এবার সুনামগঞ্জে ফসল ডুবি হলে মন্ত্রী, এমপি, পাউবো ও জেলা প্রশাসনকে নিতে হবে

20

একে কুদরত পাশা সুনামগঞ্জ থেকে :
হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সুনামগঞ্জে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন হাওর বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি। রবিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় শহরে ট্রাফিক পয়েন্টে ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। একযোগে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অনুরূপ কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির কথা তুলে ধরে বলেন, হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধে অনিয়ম দুর্নীতি কারণে সুনামগঞ্জে ফসল ডুবি হলে এর দায় আমলা, মন্ত্রী, এমপি, পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রশাসন সবাইকে নিতে হবে। এ বিষয়ে কোনও ছাড় দেয়া হবে না। হাওরের একমাত্র ফসল তলিয়ে গেলে কৃষকরা না খেয়ে মরবে। এটি মেনে নেয়া যাবে না। হাওরের বাঁধে কাজে জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন হতাশা ব্যক্ত করেছেন তবুও বাঁধ নির্মাণের দায়িত্বরতা তার কোন তোয়াক্কা করছেন না পিআইসিকে কলুষিত করতে তারা এমন অনিয়মে লিপ্ত হয়েছেন ২০১৭ সালে পুনরাবৃত্তি হলে কঠোর আন্দোলন হবে এবং দায়ীদের আইনের মাধ্যমে তার বিচার করা হবে।
পিআইসি মাধ্যমে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণকে ব্যর্থ করতে একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে জানিয়ে তারা বলেন, পিআইসি পদ্ধতিকে বিতর্কিত করতে পারলে লুটেরা গোষ্ঠী আবারও ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে লুটপাট করতে পারবে। তাই অশুভ চক্র পিআইসির বিরুদ্ধে কাজ করছে। গতবারও বাঁধের কাজ হয়েছে কিন্তু এমনভাবে গাফিলতি অনিয়ম লুটপাট হয়নি। এ বছর যা হচ্ছে তা সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনও কোনো কোনো হাওরে বাঁধের কাজ শুরু হয়নি।
হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সদস্যরা গত এক মাসে জেলার দুই শতাধিক বাঁধ পরিদর্শন করেছে জানিয়ে বক্তারা বলেন, আমরা দেখেছি কোনো বাঁধেই সঠিকভাবে কাজ হচ্ছে না। সারা জেলায় আজ পর্যন্ত ২০ ভাগ কাজ হয়েছে। বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ হতে মাত্র ১২ দিন সময় আছে। এ সময়ের মধ্যে বাঁধ নির্মাণ করা সম্ভব হবে না। এখনও অনেক হাওরের বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়নি। হাওরের ঝুঁকিপূর্ণ ক্লোজারগুলো বন্ধ করা হয়নি। অপ্রয়োজনীয় বাঁধ দিয়ে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করা হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আগাম বন্যায় সুনামগঞ্জের হাওরের বোরো ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
হাওর আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালেহীন চৌধুরী শুভ’র পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, হাওর বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা নারী নেত্রী শীলা রায়, রমেন্দ্র কুমার দে মিন্টু, কার্যকরী সহ- সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নির্মল ভট্টাচার্য্য, কুদরত পাশা, হাওর বাঁচাও জেলা কমিটির আহবায়ক ও লেখক সুখেন্দু সেন, সদর উপজেলা কমিটির সাাধারণ সম্পাদক শহীদ নূর আহমেদ, সাবেক পৌর কাউন্সিলর সঞ্চিতা চৌধুরী, হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতা আনোয়ারুল হক, মহিলা পরিষদ নেত্রী শিল্পী বেগম, শিরীন আক্তার, হাওর বাঁচাও আন্দোলনের মোল্লাপাড়া ইউপি’র আহবায়ক আল আমিন, ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান হোসাইন, জালাল আহমদ, জেলা জাসদ যুব জুটের সভাপতি মখলিস আলী প্রমুখ।