শাবি থেকে সংবাদদাতা
বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং পুরনো ‘কম্পিউটেশনাল বায়োলজি ও বায়োইনফরমেটিকস’ বিষয়ক সংস্থা “ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কম্পিউটেশনাল বায়োলজি” (আইএসসিবি) এর বার্ষিক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করার জন্য আমন্ত্রণ পেয়েছেন বাংলাদেশের তরুণ বিজ্ঞানী সৈয়দ মুক্তাদির আল সিয়াম। আগামী ২৩-২৭ জুলাই ফ্রান্সের লিওন শহরে ‘ইনটেলিজেন্ট সিস্টেমস্ ফর মলিকুলার বায়োলজি’ শিরোনামে সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে। আইএসসিবি’র ওয়েবসাইট থেকে শনিবার (১০ জুন) এই তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, ইনটেলিজেন্ট সিস্টেমস্ ফর মলিকুলার বায়োলজি সম্মেলনে প্রতিবছর বিশ্বের দেড় হাজার বিজ্ঞানী এবং গবেষক একত্র হন। এর আগে শিক্ষার্থী ও তরুণ গবেষকদের নিয়ে আইএসসিবি স্টুডেন্ট কাউন্সিল সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ বছরের সম্মেলনের ১৯তম আসরে সভাপতিত্ব করবেন সৈয়দ মুক্তাদির আল সিয়াম। তিনি বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর)-এর তরুণ বিজ্ঞানী। তাঁর নেতৃত্বে গত ডিসেম্বরে এশিয়ায় প্রথমবারের মত তরুণ গবেষকদের নিয়ে ‘কম্পিউটেশনাল বায়োলজি’ বিষয়ক সম্মেলন আয়োজনে বাংলাদেশ অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করেছে। যার ফলশ্রæতিতে তিনি এই সম্মেলনে সভাপতিত্বের দায়িত্ব পান।
বিজ্ঞানী সিয়াম শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগ এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে একইসাথে দুটি স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যলয়ের (বাকৃবি) বায়োটেকনোলজি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন এবং এ সময়েই যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজে অবস্থিত ইউরোপিয়ান বায়োইনফরমেটিক্স ইন্সটিটিউটে থিসিস এবং শিক্ষানবিশ গবেষক হিসেবে কাজ করেন। পরবর্তীতে করোনা মহামারির সময়ে চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনে গবেষক হিসেবে যোগ দেন এবং নিজের গবেষণার পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে করোনা ভাইরাস সনাক্তকরণ, জিনোম সিকুয়েন্সিংসহ আরও গবেষণামূলক কাজ করেছেন।
সম্মেলনে সভাপতিত্বের প্রসঙ্গে সৈয়দ মুক্তাদির আল সিয়াম বলেন, ‘বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারা সবসময়ই আনন্দের এবং গৌরবের। আমি বিশ্বাস করি বিজ্ঞানের এই বিশেষায়িত শাখায় বাংলাদেশ একদিন নেতৃত্ব দিবে। মানবকল্যাণে আমার গবেষণা ও কর্ম চলমান রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বায়োইনফরমেটিক্স হলো বিজ্ঞানের আধুনিকতম একটি শাখা যেখানে কম্পিউটার প্রযুক্তি, গাণিতিক জ্ঞান, পরিসংখ্যান প্রভৃতি ব্যবহার করে জৈবিক উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হয়। ক্যান্সার, কোভিড-১৯ সহ নানা রোগের বৈশিষ্ট্য, প্রবলতা, সম্ভাব্য বিস্তার, চিকিৎসার পদ্ধতি আবিষ্কার, ভ্যাক্সিন ডিজাইন ইত্যাদি বায়োইনফরমেটিক্সের প্রত্যক্ষ অবদান। চিকিৎসা, কৃষিসহ জীববিজ্ঞানের প্রতিটি ক্ষেত্রই বায়োইনফরমেটিক্সের উপর নির্ভরশীল। সুতরাং এদিকে আমাদের গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।’