সিলেটে আনোয়ারুজ্জামানেই ‘ভরসা’ আওয়ামী লীগের

32

স্টাফ রিপোর্টার
শেষ পর্যন্ত সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আনোয়ারুজ্জামানেই ভরসা রাখলো আওয়ামী লীগ। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নৌকার কান্ডারি হলেন তিনি। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী অনেকটা আকস্মিকভাবে সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকার কান্ডারী হওয়ার জন্য মাঠে নামেন। এরপর দলীয় মনোয়নপত্র কেনা থেকে জমা দেওয়া পর্যন্ত বিরামহীন প্রচারণা চালাতে থাকেন। অল্প সময়ের মধ্যে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী চলে আসেন আলোচনার লাইমলাইটে। নৌকার কান্ডারী হওয়ার দৌড়ে অন্যান্যদের মধ্যে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেনসহ ১০ জনকে পেছনে ফেলে শেষ পর্যন্ত দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা আনোয়ারুজ্জামানেই ভরসা রাখলেন। আগামী ২১শে জুন অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে নৌকা তুলে দিলেন তারই হাতে। আর এর মধ্যে দিয়ে নৌকার কান্ডারী কে হবেন- এ নিয়ে বিগত কয়েক মাসের সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটলো।
আসন্ন পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী চ‚ড়ান্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে দুই সিটিতে আগের প্রার্থী বহাল রাখলেও তিনটিতে প্রার্থী বদল করেছে আওয়ামী লীগ। শনিবার আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার ও জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভায় তাদের চ‚ড়ান্ত করা হয়। সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ও মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য ওবায়দুল কাদের। এর আগে বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সভা শুরু হয়। সভায় সভাপতিত্বে করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাঁচ সিটিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়নর পাওয়ারা হলেন সিলেটে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, বরিশালে আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত, খুলনায় তালুকদার আব্দুল খালেক, রাজশাহীতে এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন ও গাজীপুরে আজমত উল্লাহ খান।
এর মধ্যে এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন ও তালুকদার আব্দুল খালেক মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বাকি তিনজন অর্থাৎ আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত ও আজমত উল্লাহ খান সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নতুন প্রার্থী।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, গত সিটি নির্বাচনে সিলেট থেকে মনোনয়ন পেয়েছিলেন সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। তিনি বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর কাছে হেরে যান। ২০২০ সালের ১৫ জন মারা যান সিলেট আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট এ নেতা। তার স্থানে এবার নৌকার মাঝি হলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
অন্যদিকে, বরিশাল সিটিতে বর্তমানে মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর স্থলে তার চাচা, আওয়ামী যুবলীগের সদস্য খোকন সেরনিয়াবাতকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। আর গাজীপুর সিটিতে মেয়র ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় তাকে দল ও মেয়র পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর এ সিটিতে ভারপ্রাপ্ত মেয়র করা হয় আসাদুর রহমান কিরণকে। তবে জাহাঙ্গীর কিংবা কিরণকে মনোনয়ন না দিয়ে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খানকে এ সিটিতে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার ও জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আমির হোসেন আমু, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, কাজী জাফর উল্যাহ, ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, মো. রাশিদুল আলম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও ড. আবদুস সোবহান গোলাপ।