ওমিক্রন রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন

7

করোনার ওমিক্রন ভাইরাস প্রতিদিনই বিশ্বব্যাপী আক্রান্তের রেকর্ড সৃষ্টি করে চলেছে। প্রতিবেশী ভারত সংক্রমণ ঠেকাতে র্কার্ফুসহ নানা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশেও শুরু হয়েছে ওমিক্রন নিয়ন্ত্রণের প্রস্তুতি। এ নিয়ে সোমবার অনুষ্ঠিত হয়েছে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক। এতে নেয়া হয়েছে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত। এসব সিদ্ধান্ত মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ নির্দেশনা আকারে জারি করবে। এরপরই কার্যকর করা হবে বিধিনিষেধ।
সিদ্ধান্তের মধ্যে আপাতত লকডাউন কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ না করে ১৫ দফা স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে পালনের কথা বলা হয়েছে। এ জন্য মাস্কের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হবে। মাস্ক ছাড়া চলাফেরা করা যাবে না। মাস্ক ছাড়া ঘরের বাইরে বের হলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে গুনতে হবে দণ্ড ও জরিমানা। একই সঙ্গে হোটেল-রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে টিকার সনদ দেখানো বাধ্যতামূলক। সামাজিক অনুষ্ঠানে লোকসমাগম সীমিত করা, সীমিত পরিসরে পর্যটন কেন্দ্রগুলো চালু রাখা, গণপরিবহনে যাত্রী অর্ধেক কমানো, রাত ৮টার পর দোকানপাট বন্ধ রাখা, বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের ব্যাপারে কোয়ারেনটাইনসহ কঠোর সতর্কতা অবলম্বন, করোনা রোগীদের জিনম সিকোয়েন্সিং করা ইত্যাদি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে ওমিক্রন ভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়েছে। বেশ ক’জন রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে ইতোমধ্যে। প্রতিদিনই বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। আগামী মার্চ মাস নাগাদ আক্রান্তের সংখ্যা ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে। বিশে^র বিভিন্ন দেশে ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়ছে দ্রুত গতিতে। প্রতিদিন ভাঙছে আগের দিনের রেকর্ড। বাংলাদেশও এর বাইরে থাকবে এমন চিন্তা করার অবকাশ নেই। তবে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মানতে পারলে পরিস্থিতি সহনীয় হতে পারে।
আগের অভিজ্ঞতায় সরকারী সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবসম্মত। একই সঙ্গে বলা যায়, ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতাও কম হয়নি। বিশেষ করে ডেল্টা সংক্রমণের সময় স্বাস্থ্য খাতে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে অনেক রোগীকে। সেক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্ত বা প্রস্তুতির পাশাপাশি মানুষকেও সচেতন হতে হবে। সরকার কি সিদ্ধান্ত নিল সেদিকে তাকিয়ে না থেকে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে নিজেকেই। বাইরে বের হলে মাস্ক পরতে হবে অবশ্যই। যথাসম্ভব শারীরিক দূরত্ব বজায়ে রাখা, সম্ভব হলে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট পরিহার করা, সামাজিক অনুষ্ঠান সীমিত করা এবং অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। বিষয়গুলো মাথায় রেখে সতর্কতা অবলম্বন করতে পারলে ওমিক্রনের ভায়বহতা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব হতে পারে।