করোনায় দেড় কোটি মানুষের মৃত্যু – বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

4

কাজিরবাজার ডেস্ক :
করোনার মহামারিতে প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা দেড় কোটির কাছাকাছি বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা- ডব্লিউএইচও। সংস্থাটির তথ্যমতে, গত দুই বছরে বিশ্বে স্বাভাবিক মৃত্যুর চেয়ে এই সংখ্যা ১৩ গুণ বেশি। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে বিবিসি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, অনেক দেশ করোনাভাইরাসের মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে তুলে ধরেছে। দেশগুলোর দেওয়া সংখ্যা অনুযায়ী, বিশ্বে ৫৪ লাখ মানুষ মারা গেছেন।
সংস্থাটির তথ্যমতে, ভারতে করোনায় ৪৭ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী যা দশগুণ বেশি। আর বিশ্বে করোনায় মৃত্যুর এক তৃতীয়াংশ মানুষই দেশটিতে মারা গেছে।
ভারতে করোনায় মৃত্যু নিয়ে সরকার যে পরিসংখ্যান জানিয়ে আসছে, এ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে দেশটির বিশেষজ্ঞদের। তাদের ধারণা, প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি। গত বছর ডেল্টা ভাইরাসের তাণ্ডবে ভারতে বিপর্যয় দেখা দেয়। দাফনেরও স্থান না হওয়ায় নদীতে লাশ ভাসিয়ে দেওয়া হয়। যা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে জায়গা করে নেয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যে পদ্ধতি ব্যবহার করেছে, তাকে অতিরিক্ত মৃত্যু গণনা বলা হচ্ছে। মহামারির আগে একই এলাকায় মৃত্যুহারের ওপর ভিত্তি করে প্রত্যাশিত তুলনায় কত বেশি লোক মারা যায় সে সংখ্যা। করোনার প্রত্যক্ষ প্রভাবে যারা মারা গেছেন তাদেরকেও অন্তর্ভূক্ত করা হয়। কোভিডে আক্রান্তের পর চিকিৎসা না পাওয়ায় যারা মারা গেছেন তাদেরকেও এ তালিকায় যুক্ত করেছে কর্তৃপক্ষ।
এই গণনা সরাসরি কোভিডের কারণেও নয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রয়োজন অনুযায়ী হাসপাতালে প্রবেশ করতে পারেনি অনেক রোগী। এটি কিছু অঞ্চলে খারাপ রেকর্ড ও সংকটের শুরুতে বিরল পরীক্ষার জন্যও দায়ী।
নতুন মৃত্যুর পরিসংখ্যান নিয়ে ডব্লিউএইচও’র ডেটা বিভাগে কাজ করা চিকিৎসক সামিরা আসমা বলেন, ‘এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা। একটি বিস্ময়কর সংখ্যা, যারা মারা গেছেন তাদের স্মরণ করা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের নীতি নির্ধারকদের জবাবদিহি করতে হবে। আমরা যদি মৃত্যুর পরিসংখ্যান সঠিকভাবে বের করতে না পারি তাহলে পরবর্তীতে আরও ভালোভাবে প্রস্তুত নেওয়ার সুযোগ হারাবো’।
ডব্লিউএইচওর তথ্য অনুযায়ী, ভারতের পাশাপাশি রাশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, মেক্সিকো এবং পেরুর মতো দেশগুলোতে প্রচ্যুর মৃত্যুর দেখে বিশ্ব। এই দেশগুলোও মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে তুলে ধরে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিবিসিকে জানিয়েছে, ‘আমাদের জরুরিভিত্তিতে আরও ভালো তথ্য সংগ্রহের ব্যবস্থা প্রয়োজন। এটি লজ্জাজনক যে, মানুষ জন্মগ্রহণ করতে পারে ও মারা যাবে। কিন্তু মৃত্যুর কোনও রেকর্ড নেই। এটা সতিই, তথ্য নিবন্ধন ব্যবস্থায় আমাদের বিনিয়োগ করতে হবে। যেনও যথাসময়ে সঠিক তথ্য পাওয়া যায়’।