেষে জুবেলের বাবা পুত্রবধূকে গ্রহণ করে পুত্র এবং তার পুত্রবধূকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। কিন্তু এ নিয়ে প্রায়ই রিমার সাথে রিমার স্বশুর বাড়ির লোকজনের ঝগড়া হতো। গত শনিবার রাতে রিমা তার শ^াশুরি ও শ^শুরের সাথে তীব্র ঝগড়া হয়। পরে রাতে খাবার খেয়ে পাশর্^বতী বাংলা ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন স্বামী স্ত্রী। গতকাল রবিবার সকালে তাদের ঘুম থেকে উঠতে দেরি হওয়ায় ও সাড়া শব্দ না পেয়ে পরিবারের লোকজন দরজা ভেঙে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় তারা ঘরের তীরের সঙ্গে জুবেল ও রিমার একই রশিতে ঝুলন্ত লাশ দেথতে পান। পরে খবর পেয়ে সকাল ১১ টার দিকে নবীগঞ্জ উপজেলার গোপলার বাজার তদন্ত কেন্দ্রের উপ পরিদর্শক আব্দুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে স্বামী স্ত্রীর মৃহদেহ উদ্ধার করেন।
এ ব্যাপারে রিমার পিতা গবিল হোসেন বলেন, “আমার মেয়েকে তার শ^শুর বাড়ির লোকজন পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেন। এর পূর্বেও আমার মেয়েকে মারপিট করে তার স্বামীসহ তাড়িয়ে দিয়েছিল। তারা দীর্ঘ দুই মাস আমার বাড়িতে ছিল পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বারের মাধ্যামে সালিশ বৈঠক করে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। আমার ধারণা তাদেরকে হত্যা করে এভাবে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আমি এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করব।”
এ ব্যাপারে জুবেলের বাবা দুলাই মিয়া বলেন, আমার ছেলে এবং ছেলের বউ কেন আত্মহত্যা করেছে আমি নিজেও জানিনা। সকালে তাদের দরজা বন্ধ দেখে অনেক ডাকাডাকি করে দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ডুলে লাশ গুলি ঝুলন্ত দেখতে পাই।” পূর্বের বিরোধ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন- “ এটা সালিশ বৈঠকে শেষ হয়েছে বর্তমানে কোন বিরোধ ছিল না।”
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আব্দুল বাতেন খান জানান, লাশের ময়না তদন্তের রিপোর্টের পরেই জানা যাবে এটা হত্যা না আত্মহত্যা। গলায় ফাঁসের দাগ রয়েছে। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।