করোনার নৃশংস ছোবলে সারাদেশ বিপর্যস্ত। প্রাণঘাতী এই রোগটির জরুরী সেবা যেমন প্রাসঙ্গিক, পাশাপাশি বিধিসম্মত চিকিৎসাসামগ্রীর চাহিদাও অনেক বেশি। বাংলাদেশ এখন দুর্বিষহ সঙ্কটকাল অতিক্রম করে যাচ্ছে। শনাক্ত এবং মরণাপন্ন রোগীর সংখ্যা উত্তরোত্তর বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা সামগ্রীর চরম সঙ্কট দৃশ্যমান হতে সময় লাগছে না। রাজধানীকেন্দ্রিক করোনা এখন বহুল সংক্রমণের বিপন্নতা নিয়ে সারাদেশ মাতিয়ে বেড়াচ্ছে। মানসম্মত ও উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি সঙ্গত কারণেই ঢাকা মহানগরীতে যেভাবে সরবরাহ করা গেছে, সারাদেশে তেমনটি হওয়ার সুযোগ নেই বললেই চলে। ফলে বিভিন্ন বিভাগীয় শহর ও গ্রামাঞ্চল থেকে আক্রান্ত রোগীরা রাজধানীতে আসতে এক প্রকার বাধ্যই হচ্ছে অপেক্ষাকৃত ভাল চিকিৎসার জন্য। এরই নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ায় ঢাকায়ও জরুরী চিকিৎসাসামগ্রীর অপ্রতুলতা উঠে আসতে সময় লাগছে না। বিশেষ করে অক্সিজেন এবং আইসিইউর ঘাটতি চরম আকার ধারণ করেছে। মার্চ থেকে নতুন করে বিস্তার লাভ করা করোনার দুর্ভোগে চিকিৎসা পদ্ধতির যে বেহাল অবস্থা, তাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হিমশিম খেতে হয়। এমন সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় ভারত থেকে অক্সিজেন এক্সপ্রেসের বাংলাদেশে আগাম এক শুভ সংবাদ অবশ্যই।
গত কয়েক দিনে ট্রেনে ভারত থেকে অক্সিজেন এসে পৌঁছেছে। আমদানি করা ৪শ’ টন অক্সিজেন ইতোমধ্যে খালাসও করা হয়েছে। কঠিন দুঃসময়ে পারস্পরিক সমঝোতার যে সেতুবন্ধ, তাও নতুন করে দুই দেশকে অভিন্ন বন্ধনে এক করে দিল। তারও আগে আমরা ফেব্রুয়ারি থেকে প্রথম যে প্রতিষেধক টিকা এ্যাস্ট্রাজেনেকা প্রয়োগ করতে সক্ষম হয়েছিলাম, সেটাও ছিল ভারতের বন্ধুত্বের পরম নিদর্শন। তবে টিকা সরবরাহ মাঝখানে বন্ধ হয়ে যায় ভারতে করোনা সংক্রমণ অত্যধিক বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে এক কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দান ছাড়াও প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারকে সাহায্য সহযোগিতা দেয়া সে সময়ের ভারত সরকারের এক অবিস্মরণীয় কীর্তি। তেমন সম্পর্কের বন্ধন আজ অবধি অটুট আছে। ভবিষ্যতে তা আরও ব্যাপক কর্মযোগের মধ্য দিয়ে দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হবে।