লটারীর অপেক্ষা নয় প্রয়োজন মেটাতে ব্যবসায়ীদের কাছেই কৃষকের ধান বিক্রি

20

বাবরুল হাসান বাবলু তাহিরপুর থেকে :
মহাজনী ঋৃণের টাকার সুদ মিটাতে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃৃষকের ধান যাচ্ছে ব্যাবসায়ীর গুদামে। ধান কাটা মাড়াইড়ের খরচ জোগাতে অনেকে কম দামে ধান বিক্রি করছেন,আবার অনেকে ধান কাটা মাড়াইড়ের পূর্বে ব্যাবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন বর্তমানে ধান দিয়ে সে টাকা পরিশোধ করছেন। আর এতে করে কৃষকের গোলা ধান শুন্য হয়ে পড়ছে শুরুতেই। খাদ্য গুদামে যখন ধান চাল সংগ্রহ হবে তখন প্রান্তিক কিংবা ক্ষুদ্র কৃষকের ঘরে ধান থাকবেনা। আর এ সুযোগে খাদ্য গুদামে ধান দিবে ফড়িয়া ব্যাবসায়ীরা। কৃষকদের দাবী আগামী পনেরও দিন নয়,কিংবা লটারী নয়, এখন থেকেই কৃষষরা সরাসরি খাদ্য গুদামে ধান দিতে পারলে উপকার হতো। অন্তত কিছুটা লাভের মুখ দেখতো কৃষক।
গত ২৮ এপ্রিল সরকারী ভাবে ধান চাল ক্রয় উদ্বোধন করা হয়েছে তাহিরপুর খাদ্য গুদামে। উপজেলায় ২০৭০ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করা ২০৭০ কৃষকের বিপরীতে। প্রতি কৃষক ধান দিতে পারবে ১ মেট্রিক টন। প্রতি মন ধানের সরকারী দর নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৪০ টাকা।
আর এ ধান ক্রয় করা হবে উপজেলার ৭ টি ইউনয়িনরে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র চাষীদের কাছ থেকে। বর্তমানে উপজেলা কৃষি অফিস প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকদের একটি তালিকা করছে । আগামী ১০ মে’র মধ্যে তালিকার কাজ শেষ হবে। সেই সাথে তালিকাকৃত কৃষকদের থেকে লটাারীর মাধ্যমে বিজয়ীদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইতি মধ্যে অনেক কৃষক ধান বিক্রি করে দিচ্ছেন। বর্তমানে স্থানীয় হাটে ধানের বাজার দর ৭’শ থেকে ৭’শ ৫০ টাকা। আর যারা ধান কাটার আগে ব্যাবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন তারা ধান বিক্রি করেছেন ৫’শ টাকায়। ফলে কৃষক কোন ভাবে লাভের মুখ দেখছেন না। মহাজনী ঋৃনের টাকা মেটানোই তাদের মুখ্য হয়ে দাড়িয়েছে। তাই কৃষক অনেকটা বাধ্য হয়ে এখনই ধান বিক্রি করছেন।
উপজেলার শনির হাওর পার উজান তাহিরপুর গ্রামের কৃষক জাক্কার মিয়া। তিনি চলতি বছর হাওরে ১০ (কেয়ার) জমিতে ইরি বোর ধান চাষাবাদ করেন। তিনি জানান,হাতে টাকা না থাকায় তিনি ধান কাটা মাড়াইর পূর্বেই ২০ মন ধান ৫শ টাকা ধরে বিক্রি করে দিয়েছেন ব্যাবসায়ীর কাছে।
মধ্য তাহিরপুর গ্রামের কৃষক আল-আমিন,তিনি জানান, প্রতি বছরই তিনি ২ থেকে ৩ শ মন ধান পান কিন্তু কখনোই খাদ্য গুদামে ধান দিতে পারেন নি। লটারীতে যাদের নাম ভাসে তাদের অধিকাংশের ঘরে খাদ্য গুদামে ধান দেয়ার মত ধান থাকেনা,খাদ্য গুদামে তখন ধান দেয ফড়িয়া ব্যাবসায়ীরা। তাই তিনি লটারীর অপেক্ষা না করে স্থানীয় ব্যাবসায়ীদের কাছেই ধান বিক্রি করে থাকেন।
উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা মফিজুর রহমান বলেন, খাদ্য গুদামে ধান ক্রয় উদ্বোধন করা হয়েছে। আগামী ১২ মে থেকে কৃষকরা সরাসরি খাদ্য গুদামে ধান দিতে পারবেন। ইচ্ছে করলেই আমরা এখন ধান নিতে পারি না। সরকারী সিদ্বান্ত মোতাবেক ধান সংগ্রহ করা হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান উদ দৌলা বলেন, কৃষকদের তালিকার কাজ চলমান। প্রকৃত কৃষকরা যেন খাদ্য গুদামে ধান দিতে পারে সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।