জঙ্গি দমনে পরিকল্পিত উদ্যোগ

13

 

দেশে থেমে নেই জঙ্গি তৎপরতা। সিলেটের এয়ারপোর্ট থানার বড়শালা বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গ্রপ্তারকৃত চার জঙ্গি হলেন- সিলেটের দক্ষিণ সুরমার হাফেজ মাওলানা মাহমুদ হোসাইনের ছেলে আব্দুলস্নাহ মায়মুন (৩৪), ফরিদপুরের চরভদ্রাসন এলাকার শেখ আব্দুস ছালাম মাস্টারের ছেলে মো. আবু জাফর (৪০), চাঁদপুরের মতলব উত্তরের মোস্তফা কাজীর ছেলে মোহাম্মদ আক্তার কাজী সাইদ (৩৮) ও গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের মৃত আব্দুর রাজ্জাক মোলস্নার ছেলে সালাউদ্দিন রাজ্জাক মোলস্না (৩২)। র‌্যাব জানায়, গত বছরের ২৩ আগস্ট কুমিল্লœা সদর এলাকা থেকে আটজন তরুণের নিখোঁজের ঘটনায় কুমিলস্নার কোতোয়ালি থানায় করা সাধারণ ডায়েরির বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রচার হলে র‌্যাব নিখোঁজদের উদ্ধারে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। নিখোঁজ তরুণদের উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে র‌্যাব ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ নামক একটি নতুন জঙ্গি সংগঠনের সক্রিয় থাকার তথ্য পায় এবং র‌্যাব জানতে পারে যে, এই সংগঠনের সদস্যরা পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘কেএনএফ’-এর সহায়তায় সশস্ত্র প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইতোমধ্যে নতুন এই জঙ্গি সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাসহ সর্বমোট ৬৮ জন এবং পাহাড়ে অবস্থান, প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য কার্যক্রমে জঙ্গিদের সহায়তার জন্য পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘কেএনএফ’-এর ১৭ জন নেতা ও সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মনে রাখতে হবে, জঙ্গিবাদ বৈশ্বিক সংকট। ফলে এই সংকটের ভয়াবহতা যেমন বিবেচনায় নিতে হবে, তেমনি এই সংকট নিরসনে সর্বাত্মক উদ্যোগ নিতে হবে। এর আগেও এই বিষয়টি সামনে এসেছে, জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যথাযথ উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। কেননা, বিভিন্ন সময়ে জঙ্গি সদস্যদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় এটা স্পষ্ট হয়, জঙ্গিদের মূলোৎপাটন হয়নি।
এটা অস্বীকার করার উপায় নেই, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের তৎপরতায় পদ্ধতিগত পরিবর্তন হয়েছে। নতুন করে জঙ্গি সংগঠনগুলোকে একত্রিত করা বা একই প্লœ্যাটফর্মে আনার চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া নানা সময়েই জঙ্গিদের অনলাইন তৎপরতার বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে। জঙ্গিরা নতুন নতুন সদস্য রিক্রুট করতে অনলাইনে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্নভাবেই জঙ্গিরা সদস্য বৃদ্ধির চেষ্টা করে থাকে, ফলে তরুণদের সরলতার সুযোগ নিয়ে বিভ্রান্ত করতে চায়। দেশকে অস্থিতিশীল করতে কিংবা যে কোনো ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটাতে যারা তৎপর তাদের রুখে দিতে হবে। জঙ্গিবাদ নির্মূলে করণীয় নির্ধারণ সাপেক্ষে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। জঙ্গিরা সদস্য সংগ্রহে যেভাবেই উদ্বুদ্ধ করতে চেষ্টা করুক তা রুখতে হবে। এ ব্যাপারে সরকারের পরিকল্পিত উদ্যোগ জরুরি।