জনগণের সেবক হতে হবে

6

দেশের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা সাধারণ মানুষের কল্যাণ কামনায় নিজেদের দাফতরিক দায়িত্ব পালন করে থাকেন। প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পেতে গেলে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মেধা এবং মনন যাচাইয়ে যোগ্যতম বিবেচিত হতে হয়। সঙ্গত কারণেই জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানরা দায়িত্বভার নিয়ে কর্মজগতকে অবারিত করলে সবার আগে সামনে এসে দাঁড়ায় দেশের সাধারণ জনগণ। জনসেবায় নিয়োজিত থেকে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কর্তব্য সম্পাদন করতে হয় প্রশাসনকে। বিসিএস প্রশাসন একাডেমির ১১৯ ও ১২০তম আইন ও প্রশাসন প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের সেবক হয়ে দেশ ও জাতির স্বার্থে নিজের কর্মযোগকে উৎসর্গ করাই নবীন কর্মকর্তা ও আইনজীবীদের লক্ষ্য হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে সংশ্লিষ্টদের সেবা প্রদান যেমন জরুরী একইভাবে প্রশাসনকেও দুর্নীতি ও সঙ্কটময় অবস্থা থেকে দূরে রাখাও আবশ্যিক দায়বদ্ধতা।’
দেশ গড়ার নতুন যাত্রাপথে মানুষের আশা-আকাক্সক্ষা আমলে নিয়ে স্বপ্ন বাস্তবায়নে নতুন কর্মকর্তাদের এগিয়ে যেতে হবে। স্বপ্নটা শুধু নিজেকে সমৃদ্ধ করার জন্য নয়। দেশ ও জাতির উন্নয়ন অভিগামিতায় সম্পৃক্ত হয়ে নিরলস কর্মসাধনায় নিবিষ্ট হয়ে রাষ্ট্রের স্বপ্ন পূরণ করতে হবে। সততা, ন্যায়পরায়নতা, আদর্শ, নিষ্ঠা, দেশ প্রেমের চেতনায় তাদের শাণিত হওয়া সময়ের দাবি। প্রধানমন্ত্রীর উদাত্ত আহ্বান, বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে যেন না কাঁদে। ন্যায়বিচার সাধারণ মানুষের দ্বারে পৌঁছে দেয়া, দেশ ও মানুষের প্রতি সচেতন দায়বদ্ধতা তাদের দায়িত্ব। প্রধানমন্ত্রী সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেশাগত জীবন আরও গৌরবময় করতে নতুন এক সম্মান প্রদানেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ‘শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রধান নীতিমালা ২০১৭’ নামে আকর্ষণীয় এই সম্মাননাটি দেশের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেশায় আরও নিবেদিত এবং নিষ্ঠাবান হতে অনেক বেশি উৎসাহ যোগাবে। কয়েকটি সূচককে প্রাধান্য দিয়ে সংশ্লিষ্টদের মান যাচাই করা হবে। পেশাগত জ্ঞান ও দক্ষতা, নীতিনিষ্ঠতা, আদর্শবান, কর্তব্যপরায়ন, শৃঙ্খলাবোধ, দায়বদ্ধতা, অধঃস্তনদের প্রতি সহমর্মিতা, ন্যায়সঙ্গত আচরণ, দুর্নীতিমুক্ত, ঘুষে চরম অনীহা সব মিলিয়ে ১০০ নম্বরের মান যাচাইপর্বে উত্তীর্ণরা এমন অনন্য পুরস্কারে ভূষিত হবেন। এমন পুরস্কার নিশ্চিতভাবে কর্মকর্তাদের ভাল কাজে উৎসাহ যোগাবে।
প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করা নবীন বিসিএস কর্মকর্তাদের অর্জিত জ্ঞান সর্বসাধারণের জীবনমান সমৃদ্ধিতে যেন যথাযথভাবে কাজে লাগানো যায় সেদিকেও বিশেষ লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন বলে প্রধানমন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করেন। নবীন কর্মকর্তাদের পেশাগত জগৎ এবং নিষ্ঠাবান জীবন যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে জনগণের সেবায় উন্মুক্ত আর অবারিত হয়। তার জন্য সরকার ঘোষিত পুরস্কার ছাড়াও নিজেদের সফল করার আনন্দ আর তৃপ্তিও কম নয়।