বিদায়ী বছরে সিলেটে ২০ খুন

43

সিন্টু রঞ্জন চন্দ :
সিলেটে বিদায়ী (২০২০ সাল) বছরের ২০ জন খুন হয়েছেন। এর মধ্যে শিশু, কিশোর, গৃহবধূ ও বৃদ্ধ-বৃদ্ধা রয়েছেন। এছাড়া ২০২০ সালে ১২ মাসে সিলেটের সীমান্ত এলাকায় খাসিয়ার গুলিতে ৪ জন ও বন্দুক যুদ্ধে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হন। নগরী, শহরতলী ও সিলেট জেলায় বিভিন্ন স্থান থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ১৮টি লাশ উদ্ধার করেছে। আর ৫ জন আত্মহত্যা করেন ও বিভিন্ন অভিযোগে ৫ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ ডিসেম্বর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উৎমা সীমান্ত বন্ধ কোয়ারিতে গোপনে পাথর উত্তোলন করতে গিয়ে মর্মান্তিকভাবে এক শ্রমিক প্রাণ হারান। নিহত শ্রমিকের নাম কংশ বিশ্বাস (৪০)উপজেলার পূর্ব ইসলামপুরের জীবনপুর গ্রামের মৃত গোপাল বিশ্বাসের ছেলে।
গত ৫ ডিসেম্বর সকালে নগরীর আখালিয়া এলাকার একটি ময়লার স্তুপ থেকে একটি নবজাতক শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে শিশুটিকে ওইদি দুপুর ২টার দিকে মানিকপীর মাজার সংলগ্ন কবরস্থানে দাফন করা হয়।
বিদায়ী বছরে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ছিল রায়হান উদ্দিন আহদম (৩০) হত্যাকান্ড। গত ১১ অক্টোবর ভোর রাতে নগরীর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে পুলিশী নির্যাতনে নির্মমভাবে মারা যান রায়হান। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদি হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর আকবরসহ ৪ পুলিশকে বরখাস্ত ও ৩ জনকে প্রত্যাহার করা হয়। নিহত রায়হান উদ্দিনের দেহে ১১১ আঘাতের চিহ্ন উঠে এসেছে ফরেনসিক রিপোর্টে। এসব আঘাতের ৯৭টি লীলাফোল আঘাত ও ১৪টি ছিল জখমের চিহ্ন। আঘাতগুলো লাঠি দ্বারাই করা হয়েছে। আর অতিরিক্ত আঘাতের কারণে দেহের ভেতর রগ ফেটে গিয়ে রক্তক্ষরণে রায়হানের মৃত্যু হয়। এরপর মামলাটির তদন্তভার পিবিআই পাওয়ার পর পিবিআইর টিম ঘটনাস্থল বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি, নগরীর কাস্টঘর, নিহতের বাড়ি পরিদর্শন করে। সর্বপরি মরদেহ কবর থেকে তুলে পুনঃময়না তদন্ত করে। রায়হানের হত্যার ঘটনায় এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ জড়িতদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে জোরদার হয় আন্দোলন। প্রতিদিন সিলেট নগরীর বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ মানববন্ধন এবং রাস্তা অবরোধ করেতে থাকে বিক্ষুব্ধ জনতা। একপর্যায়ে আইন আইন-শৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ সকল সদস্যকে আইনের আওতায় নিয়ে আসে। বর্তমানে গ্রেফতারকৃতরা সিলেট কারাগারে রয়েছে।
পারিবারিক বিরোধের জের ধরেই রেহেনা বেগমকে (২২) হত্যা করেছেন তারই স্বামী নাজির উদ্দিন (২৫)। রেহেনাকে হত্যার পর নাজির পালিয়েছিলেন চট্টগ্রামে। ২৫ নভেম্বর সিলেটের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-২ সাইফুর রহমানের আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন নিহতের স্বামী নাজির। জবানবন্দি নেওয়া পর বিচারক নাজিরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। নিহত রেহেনা সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বাহাদুরপুর আমবাড়ি গ্রামের চেরাগ আলীর কন্যা। তার স্বামী নাজির একই উপজেলার মুন্তাজপুর গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের পুত্র। নাজির দক্ষিণ সুরমার লালারগাওয়ে জাহিদুর রহমানের বাড়িতে থেকে কৃষি-কাজ করতেন। ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে দক্ষিণ সুরমার লালারগাঁওয়ের একটি জলাশয় থেকে অজ্ঞাতপরিচয়ে রেহেনার মরদেহ উদ্ধার পুলিশ। রেহেনার পরনে ছিলো সাদা রঙের সালোয়ার-ছাপার কামিজ ও মেরুন রঙের বোরকা। পরিচয় শনাক্তের পর নিহতের মা মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিলেটের পুলিশ সুপার (এসপি) খালিদ উজ জামান বলেন, মামলাটির ছায়া-তদন্তে নেমে ২৩ নভেম্বর বিকেলে আসামিকে চট্টগ্রামের পাচলাইস থানাধীন মোহনা-২ এলাকার একটি ভবন থেকে গ্রেফতার করে। আসামির কাছ থেকে রেহেনার ব্যবহৃত মোবাইলফোনটিও জব্দ করা হয়। আসামি গ্রেফতারের পর মামলাটির পূর্ণ তদন্তভার নেয় পিবিআই। আদালতে নাজিরের জবানবন্দির বরাত দিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান বলেন, ৬/৭ বছর আগে নাজির ও রেহেনার বিয়ে হয়। এরমধ্যে ৩ বছর আগে তাদের ঘর আলো করে আসে একটি পুত্র সন্তান। ৭ মাস মাস আগে রেহেনা সৌদিআরবে গিয়েছিলেন। সেখানে থাকাবস্থায় টাকা পাঠাতেন তার বাবারবাড়িতে। টাকা পাঠানো নিয়ে নাজির ও রেহেনার মধ্যে মনোমালিন্য ছিলো। দেশে আসার পর রেহেনা স্বামীকে নিয়ে সংসার করতে অনিচ্ছা পোষণ করেন। এরপরও তাকে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করেন নাজিরের বাবা-মা। কিন্তু তাদের অপমান করে ফিরিয়ে দেন রেহেনা। এরপর যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও ব্যক্তিকে দিয়ে মোবাইলে স্বামীর সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন রেহেনা। ওই ব্যক্তি নাজিরকে বলেছিলেন, ‘তোর বউ এখন আমার কাছে। ’ এ নিয়ে ক্ষিপ্ত হতে থাকেন নাজির। বাবা-মায়ের অপমানের শোধ তার মধ্যে কাজ করে। তিনি বলেন, রেহেনা প্রায়ই সিলেট যাতায়াত করতেন। একপর্যায়ে রেহেনা ফোন দিয়ে টাকা লাগবে বলে স্বামীকে জানান। সে সুযোগ নেন নাজির। ঘটনার দিন গত ১৩ নভেম্বর স্বামীর কাছ থেকে টাকা নিতে সিলেটে আসেন রেহেনা। ওইদিন সন্ধ্যা ৬টায় নগরের হাসান মার্কেটের সামনে রাস্তার পাশের একটি রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়া করেন। এরপর রেহেনা টাকা চাইলে নাজির বলেন, টাকা নিতে লালারগাঁওয়ে যেতে হবে। নগরের দক্ষিণ সুরমা থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় লালারগাঁওয়ে যান। সেখানে রাস্তার পাশে নেমেই ওই ব্যক্তির সঙ্গে মোবাইলফোনে কথা বলছিলেন রেহেনা। এ সময় সঙ্গে থাকা ব্যাগ থেকে কাপড় বের করে স্ত্রীকে পানিতে ফেলে চাপা দিয়ে হত্যা করেন নাজির। এরপর তিনি চট্টগ্রামে পালিয়ে গিয়ে আত্মগোপনে থাকেন। সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গত ২৩ নভেম্বর সিলেট নগরীর পশ্চিম পীরমহল¬ায় পূর্ব বিরোধের জের ধরে খেলার ছলে লিটন মিয়া (১৪) নামে এক কিশোরকে আছাড় মেরে হত্যা করে দুর্বৃত্ত। সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই কিশোরের মৃত্যু হয়। নিহত লিটন মিয়া নগরের পশ্চিম পীরমহল¬া এলাকার বাসিন্দা শিরণ মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে এয়ারপোর্ট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
