দক্ষিণ সুরমা আনোয়ারা হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ

66

স্টাফ রিপোর্টার :
দক্ষিণ সুরমায় ভুল চিকিৎসায় এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে কদমতলী পয়েন্টের আনোয়ার জেনারেল হাসপাতালে। অভিযোগকারী কামরুল ইসলামের বাড়ি জগন্নাথপুর উপজেলা সালদিখা গ্রামে। তার স্ত্রী সাহিনা বেগম।
নবজাতক শিশুর পিতা কামরুল ইসলাম ও শিশুর মামা মৌলানা বদিউজ্জামান অভিযোগ করে জানান, সাহিনার প্রসব ব্যথা দেখা দিলে গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কদমতলী আনোয়ার জেনারেল হাসপাতালের ১০৩ নম্বর রুমে ভর্তি করান। ভর্তির পর হাসাপালের নার্স ও সেবিকারা কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া নবজাতক শিশুর মার জরায়ুতে কাটা ছিঁড়া করে সন্তান প্রসবের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন। এর এক ঘণ্টা পর তারা ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনী বিভাগের ডাঃ কিশোয়ার পারভিনকে এনে সিজার করে বাচ্চাটি প্রসব করান। পরদিন শুক্রবারে নবজাতকের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে আনোয়ার হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ কামরুলকে ওসমানী হাসপাতালে নবজাতকের চিকিৎসার পরামর্শ দেন। এর পর শুক্রবার রাত ৯ টার দিকে তারা নবজাতককে নগরীর সোবহানীঘাট ওয়েসিস হসপিটালে নিয়ে গেলে সেখানের ডাক্তাররা জানান, প্রসবের সময় দু’বার শিশুটির মার অপারেশন করায় শিশুর মাথায় রক্তক্ষরণ হয়ে গেছে। তাকে বাঁচানো সম্ভম নয়। ওইদিন রাত দেড় টায় শিশুটি ওয়েসিস হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
আনোয়ার জেনারেল হাসপাতাল থেকে জানা গেছে, সাহিনা বেগম ভর্তি হওয়ার পর অপারেশনের পূর্বে তার স্বামী কামরুল ইসলাম হাসপাতালের প্যাডে লিখিত দেন। সেখানে তার স্বাক্ষরিত খেলায় রয়েছে, আমার রোগীর অবস্থা/বাচ্চার অবস্থা খারাপ জানা স্বত্ত্বেও আমি চিকিৎসা করাতে আমার কোন আপত্তি নেই বা কোন অভিযোগ থাকবে না। বাচ্চার অবস্থা খারাপ হওয়ার পর কামরুল ইসলাম আবার হাসপাতালের প্যাডে লিখিত দেন যে, আমি আমার বাচ্চার অবস্থা খারাপ জেনেও পরবর্তী চিকিৎসার জন্য সিলেট এমজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি। এতে যদি বাচ্চা মারা যায় তাহলে আনোয়ার জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বা কর্তব্যরত ডাক্তার দায়ী থাকবে না।
এ ব্যাপারে আনোয়ার জেনারেল হাসপাতালের ম্যানেজার নজরুল ইসলাম বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, রোগীর পরিবারের এসব অভিযোগ আমরা কোন মতেই মেনে নিতে পারছি না। তিনি দাবি করে বলেন, বাচ্চাটি জন্ম নেয়ার পর তার বিভিন্ন অসুবিধা দেখা দেয়ায় আমরা জন্ম নেয়া শিশু সন্তানের পিতা কামরুল ইসলামকে বিষয়টি জানাই। তখন তিনি হাসপাতালের প্যাডে চিকিৎসার আগে ও পরে লিখিত দিয়েছেন। শিশুর শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তত্ত্বাবধানে থাকা নর্থ ইষ্ট মেডিকেল কলেজের ডাক্তার শাহরিয়া খান, ওসমানী মেডিকেল কলেজের হাসপাতালের গাইনী বিভাগের ডাঃ কিশোয়ার পারভিন ও ডাঃ বিজয় শিশুটিকে অন্য স্থানে নিয়ে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দেন। তিনি আরো বলেন, এখন শিশুটি মারা যাওয়ার পর তিনি আমাদের উপর ভুল চিকিৎসায় মারা যাওয়ার অভিযোগ তুলেন। শিশুটির মা সাহিনা বেগম (৩০) এখনও আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।