হবিগঞ্জে রমজানেও থেমে নেই খুনাখুনি, ছয় দিনে ৫ খুন

15

স্টাফ রিপোর্টার
পবিত্র রমজানেও হবিগঞ্জে খুনাখুনির ঘটনা থেমে নেই। পবিত্র এই রমজান মাসে মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে কমপক্ষে ৫ টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে বেশীরভাগ ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বিরোধের জেরে। চলতি মাসের ৮ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ৫টি খুনের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত শতাধিক লোকজন।
জানা গেছে, হবিগঞ্জের তিনটি উপজেলায় ৮ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল ৬দিনে ৫টি খুনের ঘটনা ঘটে। তারমধ্যে বানিয়াচংয়ে ঘটেছে তিনটি, লাখাই উপজেলায় একটি ও আজমিরীগঞ্জে একটি।
৮ এপ্রিল শনিবার: হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় পূর্ব বিরোধের জেরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে গলায় ফিকল (দেশীয় অস্ত্র) বিঁধে জাহাঙ্গীর আলম (৩৫) নামে এক যুবক খুন হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৫০ জনের বেশি মানুষ। ওইদিন সন্ধ্যায় উপজেলার মক্রমপুর ইউনিয়নের কুশিয়ারতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত জাহাঙ্গীর আলম কুশিয়ারতলা গ্রামের ধলাই মিয়ার ছেলে। এ বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করেন বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) মো.আবু হানিফ।
৯ এপ্রিল রবিবার: আজমিরীগঞ্জে কৃষি জমিতে গরুর ধান খাওয়া নিয়ে বিরোধ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ফাইজুল আলম (ফয়েজ) (২০) নামে এক মাদ্রাসা পড়ুয়া যুবক খুন হয়েছেন। এ ছাড়াও সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। রবিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় উপজেলার জলসুখা ইউনিয়নের নোয়াগড় গ্রামে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত ফাইজুল আলম (ফয়েজ) নোয়াগড় গ্রামের আশক আলীর ছেলে। এ বিষয়ে আজমিরীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মাসুক আলী জানান, সংঘর্ষে ১জন নিহত হয়েছেন আহত হয়েছে অনেকেই। লিখিত অভিযোগ এখনো পাই নি দেখা যাক কি হয়।
১৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার: বানিয়াচংয়ে মাছ ধরার ডোবা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে সুব্ররত দাশ(৩৬) নামে এক যুবক খুন হন। এতে আহত হয়েছেন প্রায় অর্ধশত লোক। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১ টায় উপজেলার মশাকলি গ্রাম এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সদর হাসপাতাল থেকে ৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ। মশাকলি গ্রামের সুধাম দাশ ও গৌরাঙ্গ দাসের মধ্যে একটি মাছ ধরার ডোবা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জেরে এই ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করেন বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) মো.আবু হানিফ।
১৪ এপ্রিল শুক্রবার: লাখাইয়ে ধান কাটা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আব্দুল জলিল (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ খুন হন। এসময় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২০ জন। শুক্রবার ১৪ এপ্রিল সকালে ওই উপজেলার মকসুদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আব্দুল জলিল ওই গ্রামের মৃত আব্দুল করিমের ছেলে। লাখাই থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) চম্পক ধাম বলেন, ধান কাটা নিয়ে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জনেছি, এব্যাপারে তদন্ত চলছে।
সর্বশেষ ১৪ এপ্রিল রাতে মাটি কাটা নিয়ে দ্বন্ধে বানিয়াচংয়ে ভাতিজার দায়ের কোপে মোশারফ হোসেন (৪০) নামের এক ব্যক্তি খুন হন। শুক্রবার ১৪ এপ্রিল রাতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মোশারফ হোসেন উপজেলার কুর্শা খাগাউড়া গ্রামের মোশাহিদ মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মাটি কাটা নিয়ে মোশারফ হোসেনের সঙ্গে ভাতিজা শাহিন মিয়ার কথা-কাটাকাটি হয়। এসময় তারা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে শাহিন মিয়া উত্তেজিত হয়ে চাচা মোশারফ মিয়াকে দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অজয় চন্দ্র দেব বলেন, বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।