কাজিরবাজার ডেস্ক :
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের করা ২৪৩টি আপিল আবেদন গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইসিতে আপিল আবেদন পড়ে ৫৪৩টি। বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার তিনদিনে ইসি এই ৫৪৩টি আপিল আবেদনের শুনানি করে। এরমধ্যে ২৪৩টি আবেদন গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়।
অন্যদিকে ৩০০ জনের আবেদন খারিজ করা হয়েছে। ফলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫২২জন। এরমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন ১৮৫ জন।
ইসি সচিবালয়ে স্থাপিত অস্থায়ী এজলাসে আপিল আবেদনগুলোর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শেষ দিন শনিবার রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত আপিল আবেদনের শুনানি চলে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী আপিল শুনানি করেন। ইসি সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদও উপস্থিত ছিলেন।
আপিল শুনানির প্রথম দিন বৃহস্পতিবার ৮০ জন, দ্বিতীয় দিন শুক্রবার ৭৮জন এবং তৃতীয় দিন শনিবার ৮৫ জন প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।
২৮ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন পর্যন্ত ৩ হাজার ৬৫টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছিল। এরমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো থেকে মোট ২ হাজার ৫৬৭টি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ৪৯৮টি মনোনয়নপত্র জমা পড়ে।
দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২৬৪টি আসনে ২৮১জন এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ২৯৫টি আসনে ৬৯৬ জন ও জাতীয় পার্টি ২১০টি আসনে ২৩৩ জন প্রার্থী দিয়েছিল।
২ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে ২ হাজার ২৭৯টি মনোনয়নপত্র বৈধ ও ৭৮৬টি বাতিল ঘোষণা করেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা। এরমধ্যে ৫৪৩টি আপিল আবেদন জমা পড়ে।
গত ৬ ডিসেম্বর থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত শুনানীতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, কৃষক শ্রমিক জনতালীগের কাদের সিদ্দিকী, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বিশেষ উপদেষ্টা রুহুল আমীন হাওলাদার, বিএনপি নেতা মীর নাছির, মীর হেলাল, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, গণজাগরণ মঞ্চের একাংশের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারসহ ৩০০ প্রার্থীর আবেদন না মঞ্জুর করেছে নির্বাচন কমিশন।
অন্যদিকে বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ব্যরিস্টার নাজমুল হুদা, বিএনপির প্রার্থী গোলাম মাওলা রনি, আফরোজা আব্বাস, কুড়িগ্রাম-৪ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ জাকির হোসেন ও ঝিনাইদহ-৪ আসনের প্রার্থী আব্দুল মান্নান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান এম মোর্শেদ খান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, বিএনপি প্রার্থী ফরিদুল কবীর তালুকদার শামীম, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ব্যরিস্টার আমিনুল হক, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু, রেজা কিবরিয়া, ইলিয়াছ আলীর স্ত্রী বিএনপি প্রার্থী তাহমিনা রুশদী লুনা, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এডভোকেট নাদিম মোস্তফাসহ দুই শতাধিক প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। তিন দিনে বিএনপির ৭৮ জন প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ৯ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময়।
আজ ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার পর থেকে প্রার্থী ও তার সমর্থকরা নির্বাচনী এলাকায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন।