গোয়াইনঘাট সড়কের সালুটিকর বাজারে যানজট, জনভোগান্তি চরমে

11

কাজিরবাজার ডেস্ক :
সিলেট শহর থেকে সীমান্ত জনপদ গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরে যোগাযোগের একমাত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হচ্ছে সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়ক। সালুটিকর থেকে গোয়াইনঘাট পর্যন্ত সড়কটির দৈর্ঘ্য ২৪ কিলোমিটার। পুরো সড়কটিই এখন গভীর গর্ত সহ খনা খন্দে ভরা। এ সড়ক দিয়ে গোয়াইনঘাট-কোম্পানীগঞ্জ সহ উত্তর সিলেটের প্রায় চার লক্ষাধিক মানুষ চলাফেরা করেন। এছাড়া দেশের অন্যতম নান্দনিক সৌন্দর্যের পর্যটন ভূমি ও বৃহৎ পাথর কোয়ারী বিছনাকান্দি গোয়াইনঘাটে অবস্থিত হওয়ায় এ সড়কটি হয়ে উঠেছে অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক। প্রধান এই সড়কের স্থানীয় সালুটিকর বাজারে যাত্রীর নাগরিক সুবিধা আর স্বাছন্দ্য নিয়ে বিস্তর অভিযোগ। স্থানীয় সালুটিকর বাজারের প্রবেশ মুখের ব্রীজে যানজট সমস্যা শীর্ষে।
কেউ সহজে এই সড়ক দিয়ে যেতে চায় না। তবু উপায় নেই। এই পথেই সবার যাতায়াত। সড়কটিতে যানজটে আটকা পড়লেই ২০-৩০ মিনিট সময় নষ্ট হয়। কখনো ৩০-৪০ মিনিট। বেশির ভাগ সময় যাত্রী তোলা কিংবা নামানোর কাজ হচ্ছে মূল রাস্তা। মাঝেমধ্যে আবার বাজারের ভিতরে রাস্তা দখল করে যানবাহন দাঁড় করিয়ে রাখা হচ্ছে দীর্ঘক্ষণ। সালুটিকরবাসীর কাছে দিন দিন অসহনীয় দুর্ভোগের কারণ হয়ে উঠছে পরিবহন ব্যবস্থার অপ্রতুলতা।
মাটিবাহী-ট্রাক, ইমা-লেগুনা ও সিএনজি পরিবহন নিয়ে এমনিতেই ভোগান্তির শেষ নেই। ভোগান্তির তালিকা দিন দিন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। পরিস্থিতি এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, এখানকার পরিবহন ব্যবস্থা রাস্তার সার্বিক পরিস্থিতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে। যাচ্ছেতাইভাবে সবকিছু চলাটাই যেন অনেকটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। নাগরিক মানুষ সবচেয়ে অসহায় বোধ করে, পরিবহনের জন্য অপেক্ষার সময়।কোথাও যাওয়ার জন্য যাত্রীদের রাস্তায় নেমেই এক বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। গন্তব্যে যাওয়ার জন্য তাড়া আছে কিন্তু যানজটের তীব্র আকার অফিসে যাওয়া, বিয়ে-দাওয়াত, পার্টিতে যাওয়া, এমনকি রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া- প্রয়োজনীয় কোনো গন্তব্যেই যে সময় মতো পৌঁছানো যাবে তার নিশ্চয়তা নেই। এ অবস্থায় মানুষজনের ভোগান্তির কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। যানজটের কারণে তো স্থবির হয়ে থাকে অধিকাংশ সময়।
তীব্র যানজটের ফলে নষ্ট হচ্ছে কর্মঘণ্টা বাড়ছে রোগব্যাধি। এছাড়া যানজট একটি স্থায়ী সমস্যা হিসেবে দেখা দেয়ায় যানজট সমস্যা সমাধানে বড় ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে এগোনো ছাড়া কোনো উপায় নেই। যানজট সমস্যার সমাধান না হওয়ায় প্রতিদিনই অনেক কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। পিছিয়ে যাচ্ছে উন্নয়ন। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে অগ্রগতি। শুধু তাই নয়, শব্দ ও বায়ুদূষণে নানা সংক্রামক ব্যাধিতেও আক্রান্ত হচ্ছে বিপুলসংখ্যক মানুষ। যানজটে এলাকাবাসীর প্রতিদিনের জীবনযাত্রাও মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।বাজার ব্যবসায়ীদের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণও বাড়ছে দিন দিন। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চায় এলাকাবাসী। দিন দিন জনসংখ্যা বেড়েই চলছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গাড়ি-ঘোড়া। কিন্তু সে তুলনায় রাস্তাঘাট বাড়ছে না।
এ ব্যাপারে নন্দিরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এস, কামরুল হাসান আমিরুল বলেন, সালুটিকর বাজারে যানজট দিনদিন প্রকট হচ্ছে, এ থেকে পরিত্রান পেতে দরকার সুপরিকল্পনা। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রীর অনুদানে একটি বাইপাস রাস্তার পরিকল্পনা চলছে, দরকার একটি ব্রীজের, যা টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন আছে। বাইপাস রাস্তাটি হয়ে গেলে সালুটিকর বাজার যানজট সমস্যা মুক্ত ও যাত্রী, জনগণ এবং ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগ নিরসন হবে ইনশাল্লাহ।
সালুটিকর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর শফিকুল ইসলাম খান বলেন, সিএনজি ও লেগুনার স্ট্যান্ড যদি বাজারের বাইরে নেওয়া যায় তাহলে যানজটের তীব্র অবস্থা থেকে বাজারকে মুক্ত করা যাবে, এ ব্যাপারে আমি পদক্ষেপ নিচ্ছি। ইনশাআল্লাহ যানজট নিরসনের একটি সুরাহা হবে। সালুটিকর অটো রিস্কা সিএনজির স্টপিজের কর্মকর্তাবৃন্দের দাবি প্রবেশ দ্বারের ব্রীজের প্রশস্ত কম হওয়ায় যানজটের সৃষ্টি হয়, এরপর ইমা-লেগুনার স্ট্যান্ড যদি বাজারের বাইরে চলে আসে, তাদেরও স্ট্যান্ড নিয়ে বাজারের বাইরে চলে আসতে কোন অসুবিধা নেই।