চাকরির ক্ষেত্রে সুসংবাদ

7

সরকারী চাকরি প্রার্থীদের জন্য সুসংবাদ মিলেছে অবশেষে। দেশে বিদ্যমান করোনা মহামারীজনিত কারণে প্রায় সব রকম নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রায় দু’বছর ধরে বন্ধ থাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারী চাকরিতে প্রবেশের জন্য বয়সের ক্ষেত্রে ২১ মাসের ছাড় দিয়েছে সরকার। অর্থাৎ, ২০২০ সালের ২৫ মার্চ যাদের বয়স ছিল ৩০ বছর তারা চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জারিকৃত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আবেদনের যোগ্য বিবেচিত হবেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাগুলোকে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকাশিতব্য সকল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীদের সর্বোচ্চ বয়স সীমার ক্ষেত্রে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বিষয়টি উল্লেখ করার জন্য। এর ফলে চাকরিপ্রার্থী অগণিত শিক্ষিত বেকারের দীর্ঘ দিনের দাবির পূরণ হলো। উল্লেখ্য, বর্তমানে সরকারী চাকরিতে প্রবেশের বয়স সীমা ৩০ বছর। মুক্তিযোদ্ধা, চিকিৎসক ও বিশেষ কোটার ক্ষেত্রে এটি ৩২ বছর। সরকারী চাকরি ছাড়াও অন্যান্য আধা সরকারী, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতেও অনুসরণ করা হয় এই নিয়ম। অতঃপর বয়সীসীমা শিথিলের বিষয়টি সকল বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও অনুসরণ করা হবে বলেই প্রত্যাশা।
করোনায় সর্বাধিক বিপর্যস্ত ও বেহাল হয়েছে চাকরির বাজার। সরকারী-বেসরকারী প্রায় সব নিয়োগ বন্ধ রয়েছে দুবছর ধরে। সরকারী কর্মকমিশন পিএসসির মাধ্যমে প্রতি বছর বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে সরকারী চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ থাকলেও সেখানেও লেগেছে বিসিএস জট। অন্যদিকে সরকারী-বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ থাকায় তরুণ শিক্ষার্থীরাও পাস করে প্রবেশ করতে পারছেন না চাকরির বাজারে। সরকারী চাকরিতে প্রায় সাড়ে তিন লাখ পদ শূন্য রয়েছে। বাস্তবে প্রত্যেকের বয়স বাড়ছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএসের মতে, দেশে এসএসসি থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারীদের এক-তৃতীয়াংশ বর্তমানে বেকার। প্রতি বছর চাকরির বাজারে প্রবেশ করেন ২৬ লাখ তরুণ। তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ২০ লাখ তরুণের কর্মসংস্থান হয়, যার মধ্যে মাত্র ৪ শতাংশ সরকারী চাকরি। বাকি ৯৬ শতাংশ নির্ভর করেন বেসরকারী সংস্থারগুলোর ওপর। বর্তমানে সেখানেও নিয়োগ প্রায় বন্ধ। ফলে পড়াশোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি চাকরি না পেয়ে হতাশায় নিমজ্জিত হচ্ছেন তরুণ সমাজ। বাড়ছে বেকারত্ব। আপাতত সঙ্কট নিরসনে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ২১ মাস বাড়িয়ে ৩২ করার বিষয়টি বাস্তবায়িত হলো। এর পাশাপাশি সীমিত পরিসরে হলেও বেকার ভাতা, যুব ভাতা চালুর কথাও ভাবা যেতে পারে।