সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ॥ ভাইয়ের মামলায় হয়রানির শিকার গোয়াইনঘাটের একটি পরিবার

15

স্টাফ রিপোর্টার :
আপন ভাইয়ের অন্যায় আচরণ, মামলা-হয়রানিতে অসহায় হয়ে পড়েছে গোয়াইনঘাট উপজেলার বার্কিপুর গ্রামের একটি পরিবার। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতেও সাহস পাচ্ছে না তারা। পরিবারটি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
মঙ্গলবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরেন উপজেলার বার্কিপুর গ্রামের আব্দুল লতিব আলীর পুত্র মো. তাজ উদ্দিন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার ভাই মখলিস নিজের অপকর্ম ঢাকতে এবং ভাইদের সহায়-সম্পত্তি দখলে নিতে নানা নাটক সাজাচ্ছে। তার সন্তান সম্ভবা দ্বিতীয় স্ত্রীকে মারধর করে সন্তান নষ্ট করার মিথ্যা অভিযোগ এনে আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের আসামি করে নারী নির্যাতন মামলা দায়ের করেছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
তিনি বলেন, মদ্যপ অবস্থায় ধারালো দা দিয়ে নিজ ঘরের টিনের বেড়া কেটে নাটক সাজিয়ে এখন সে আমাদের ওপর এসবের দায় চাপানোর চেষ্টা করছে। তার ঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ আমাদের ওপর চাপিয়েছে।
মখলিস একের পর এক মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে বাড়িতে পুলিশ এনে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও ঘরবাড়িতে লুটতরাজ চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘ভয়ভীতির মিথ্যা অভিযোগ এনে আদালতে আরও একটি মামলা দায়ের করেছে মখলিস। এ মামলায় তিন ভাই ও আমার দুই ছেলেকে আসামি করেছে।’
অসহায় তাজ উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের ছোট ভাই মখলিসকে প্রথম যখন বিদেশে পাঠাই তখন দুই বিঘা জমি ও তিনটি মহিষ বিক্রি করেছি। এর সাথে নগদ আরও কিছু টাকা জোগাড় করে তাকে বিদেশ পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিলাম। অথচ, পাড়ি দিয়েই সে আমাদের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে। বিষয়টি তখনই আমাদের পরিবারের সদস্যদের পীড়া দিয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘বিদেশে থাকাকালীন আমাদের ভাই একটি মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়ায়। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ওই মেয়ের সাথে তার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। চার বছর পর দেশে ফিরে এসে ওই মেয়েকেই বিয়ে করে। বিয়েতে সাত ভরি স্বর্ণালঙ্কার প্রদান করে। কিন্তু পরিবারের সদস্যদের দিকে সে একবারও ফিরে তাকায়নি। বরং নিজের নামে লুকিয়ে বেশকিছু জায়গা-জমি কিনেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এক সময় মখলিস গোয়াইনঘাট থানার দারোগা মিজান হত্যা মামলায় জড়িয়ে পড়ে পলাতক হয়ে যায়। এ মামলা থেকে বাঁচতে রাতের আঁধারে কাউকে না জনিয়ে পাশের গ্রামের জলাল উদ্দিনের কাছে চার বিঘা, আমাদের গ্রামের রমজান মিয়ার কাছে এক বিঘা ও আলা উদ্দিনের কাছে এক বিঘা জমি বন্ধক দেয়। যা পরিবারের লোকজনকে আরও নিঃস্ব করে। একপর্যায়ে সে দুবাই পালিয়ে যায় এবং একাধারে ১১ বছর সেখানে ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘এগারো বছর নিরাপদে বিদেশে থাকার পর মখলিস দেশে ফিরে আবারও আামদের প্রতি জুলুম শুরু করে। অবশিষ্ট সহায়-সম্পত্তি দখল করে নিতে মরিয়ে হয়ে উঠে। ফেরার পর আমরা ভাই-বোনেরা জমি বন্ধকের বিষয়ে জানতে চাইলে সে বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করে। এক বিঘা জমি বিক্রি করেছিল সেটিও এখন অস্বীকার করছে।’
তাজ উদ্দিন বলেন, ‘দেশে ফিরে ভাইদের তৈরি করা বৃক্ষ বাগান একা ভোগ করতে মরিয়া হয়ে উঠে সে। তাতে বাধা দেওয়ায় আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে। সে এলাকার মুরব্বিদেরও পরোয়া করে না। জায়গা-জমি বন্ধক, বিক্রি ও বাগান দখলের বিষয়ে আমরা এলাকার মুরব্বিদের অবগত করি। তারা এ বিষয়ে কথা বলতে মখলিসকে ডাকেন। কিন্তু সে উপস্থিত হতে অস্বীকৃতি জানায়।’ তিনি বলেন, ‘তার অত্যাচার নির্যাতনে অসহায় পড়েছি। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতেও সাহস পাচ্ছি না। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা বিশ্বাস করি মখলিসের অন্যায়-অপকর্মের বিরুদ্ধে যথাযথ কর্তৃপক্ষ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাকে শাস্তির আওতায় আনবেন।’