কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা আরো কার্যকর ভূমিকা রাখবেন।
তিনি বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হৃদয়ে সমুন্নত রেখে সরকারের রূপকল্প ২০২১ এবং অভিজ্ঞতায় রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে পুলিশ বাহিনীর সদস্যগণ আরো কার্যকর ভূমিকা রাখবেন। সেবা প্রত্যাশীদের সর্বোত্তম সহায়তা দিয়ে জনগণের আস্থা অর্জনে ব্রতী হবেন।’
প্রধানমন্ত্রী আজ শনিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)-এর ৪৬তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার দেয়া এক বাণীতে একথা বলেন। প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে তিনি এ ইউনিটের সকল সদস্যসহ বাংলাদেশ পুলিশের সকল সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশের সর্ববৃহৎ ইউনিট হিসেবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পেশাদারিত্ব, দক্ষতা ও আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে মহানগরবাসীর প্রত্যাশা অনুযায়ী নিরাপত্তা-নিশ্চিতকরণে নিরন্তর প্রচেষ্টাকে আমি সাধুবাদ জানাই। সাম্প্রতিক করোনা-মহামারির সময় পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্যগণ জনগণকে সেবা দিতে গিয়ে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। জাতির যে কোনো ক্রান্তিলগ্নে এ বাহিনীর আত্মোৎসর্গকারী দেশপ্রেমিক বীর পুলিশ সদস্যদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনে জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থনে জয়লাভের পর থেকে এখন পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে সরকারে থাকার ফলে আমরা পুলিশের আধুনিকায়নে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। আমরা বাংলাদেশ পুলিশকে একটি দক্ষ ও পেশাদার-বাহিনীতে উন্নীত করার লক্ষ্যে পুলিশের বাজেট ও জনবল ব্যাপক হারে বৃদ্ধি করেছি।’
‘গত ১২ বছরে পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোতে ১ হাজার ৫০১টি ক্যাডার পদসহ ৮২ হাজার ২৩১টি পদ সৃষ্টি করেছি। তাছাড়া, প্রয়োজনীয় জনবলে নারী পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি, উন্নত প্রযুক্তির সংযোজন, দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণ, বিশেষায়িত নতুন নতুন ইউনিট গঠন, সময়োপযোগী আধুনিক উপকরণ সরবরাহ করেছি। ফলে, পুলিশের কাজ বর্তমানে অনেক সহজ ও জনকল্যাণমুখী হয়েছে,’ বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদাত্ত আহ্বানে সাড়া দিয়ে পুলিশ বাহিনীর সদস্যগণ ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের ভয়াল রাতে পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধের সূচনা করেছিলেন। এর স্বীকৃতিস্বরূপ আওয়ামী লীগ সরকার ২০২১ সালে বাংলাদেশ পুলিশকে ‘স্বাধীনতা পদক’ এ ভূষিত করে।
জাতির পিতা স্বাধীনতার পরপরই দেশের পুলিশ বাহিনীকে জনগণের পুলিশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত পুলিশের সেবা বিস্তৃত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ৯ মে বাংলাদেশ পুলিশের প্রথম প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন এবং ভাষণ প্রদান করেন। তিনি নবীন পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘আপনাদের কর্মস্থল হয়তো অন্য জেলায়। কিন্তু আপনারা ভালো করে লক্ষ্য করে দেখবেন, সেখানেও হয়তো আপনার বাবার মতো চেহারার মানুষ আছে, আপনার মা-বোনের মতো চেহারার মহিলা আছে। আপনারা তাদের সেবক হবেন, তাদের শাসনকর্তা হবেন না।’
তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ৪৬তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।