সিলেটে নানা আয়োজনে পহেলা বৈশাখ উদযাপন

26

স্টাফ রিপোর্টার
‘ঘোঁচাতে তোমার দুখের বান হাতে হাতে মিলাও প্রাণ’ সেøাগান নিয়ে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে বিভিন্ন আয়োজনে পহেলা বৈশাখ উদযাপিত হয়েছে। বাংলা ১৪৩০ সালকে বরণ করতে পহেলা বৈশাখ এর আয়োজনে ছিল চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, মঙ্গল শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গত শুক্রবার সকাল ১০ টায় সিলেট চৌহাট্টাস্থ ভোলানন্দ নৈশ স্কুল প্রাঙ্গণে আলোচনা সভায় চারণ সিলেট জেলা আহবায়ক নাজিকুল ইসলাম রানা’র সভাপতিত্বে ও চারণ জেলা সদস্য মাসুদ রানা’র পরিচালনায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাসদ সিলেট জেলা আহবায়ক আবু জাফর, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেট জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শামসুল আলম সেলিম, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ।
আলোচকরা বলেন, সর্বগ্রাসী এক ভোগবাদী অপসংস্কৃতির করাল গ্রাসে আমাদের সমাজ আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। পুঁজিবাদী ব্যবস্থা এবং রাষ্ট্রীয় দায়হীনতার প্রকটতার কারণে এখানে এক লুম্ফেন রাজত্ব কায়েম হয়েছে। জনগণের নীতি নৈতিকতা ডুবাতে সমাজে বিস্তৃত করা হয়েছে নানা আয়োজন। এসব আয়োজনের মূল শিকার প্রধানত কিশোর-তরুণরা। এই তরুণদের উপরই নির্ভর করে সমাজ ও রাষ্ট্র কোন পথে পরিচালিত হবে। তাই সমাজের শিশু-কিশোর-তরুণদের ভোগবাদী অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে অসাম্প্রদায়িক ও সাম্যবাদী প্রগতিশীল চেতনার ধারক করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আধুনিক চিন্তার মানবিক গুণাবলি সমৃদ্ধ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে উপস্থিত সকলের প্রতি আহŸান জানান।
আলোচনা সভার পূর্বে সকাল ৯ টায় ৩ টি বিভাগে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় পহেলা বৈশাখকে স্বাগত জানিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়।
মঙ্গল শোভাযাত্রা শেষে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। সাংস্কৃতিক পর্বে শুরুতে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সিলেট জেলা শাখার শিল্পীরা গান-আবৃত্তি-নৃত্য পরিবেশন করে। আমন্ত্রিত সংগঠন হিসেবে পরিবেশনায় অংশ নেয় অনির্বাণ শিল্পী সংগঠন ও ছন্দনৃত্যালয়। অতঃপর অতিথি শিল্পী বিজন রায়ের একক সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে সাংস্কৃতিক পর্বের সমাপ্তি হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শেষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পুরষ্কার প্রদান করা হয়।
নতুন বছরে রাজনৈতিক দলগুলোর কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি বন্ধ হবে বলে প্রত্যাশা করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। গত শুক্রবার সকালে সিলেট জেলা প্রশাসন আয়োজিত বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নতুন বছরের প্রত্যাশা হচ্ছে, সবার মধ্যে সহিষ্ণুতা, সম্প্রীতি ও সম্মানবোধ জাগ্রত হোক। ধর্ম-বর্ণ গোষ্ঠীর সংমিশ্রণে দেশটা হবে একটি স্বতন্ত্র অসাম্প্রদায়িক অর্থনীতির উন্নত বাংলাদেশ।
নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের এখনো নয় মাস বাকি, নির্বাচন নিয়ে তাড়াহুড়ার কিছু নেই। সরকার সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আন্তরিক। তবে শুধু সরকার চাইলেই হবে না। নির্বাচন কমিশনের বড় দায়দায়িত্ব রয়েছে। এজন্য শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। সকল দায়দায়িত্ব তাদের। তবে সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব পালন করতে হবে রাজনৈতিক দল, সমর্থক ও ভোটারদের। সবাই আন্তরিক হলে ফ্রি এন্ড ফেয়ার ইলেকশন অনুষ্ঠিত হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা করেছে সরকার। আগে বিএনপির সময়ে ভুয়া ভোটার ছিল ১ কোটি ২৩ লাখ। এই ভুয়া ভোট যাতে না হয় জন্য এখন ফটো আইডি বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আগে অভিযোগ হতো ব্যালট বাক্স ভরে দেয়ার, এজন্য এখন স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স আনা হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আওয়ামী লীগের ভয় নেই। এ দেশের মানুষ অনেক সেয়ানা। তার সব বুঝে, জানে। তারা ভুল করে না। আওয়ামী লীগ জনগণের ওপর আস্থা রাখে।
জনগণ ভোট দিলে আওয়ামী লীগ আবারো ক্ষমতায় আসবে, না দিলে অপজিশনে যাবে। এমন মন্তব্য করে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, ১৪ বছরে আওয়ামী লীগের হাত ধরে বাংলাদেশের যে অভাবনীয় সাফল্য ও উন্নয়ন সাধিত হয়েছে সে জন্যই জনগণ আবারও আওয়ামী লীগকে নির্বাচিত করবে।