এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। তথ্য মতে, রোববার ১১টার দিকে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফলাফল প্রকাশের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এর আগে সকাল ১০টার দিকে বোর্ড চেয়ারম্যানদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফলের অনুলিপি হস্তান্তর করেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। উল্লেখ্য, জানা যাচ্ছে, ২০২৪ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ শিক্ষার্থী। এছাড়া এসএসসি-সমমান পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৮৩ দশমিক শূন্য ৪। বলা দরকার, গত ১৫ ফেব্রæয়ারি শুরু হয়েছিল এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। লিখিত পরীক্ষা শেষ হয় গত ১২ মার্চ। ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৩ থেকে ২০ মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়।
জানা যাচ্ছে, এবারে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীন ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন পরীক্ষার্থী এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন পরীক্ষার্থী ১৬ লাখ ৬ হাজার ৮৭৯ জন। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন দাখিল পরীক্ষার্থী ২ লাখ ৪২ হাজার ৩১৪ জন। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ১ লাখ ২৬ হাজার ৩৭৩ জন। পরীক্ষায় পাসের হারে শীর্ষে রয়েছে যশোর বোর্ড। আর সর্বনিম্ন পাসের হার সিলেট বোর্ডে। যশোর বোর্ডে পাসের হার ৯২ দশমিক ৩২ শতাংশ। আর সর্বনিম্ন সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৭৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এছাড়া ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৮৯ দশমিক ৩২ শতাংশ, রাজশাহীতে ৮৯ দশমিক ২৫ শতাংশ, কুমিলস্নায় ৭৯ দশমিক ২৩ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৮২ দশমিক ৮০ শতাংশ, বরিশালে ৮৯ দশমিক ১৩ শতাংশ, দিনাজপুরে ৭৮ দশমিক ৪০ শতাংশ ও ময়মনসিংহে ৮৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ। আমরা মনে করি, ফলাফল সংক্রান্ত যে চিত্র উঠে আসছে, তা আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। একইসঙ্গে উত্তীর্ণ সব শিক্ষার্থীকে আমরা অভিনন্দন জানাই।
আমরা বলতে চাই, শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে সরকার নানা ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রেখেছে এবং শিক্ষার উন্নয়নে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপও নিশ্চিত হচ্ছে। নানা সমস্যা ও নেতিবাচকতার মধ্যেও শিক্ষা ক্ষেত্রে অগ্রগতি হচ্ছে। ফলে, সার্বিক বিষয়কে আমলে নিয়ে শিক্ষার অগ্রগতি এবং যথাযথ মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে। এছাড়া এটাও আমলে নেওয়া জরুরি, শিক্ষার অগ্রগতি হচ্ছে, বিস্তৃত হচ্ছে। কিন্তু বারবার শিক্ষার মান সংক্রান্ত আলোচনা সামনে আসছে। সঙ্গত কারণেই শিক্ষার মান বাড়াতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই।
এর আগে এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছিল যে, শিক্ষার গুণগত মানের দিক থেকে আমরা এখনো পিছিয়ে। ফলে এই বিষয়টি এড়ানোর সুযোগ নেই। মনে রাখা দরকার, কেবল পরিমাণগত বা সংখ্যা বৃদ্ধিই শিক্ষার মানোন্নয়নের স্মারক নয়। শিক্ষার মানোন্নয়ন দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আজকের দিনে বৈশ্বিক বিবেচনায় উন্নত বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে আমাদের শিক্ষার মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। আর সেই লক্ষ্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টাও অব্যাহত রাখতে হবে। এবারের ফলাফলের তথ্য আমলে নিতে হবে। যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাসের হার কম সেসব প্রতিষ্ঠানের সংকট খতিয়ে দেখেও গ্রহণযোগ্য ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও নিশ্চিত করতে হবে।
সর্বোপরি বলতে চাই, এবারে এসএসসি-সমমান পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৮৩ দশমিক শূন্য ৪। শিক্ষার্থীরা তাদের ভবিষ্যৎ জীবনকে সুন্দর ও সঠিকভাবে এগিয়ে নেবে এমনটি কাম্য। একইসঙ্গে বলা দরকার, দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠাগুলোতে মানসম্মত শিক্ষকও নিশ্চিত করার বিষয়টিও এর আগে আলোচনায় এসেছে- যা এড়ানো যাবে না। ভুলে গেলে চলবে না, আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। দেশের সেই ভবিষ্যৎ নাগরিকদের গড়ে তোলার দায়িত্ব যাদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে তাদের মান নিশ্চিত হওয়াও অপরিহার্য। সার্বিকভাবে শিক্ষার মান উন্নয়নে কাজ করতে হবে। আর এই লক্ষ্যে সুদূরপ্রসারী উদ্যোগ নিতে হবে। সমাগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে শিক্ষা বিস্তৃত হওয়ার পাশাপাশি যথাযথ মান নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে।