নারীরাও এগিয়ে আসছেন বাইকিংয়ে \ স্বাবলম্বী হওয়ার তাগিদে নিচ্ছেন প্রশিক্ষণ

5

কাজিরবাজার ডেস্ক :
ছেলেদের পাশাপাশি এখন নারীরাও এগিয়ে আসছেন বাইকিংয়ে। নারী বাইকারের সংখ্যাও এখন দিন দিন বাড়ছে। নারীরা অন্যের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে স্বাবলম্বী হতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন মোটরসাইকেল চালানোর।
সরেজমিনে বরিশাল নগরীর শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামে গিয়ে দেখা যায় একসঙ্গে বেশ কয়েকজন নারী মোটরসাইকেল চালানোর প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। সেখানেই কথা হয় প্রশিক্ষণরত বেশ কয়েকজন নারীর সঙ্গে। তারা জানান, নিজেদের স্বাবলম্বী করতেই তাদের এই প্রশিক্ষণ।
প্রশিক্ষণরত তানভী নিতু জানান, তিনি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। তার অফিস এবং বাচ্চাদের স্কুল ও কোচিং সেন্টারে আনা নেওয়া করতে চার বছর আগে স্কুটি চালানো শিখেছেন। এখন আবার নতুন করে মেনুয়াল বাইক চালানোর প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, নিজের বাইক থাকায় এখন আর তাকে রিকশার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হয় না। তাছাড়া যেকোনো জায়গায় সময়মতো পৌঁছাতে পারেন।
বৃষ্টি নামে প্রশিক্ষণরত অন্য একজন বলেন, ছোটবেলা থেকেই তার বাইক চালানো শেখার খুব আগ্ৰহ ছিল। পরে চালানো শিখে নিজেই কিনে নিয়েছেন। এখন বাসার যেকোনো কাজে তিনিই ভরসা। বাইক চালানো অনেকদিন আগে শিখলেও এখানে এসে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।
সুমনা পারভিন নামের এক নারী বাইকার বলেন, মেয়েদের বাইক চালানো অনেকদিন আগে ঢাকায় দেখেছি। পরে দেখলাম বরিশালেও বাইক চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। দ্রæত ছুটে গিয়ে সেখানে ভর্তি হয়ে হেনা আপার কাছে প্রশিক্ষণ নিই। এখন নিজে বাইক কিনেছি। তাই নিজের কাজ নিজেই করতে পারি।
প্রশিক্ষণরত ডা. শাবনাজ মুনিয়া বলেন, ফিল্ড ভিজিটের বিভিন্ন কাজে অনেক জায়গায় যেতে হয়। দেখা যায় অনেক সময় গাড়ি পাওয়া যায় না। ফলে কাজের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়। তাই বাইক চালানো শিখছি। শেখা হলেই কিনে নেব।
ড্রিম রাইডার্স ট্রেনিং সেন্টারের পরিচালক হেনা শ্রাবণ জানান, ২০১১ সালে একটি একাডেমি থেকে তিনি বাইক চালানো শেখেন। তখন সবার মাঝে বাইক চালানো শেখার তেমন কোনো আগ্ৰহ ছিল না। এখন দিন দিন মেয়েরা মোটরসাইকেল চালানোয় আগ্ৰহী হচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালে ড্রিম রাইডার্স ট্রেনিং সেন্টার নামে তার এই ট্রেনিং সেন্টারের যাত্রা শুরু করেন।
হেনা বলেন, এখন প্রায় প্রতিদিনই নতুন দু-একজন করে শিক্ষার্থী ভর্তি হচ্ছেন তার ট্রেনিং সেন্টারে। অনেকেই এখান থেকে চালানো শিখে নিজেরা বাইক কিনছেন। মেয়েদের বাইক প্রশিক্ষণের জন্য তার ট্রেনিং সেন্টারই বরিশালে সর্ব প্রথম চালু হয়। এখন পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক নারীকে বাইক চালানোর প্রশিক্ষণ দিয়েছেন তিনি। শুধু বরিশাল নয়, দেশের বিভিন্ন জেলার মেয়েরা তার কাছ থেকে বাইক চালানোর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
হেনা আরও বলেন, মেয়েদের প্রশিক্ষণের জন্য তার দুটি আলাদা বাইক রয়েছে। বাইক চালানো শিখতে হলে শুধু তার সেন্টারে ভর্তি হলেই হবে। তিনি ১৫ দিন ও ৬ দিনের আলাদা দুটি কোর্সের মাধ্যমে মেয়েদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন।
এছাড়া তাদের আলাদা একটি লেডি বাইকিং গ্ৰুপও রয়েছে, যে গ্ৰুপের মাধ্যমে তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ট্যুর দিয়েছেন। পাশাপাশি যেকোনো বন্ধের দিনও মেয়েরা মিলে শর্ট ট্যুর দিয়ে থাকেন।