জেড.এম. শামসুল :
আজ ৪ ফেব্র“য়ারি ১৯৫২ সালের এই দিনে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটির ডাকে ঢাকার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র ধর্মঘট পালিত হয়। এ দিন ঢাকা শহরে মিছিল মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলে ছাত্র জনতার শ্লোগান ছিল “রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই” “আরবী হরফে বাংলা লেখা চলবে না” এসব খবর দেশময় ছড়িয়ে পড়ে। বাঙালির মধ্যে বাংলাভাষা প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম তীব্রতর হতে থাকে। বাংলাভাষা আন্দোলন যেভাবে গড়ে উঠেছিল তা একদিনে নয়। ১৯৪৮ সালে এই দিনে পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠী সশস্ত্র বাহিনীর প্রথম নিয়োগ পরীক্ষার পদক্ষেপ নেয়। এতে শুধু উর্দু ও ইংরেজী ভাষায় পরীক্ষাগুলো নেয়ার চেষ্টা চালায়। তখন রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ সহ বাঙালি জাতি তীব্র প্রতিবাদ জানায়। দেশ বিভাগের পর পরই ১৯৪৮ সালের ৮ এপ্রিল থেকে ধাপে ধাপে ভাষা আন্দোলন এগুতে থাকে আর বাঙালি জাতিকে মাতৃভাষা থেকে বঞ্চিত করতে পাকিস্তানী সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয় যাহা তৎকালীন শোষক গোষ্ঠী বাস্তবায়ন করতে না পারলেও অনেক রক্ত দিতে হয়েছে বাঙালি জাতিকে।
১৯৪৮ সালের ৮ এপ্রিল বিধান সভার মন্ত্রী হাবিবুল্লাহ বাংলা ভাষায় আরবী হরফ প্রবর্তনের সুপারিশ করেন। এ সুপারিশের প্রতিবাদে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ এ প্রস্তাবের প্রতিবাদে এক সভায় মিলিত হয়ে ১৪ এপ্রিল থেকে আন্দোলন অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত দেন। ১৫ এপ্রিল রাষ্ট্রভাষা পরিষদের সাব কমিটি গঠন করা হয়। এ সাব কমিটির মাধ্যমে আন্দোলন চলতে থাকে। ২৪ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব বঙ্গ অধ্যাপক সম্মেলনে কাজী মোতাহার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সর্বস্তরে বাংলাভাষা প্রবর্তনের দাবী জানিয়ে একটি প্রস্তাব করা হয়। ২৯ এপ্রিল রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সাব কমিটির নেতৃবৃন্দ অব্যাহত আন্দোলনে আটক ছাত্র নেতৃবৃন্দের মুুক্তির জন্যে পূর্ব বঙ্গের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিম উদ্দিনের সাথে সাক্ষাৎ করেন ও গ্রেফতারকৃত ছাত্রদের মুক্তি দাবি করেন এবং ১৫ মার্চের চুক্তিপত্রের সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানান। এ দিন থেকে বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার শপথ গ্রহণ করে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ।