গোলাপগঞ্জে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত দুই জনের মৃত্যু

57

গোলাপগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
গোলাপগঞ্জে পূর্ব শত্র“তার জেরে দুটি হামলার ঘটনায় আবুল খায়ের (৩২) ও তুহিন আহমদ (৪৫) নামে দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। একটি উপজেলার লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নের কঠোয়ালপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামে ঘটে। নিহত আবুল খায়ের ঐ এলাকার মৃত তয়াহিদ আলীর পুত্র। অপর ঘটনা ঢাকাদক্ষিণে ঘটে। নিহত খায়ের চার ভাই চার বোবের মধ্যে ২য় ছিলেন। এ ঘটনায় গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় ১০জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। জানা যায়, প্রায় মাসখানেক পূর্বে একই এলাকার মৃত মানিক আলীর পুত্র, মৃত আব্দুল সত্তারের পুত্র, মৃত মন্দি আলীর পুত্র, মৃত ইছমেদ আলীর পুত্র ও মৃত কুটন আলীর পুত্র গংদের সাথে আবুল খায়েরের ভাইদের কথা কাটাকাটি হয়। পরে স্থানীয় মুরব্বিদের উদ্যোগে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নিলেও তা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ১০ জুন রাত সাড়ে ১২টার দিকে আবুল খায়েরকে নিজ বাড়ীতে ফেরার পথে প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা চালিয়ে গুরুতর জখম ও তার চাচা মন্নান আহমদ (ভুট্টো)’কে আহত করেন। এসময় আবুল খায়ের মাথায় দায়ের কূপ ও শরীলের বিভিন্ন স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। ১৭ জুন বিকেল সাড়ে ৫ টায় আবুল খায়ের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এ ঘটনায় আবুল খায়েরের বড় ভাই মিছবাহ উদ্দিন বাদী হয়ে ১০জনকে আসামী করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ১০, তাং-১৪-০৬-১৮। মামলা আাসামীরা হল- কতোয়ালপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার মৃত মানিক আলীর পুত্র লায়েক আহমদ(২৫), সায়েক আহমদ (২৭) ও ফখর”ল ইসলাম (৩০), একই এলাকার মৃত আব্দুল সত্তারের পুত্র ফখর”ল ইসলাম (৩৫), গিয়াস উদ্দিন (২৮), মৃত মন্দি মিয়ার পুত্র ফিরোজ আহমদ (৩৬), কুটন আহমদ (৪০), মৃত ইছমপদ আলীর পুত্র জয়নাল আহমদ(৩৭), র”বেল আহমদ (২২)। কুটন আলীর পুত্র আজমল আলী (২৮)। আসামীরা সবাই নিকটাত্মীয়। এব্যাপারে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ওসি একেএম ফজলুল শিবলীর সাথে আলাপ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন খুনিদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। পুলিশ তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
অপরদিকে গোলাপগঞ্জের ঢাকাদক্ষিণে জমিসংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জের ধরে হামলায় আহত ব্যক্তির রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। নিহত ব্যক্তি উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউপির রায়গড় গ্রামের মৃত তয়াহিদ আলীর পুত্র তুহিন আহমদ (৪৫)। নিহত তুহিনের ভাই জানান, তাদের পরিবারের সাথে একই গ্রামের মৃত ময়না মিয়ার পুত্র জাহেদুর রহমান, খালেদুর রহমানদের সাথে দীর্ঘদিন থেকে জমি সংক্রান্ত মামলা মোকদ্দমা চলে আসছিল। নিহত তুহিন ও তার ভাইয়েরা প্রতিপক্ষ জাহেদুর রহমান, খালেদুর রহমান গংদের ফৌজধারী দায়ের করা মামলায় ওয়ারেন্টকৃত আসামী হিসাবে পলাতক ছিলেন। কয়েকদিন পূর্বে বিরোধীপক্ষ প্রাণনাশের হুমকি দিলে তুিহনের পরিবার জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করে। তুহিনের পরিবার সূত্রে আরো জানা যায়, গত শুক্রবার (১৫ জুন) রাত প্রায় ৮টায় বাড়ি থেকে বের হয়ে যাওয়ার পথে ঢাকাদক্ষিণ-সুনামপুর সড়কের রায়গড় কালাই মিয়ার ডাউন নামক স্থানে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা জাহেদুর রহমান ও খালেদুর রহমান তাদের সঙ্গীদের নিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তুহিনের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে তুহিন মারাত্মক আহত হলে পুলিশের ভয়ে তার বড় বোনের বাড়িতে আত্মগোপনে থেকে চিকিৎসা নেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সোমবার দুপুরে তুহিন মৃত্যুর ঢলে পড়েন। এ ঘটনার খবর পেয়ে তুহিনের বোনের বাড়ি লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নের নিজ ঢাকাদক্ষিণস্থ গ্রামে যান গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম ফজলুল হক শিবলী। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা মৃদুল চন্দ্র ভৌমিক জানান, তদন্তের স্বার্থে আপাতত কিছু বলা যাচ্ছে না।