গত ২৩ নভেম্বর দুপুর ১টার দিকে নগরের উত্তর কাজিটুলা ৪/১মাহবুবুর রহমানের ভাড়া বাসায় সৈয়দা তামান্না (১৯) নামে এক নববধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পর বাসার দরজা বাইরে থেকে আটকে পালায় নিহতের স্বামী আল মামুন (২৮)। নিহত সৈয়দা তামান্না সিলেটের দক্ষিণ সুরমার বলদী এলাকার ফয়জুর রহমানের পুত্র। তার স্বামী অভিযুক্ত পলাতক আল মামুনের বাড়ি বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জে।
২২ নভেম্বর সন্ধ্যায় ওসমানীনগর উপজেলা আলীপুর এলাকা থেকে নাজমিন বেগম (২০) নামে এক তরুণীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। নাজমিন ওই এলাকার আব্দুল মুমিনের কন্যা। পুলিশ জানায়, দুপুর দেড়টার দিকে ওই তরুণীর বাড়ির একটি কক্ষের বেড়ার সঙ্গে ওড়না পেচানো লাশ দেখতে পেয়ে পরিবারের সদস্যরা থানায় খবর দেন। পরে সন্ধ্যার দিকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
এদিকে ২২ নভেম্বর দুপুরে জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের রায়গড় গ্রামে স্বামীর বেধড়ক মারধরে সুফিয়া বেগম (২৯) নামে এক গৃহবধূ নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী আব্দুল করিমকে (৪০) গ্রেফতার করে পুলিশ। নিহত সুফিয়া বেগম জকিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বিলের বন্দর গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের কন্যা। গ্রেফতারআব্দুল করিম জকিগঞ্জ পৌর এলাকার কলাছড়া গ্রামের মৃত রকিব আলীর পুত্র।
১৪ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে দক্ষিণ সুরমা থানার লালারগাঁওয়ে জলাশয় থেকে অজ্ঞাতপরিচয় (২০) এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তার পরনে সাদা সেলোয়ার, গায়ে প্রিন্টের কামিজ ও মেরুন রঙের বোরকা রয়েছে। দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন বলেন, ধারণা করা হচ্ছে দুর্বৃত্তরা ওই তরুণীকে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ ঢাকা-সিলেট মহসড়কের লালারগাঁওয়ে ৩০০/৪০০ গজ পশ্চিমে হাঁটু পানিতে ফেলে রেখে যায়। তবে এটা নিশ্চিত যে তাকে এখানে এনে হত্যা করা হয়েছে।
গত ৩১ অক্টোবর বেলা দেড়টার দিকে নগরীর আখালিয়া সুরমা আবাসিক এলাকার ৪ নং সড়কের ৪৩ নং চিকিৎসকের বাসা থেকে জান্নাত আক্তার লিনা (১৪) নামে গৃহকর্মীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত কিশোরী জান্নাত আক্তার লিনা (১৪) সিলেটের সীমান্তবর্তী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বতুমারা গ্রামের আবদুল মালিকের কন্যা। বাসার মালিক গাইনি চিকিৎসক জামিলা খাতুনের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতেন লিনা।
পুলিশ জানায়, ওই নারী চিকিৎসকের বাসায় প্রায় ৮ বছর ধরে গৃহকর্মীর কাজ করতো লিনা। শনিবার ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচানো মরদেহ দেখতে পান ঘরের কাজে নিয়োজিত অন্যরা। ডা. জামিলার মেয়েসহ বাসার অন্য কাজের লোকেরা মিলে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে মরদেহ নিচে নামান। ওই নারী চিকিৎসকের খবরে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ বেলা দেড়টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে। লিনার ভাই আল-আমিনের অভিযোগ, মারপিঠে তার বোনের মৃত্যু হয়েছে। এরপর আত্মহত্যার নাটক সাজোনো হয়েছে। তার বোনের গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলেও জানান তিনি। তার বোনের হত্যার বিচার দাবি করেছেন তিনি। কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম মিয়া মিঞা বলেন, প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি আত্মহত্যা মনে হলেও ময়না তদন্ত ছাড়া কিছু বলা যাচ্ছে না। কেননা কিশোরীর গলার নীচে দিকে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অবশ্য পুলিশের পক্ষ থেকে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিকেল ৫টায় ময়না তদন্তের পর লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
