চাঞ্চল্যকর ব্লগার অনন্ত বিজয় হত্যা মামলার রায় ৩০ মার্চ

3

স্টাফ রিপোর্টার :
চাঞ্চল্যকর বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় হত্যা মামলার রায় আগামী ৩০ মার্চ ঘোষনা করা হবে। গতকাল সোমবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের তারিখ ঘোষণা করেন সিলেটের সন্ত্রাস বিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লব।
সোমবার দুপুরে এই আদালতে পলাতক ৩ আসামি ফয়সল আহমদ, হারুন অর রশিদ ও আবুল হোসেনের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। কারাবন্দি আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি আগেই সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল পলাতক ৩ আসামির পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন ও শুনানি শেষে ৩০ মার্চ রায়ের তারিখ ধার্য করা হয়।
এই মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদউল্লাহ শহিদুল ইসলাম শাহিন জানান, হত্যাকান্ডের প্রায় ৭ বছর পর দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে রায় ঘোষিত হতে যাচ্ছে। ৩০ মার্চ চাঞ্চল্যকর এই মামলার কাঙ্কিত রায় ঘোষিত হবে। এমাদউল্লাহ শাহিন ছাড়াও সোমবার রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনায় অংশ নেন সাবেক পিপি এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, এডভোকেট সমর বিজয় সী শেখর, সন্ত্রাস বিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি মুমিনুর রহমান ও এডভোকেট মোহাম্মদ মনির উদ্দিন। পলাতক আসামির পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট সাব্বির আহমদ ও ইমরান আহমদ।
জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১২ মে সিলেট নগরের সুবিদবাজারে নুরানি আবাসিক এলাকায় নিজ বাসার সামনে খুন হন বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ। পেশায় ব্যাংকার অনন্ত বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি ‘যুক্তি’ নামের বিজ্ঞান বিষয়ক একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। এ ছাড়া বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। হত্যাকান্ডের পর অনন্তের বড় ভাই রত্নেশ্বর দাশ বাদী হয়ে এয়ারপোর্ট থানায় অজ্ঞাতনামা ৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির কারণে অনন্তকে ‘উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী’ পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, মামলাটি পুলিশ থেকে অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) স্থানান্তরিত হয়। সিআইডির পরিদর্শক আরমান আলী তদন্ত করে ২০১৭ সালের ৯ মে অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেন। এতে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক ১০ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করে ৬ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
অভিযুক্তরা হচ্ছেন, সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার আবুল হোসেন, খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমদ, সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বিরেন্দ্রনগরের (বাগলী) মামুনুর রশীদ, কানাইঘাটের পূর্ব ফালজুর গ্রামের মান্নান ইয়াইয়া উরফে মান্নান রাহী উরফে এ বি মান্নান ইয়াইয়া উরফে ইবনে মঈন, কানাইঘাটের ফালজুর গ্রামের আবুল খায়ের রশীদ আহমদ এবং সিলেট নগরীর রিকাবীবাজার এলাকার সাফিউর রহমান ফারাবী উরফে ফারাবী সাফিউর রহমান। তাদের মধ্যে ফারাবী ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার দন্ডপ্রাপ্ত আসামি। অভিযুক্ত আসামিদের মধ্যে মান্নান রাহী আদালতে অনন্ত হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। ২০১৭ সালের ২ নভেম্বর মান্নান হঠাৎ অসুস্থ হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আসামিদের মধ্যে আবুল হোসেন, ফয়সাল আহমদ ও মামুনুর রশীদ পলাতক রয়েছেন।