কাজিরবাজার ডেস্ক :
পেনশন কেবল সরকারি চাকুরেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চান না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৬০ বছরের বেশি বেসরকারী চাকরিজীবী এবং অন্যদেরও পেনশনের আওতায় আনতে কয়েক বছর আগে যে পরিকল্পনা করা হয়েছিল, সেটি এগিয়ে নিতে চান তিনি। ষাটোর্ধ জনগণের জন্য সর্বজনীন পেনশন স্কিম প্রণয়ন এবং কর্তৃপক্ষ স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন সরকারপ্রধান। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট ও অর্থনৈতিক সক্ষমতার আলোকে বিভিন্ন নির্দেশনার পাশাপাশি জরুরী ভিত্তিতে আইন করার উদ্যোগ নিতে অর্থ বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
গণভবনে বৃহস্পতিবার অর্থ বিভাগের এক অনুষ্ঠানে তিনি এ নির্দেশ দিয়েছেন। সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেয়া ইশতেহারে সরকারী-বেসরকারীসহ সব ধরনের অনানুষ্ঠানিক খাতের জন্য পেনশন স্কিমের ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। তারই ধারাবাহিকতায় এ নির্দেশ দিয়েছেন সরকারপ্রধান। সবার জন্য পেনশন আওয়ামী লীগের গত আমলের চিন্তা। আবুল মাল আবদুল মুহিত অর্থমন্ত্রী থাকাকালে ২০১৭-১৮ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে তিনি একটি রূপরেখা দিয়েছিলেন। এ জন্য পাইলট প্রকল্পের কথা বলেছিলেন তিনি।
সর্বজনীন পেনশনকে মুহিত তার স্বপ্নের প্রকল্প উল্লেখ করলেও একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর আ হ ম মুস্তফা কামাল অর্থমন্ত্রী হওয়ার পর এ বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কাজ চলেনি। তবে সরকারের নানা কাজ যে পর্দার আড়ালে হয়েছে, সে বিষয়টি স্পষ্ট হলো এই আয়োজনে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রবর্তন’ বিষয়ে একটি উপস্থাপনা দেয় অর্থ বিভাগ।
বাংলাদেশে সরকারী চাকরিজীবীরা অবসরে যাওয়ার পর আমৃত্যু তারা আর্থিক সুবিধা পান প্রতি মাসে। সেই চাকরিজীবী মারা গেলে তার স্ত্রী এবং বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী সন্তান থাকলে তাকেও আমৃত্যু পেনশন দেয়া হয়। তবে বেসরকারী খাতে কোথাও কোথাও ভবিষ্য তহবিল (প্রভিডেন্ড ফান্ড) এবং গ্র্যাচুইটি সুবিধা থাকলেও পেনশনের বিষয়টি নেই। ফলে চাকরি শেষে অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হন বিপুলসংখ্যক মানুষ। এ বিষয়টি চালু হলে শেষ জীবনে আর্থিক অনিশ্চয়তা দূর হবে।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস উপস্থিত ছিলেন। অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, পরিকল্পনা বিভাগের সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তীসহ অন্য উর্ধতন কর্মকর্তারাও সেখানে ছিলেন।
ষাটোর্ধ নাগরিকদের জন্য পেনশন ছাড়াও তাদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়ার পরিকল্পনার কথাও ঘোষণা হয়েছে। প্রবীণদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসার একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। তবে এটি একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।