কাজিরবাজার ডেস্ক :
বাংলাদেশে হরতাল-অবরোধে সহিংসতাকে অসাংবিধানিক ও অবৈধ হিসাবে আখ্যায়িত করে এসব বন্ধে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে হরতাল অবরোধ চলাকালে জনগণের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে কেন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না এবং হরতাল অবরোধ চলাকালে মানুষের যে ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে সেটা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ৪১ জনকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
হাইকোর্টের এ আদেশ ঘোষণার পরপরই বিএনপি জামায়াতপন্থি আইনজীবীরা হরতালের সমর্থনে মিছিল করেন।
এ ছাড়া হরতাল অবরোধ সত্ত্বেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি এসএসসি পরীক্ষার সময় যারা নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রাজধানীর কেরানীগঞ্জের দুই জন্য ব্যবসায়ী হরতাল-অবরোধ বন্ধ এবং হরতালে ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। সেই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও আবু তাহের মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
রায়ের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান রিটকারীর আইনজীবী এডভোকেট আজহারুল ইসলাম।
এমন এক সময়ে আদালতের এই নির্দেশনা এলো যখন রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে দেশের অর্থনীতিকে বাঁচাতে ব্যবসায়ীরা আইন করে হরতাল-অবরোধ বন্ধের দাবি জানাচ্ছেন। ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, জনগণ চাইলে হরতাল বন্ধে আইন হবে।
অবশ্য বিদ্যমান আইনেই চলমান জ্বালাও পোড়াওয়ের বিচার সম্ভব বলে ইতোমধ্যে মত প্রকাশ করেছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি ও আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগাম নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট গত ৬ জানুয়ারি থেকে টানা অবরোধ চালিয়ে আসছে। এরই মধ্যে ফেব্র“য়ারির শুরু থেকে সাপ্তাহিক ছুটি বাদে প্রতিদিনই চলছে হরতাল।
রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিষ্টার আমীর উল ইসলাম, এডভোকেট সাহারা খাতুন, এডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু, বাসেত মজুমদার, ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনসহ আওয়ামীপন্থী সিনিয়র আইনজীবীরা।
শুনানিতে আইনজীবীরা বলেন, হরতাল-অবরোধের আজ অপব্যবহার হচ্ছে। মানুষ এ থেকে মুক্তি চায়। সাধারণ মানুষ আজ এই কর্মসূচিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
হরতাল-অবরোধে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ব্যবসা-বানিজ্যে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। সাধারণ মানুষ নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা ভীষণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। মানুষ এথেকে বাঁচতে চায়।শুনানি শেষে আদালত সরকারকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়।