কুমারগাঁওয়ে মোটরসাইকেল চুরি নিয়ে দু’গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ ॥ ইউপি চেয়ারম্যান ও পুলিশ সহ আহত ৩

85

স্টাফ রিপোর্টার :
সদর উপজেলার কুমারগাঁও চরুগাঁওয়ে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে এ সংঘর্ষে টুকেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যার শহীদ আহমদ, জালালাবাদ থানার পুলিশ কনস্টেবল রাহুল ভট্টাচার্য্য ও কনস্টেবল সোহাগ আহত হয়েছেন। পরে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও ২/৩ রাউন্ড ফাকা গুলিবর্ষণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ এ সময় ঘটনাস্থল থেকে নাজমুল নামের এক যুবককে আটক করেছে। তার বিরুদ্ধে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগ উঠেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চরুগাঁওয়ের বাসিন্দা শাহজাহান আহমদ নামে একজনের মোটরসাইকেল চুরি হয় কয়েকদিন আগে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় শাহজাহানসহ কয়েক জন্য মিলে চরুগাঁও এলাকার বাসিন্দা নাজমুলকে এ ঘটনায় দায়ি করেন। তারা তাকে আটক করে পুলিশের কাছেও সোপর্দ করেন। এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন চরুগাঁওয়ের লোকজন। তারা কয়কজন মিলে শাহজাহান আহমদের বড় ভাই জুবের আহমদ সুমনের উপর হামলা করে। এ হামলার ঘটনায় দু’গ্রামের লোকজন বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। যা এক পর্যায়ে তা সংঘর্ষের রূপ নেয়। এতে টুকেরবাজার ইউনিয়েনর চেয়ারম্যার শহীদ আহমদ, পুলিশ কনস্টেবল রাহুল ভট্টাচার্য্য ও কনস্টেবল সোহাগ আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানান, বেলা ১টা ৪০ মিনিটে কুমারগাঁও ও চরুগাঁও গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্র ও ইটের টিলসহ তেমুখীর দু’পাশে অবস্থান নেন। পরে বেলা ১টা ৫০ মিনিটে লাঠিসোটাসহ রড নিয়ে তেমুখী পয়েন্টে অবস্থান নেন কুমারগাও গ্রামবাসী। অপরদিকে শেখপাড়ার গলিতে অবস্থান নেন চরুগাঁওবাসী। তেমুখী পয়েন্ট থেকে কুমারগাঁও বাসী ও শেখপাড়া রোডের ভেতর থেকে চরুগাঁওবাসীর পক্ষ থেকে ইট নিক্ষেপ শুরু হয়। এ সময় ইটের আঘাতে আহত হন টুকের বাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদ আহমদ। এক পর্যায়ে টুকেরবাজার রোড থেকেও চরুগাঁও গ্রামের আরও একটি দল ইট নিক্ষেপ করে। এ সময় দুই গ্রামবাসীর পক্ষে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে। বেলা ২টায় জালালাবাদ থানার এসএই দিবাংশু পালসহ ৬ থেকে ৭ জন পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালান। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৭ থেকে ১০টি রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। প্রায় আধা ঘন্টা তৎপরতা চালিয়ে স্থানীয় রাজনীতিবিদদের নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। এ সময় সিলেট সুনামগঞ্জ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আসার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
জালালাবাদ থানার কর্তব্যরত অফিসার এএসআই জামান ভূঁইয়া জানান, সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে পুলিশের দুই কনস্টেবল আহত হয়েছেন।
জালালাবাদ থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার দেবাংশু জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ আসামাত্র দুই গ্রামে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, এ সময় ২/৩ রাউন্ড ফাকা গুলি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এ সময় আমাদের দুই পুলিশ সদস্য আহত হন। তাদেরকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় চেয়ারম্যান শহীদ আহমদও আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি।