এম সি কলেজ থেকে সংবাদদাতা :
সিলেটের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ মুরারিচাঁদ কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর পান্না রানী রায় পিআরএল (পোস্ট রিটায়ারম্যান্ট লিভ)-এ গেছেন। তিনি ছিলেন মুরারিচাঁদ কলেজের ইতিহাসে ৪৮ তম ও দ্বিতীয় নারী অধ্যক্ষ।
অধ্যক্ষ হিসেবে সোমবার ছিলো (৩১ অক্টোবর) ছিল তার শেষ কর্মদিবস। এদিন এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর মোঃ আশরাফুল কবিরের হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন তিনি।
এর আগে গত ১৮ই সেপ্টেম্বর মুরারিচাঁদ কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন পান প্রফেসর পান্না রানী রায়। তার আগে ২৪ আগস্ট থেকে কলেজের সদ্য বিদায়ী অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. সালেহ আহমদ অবসরোত্তর ছুটিতে যাওয়ায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি।
প্রফেসর পান্না রানী রায় ১৯৯২ সালে সিলেট সরকারি অগ্রগামী স্কুল এন্ড কলেজে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে ১৯৯৩ সালে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নওগাঁ সরকারি বি.এম.সি. কলেজে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। পরে দেশের নামকরা বিভিন্ন কলেজে অধ্যাপনা করেন তিনি। ২০০৮ সালের ২০শে আগস্ট মুরারিচাঁদ কলেজে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে যোগদান করেন। পরে ২০১৭ সালে অন্য কলেজে বদলী হয়ে পরবর্তীতে পদোন্নতি পেয়ে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর আবার মুরারিচাঁদ কলেজে উপাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান৷
১৯৬৩ সালের ১ নভেম্বর সিলেটের লালদীঘিরপার এলাকায় রঙ্গলাল রায় ও ছায়া রানী রায়ের কোল আলোকিত করে জন্ম নেন প্রফেসর পান্না রানী রায়। তিনি ১৯৮০ সালে সিলেট অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে এসএসসি পাস করেন। ১৯৮২ সালে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজ থেকে কুমিল্লা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে মানবিক বিভাগ থেকে সম্মিলিত মেধা তালিকায় বোর্ডে তৃতীয় স্থান অর্জন করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বি.এস.এস. (সম্মান) ও এম.এস.এস. ডিগ্রী লাভ করেন।
প্রফেসর পান্না রানী রায় শিক্ষকতার পাশাপাশি ছিলেন একজন কবি ও লেখিকা। তার রচিত বিভিন্ন বই প্রকাশিত হয়েছে। তার রচিত একাডেমিক বই- প্রারম্ভিক সমাজবিজ্ঞান, সামাজিক সমস্যা, সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি, সমাজবিজ্ঞান উপাদান, ধ্রুপদী সমাজচিন্তা, বাংলাদেশের সমাজবিজ্ঞান, ধ্রুপদী সমাজতাত্ত্বিক মতবাদ, বাংলাদেশের সমাজকাঠামো (যৌথ), অপরাধবিজ্ঞান, আধুনিক সমাজতাত্ত্বিক মতবাদ, সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি (বিএসএস পাস)। এছাড়াও তিনি নারীদের সমঅধিকার নিয়ে লিখেন কাব্যগ্রন্থ ‘আমি নারী’, দেশকে নিয়ে ‘আমার স্বপ্নের বাংলাদেশ’, মাকে নিয়ে লেখা ‘মায়ের আঁচল’, কালস্রোত, হৃদপারানীরঘাট (যৌথ কাব্যগ্রন্থ) উল্লেখযোগ্য।