১৬ অক্টোবর বেলা ১২ টার দিকে সিলেটের সীমান্ত জনপদ কানাইঘাটে ২ নম্বর লক্ষী প্রসাদ (পশ্চিম) ইউনিয়নের সুরইঘাটের আগফৌদ পূর্ব (গাঙ্গপার) গ্রাম থেকে ফাতেমা বেগম নামে গৃহবধূর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। দাম্পত্য কলহের জের ধরে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, পারিবারিক কলহের জের ধরে ১৫ অক্টোবর রাতে ফাতেমা বেগমকে তার স্বামী মহরম আলী হত্যা করে পালিয়ে যান। সকালে ঘরের ভেতর গৃহবধূর রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেন এলাকাবাসী। এরপর দুপুরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
৮ অক্টোবর ভোরে জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার মুড়িয়া ইউনিয়নের কোনাগ্রামে বিদেশ পাঠানোর ইস্যুতে কথা কাটাকাটির জের ধরে ছোট ভাই তানভীরের (১৭) হাতে বড় ভাই কামরুল ইসলাম (২৫) খুন হয়েছেন। নিহত কামরুল ইসলাম ওই গ্রামের চান্দ আলীর পুত্র। স্থানীয় সূত্র জানায়, বিদেশ পাঠানোর জের ধরে ‘ঘাতক’ ছোট ভাই তানভীর (১৭) ৭ অক্টোবর রাত ৩টার দিকে বাড়ি ফিরে গিয়ে বড় ভাই কামরুলকে ঘুম থেকে তুলে তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু করে। একপর্যায়ে কামরুলকে দা দিয়ে কোপ দেয় তানভীর। এতে ঘটনাস্থলেই কামরুলের মৃত্যু হয়। হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করার পর তানভীর বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়।
২ সেপ্টেম্বর পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সিলেটে ছুরিকাঘাতে তানভীর আহমদ (১৭) নামে এক কিশোর খুন। তানভীর সদর উপজেলার ছালেপুর গ্রামের শফিক মিয়ার পুত্র। স্থানীয়রা জানায়, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে একই এলাকার আব্দুল গণির ছেলে ছাত্রলীগকর্মী নামধারী তৌহিদের নেতৃত্বে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তানভীরকে সড়কে একা পেয়ে মাথায় ও পিঠে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত করে। তার মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে সড়কে ফেলে রেখে গেলে স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। রাত ১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে নিহত কিশোরের স্বজনরা জানান, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
২৮ আগষ্ট দিনগত রাত ১১টার দিকে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় শফিক মিয়া (৩৮) নামে এক রিকশা চালকের লাশ উদ্ধার করেপুলিশ। উপজেলার বাসিয়া নদীর তীরবর্তী রাজনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ রাত ১২টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে। ২৯ আগষ্ট সকালে লাশ ময়নাতদন্তের সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ। নিহত শফিক মানিকগঞ্জ জেলার সিংরাই থানার রফিকনগর গ্রামের শাহজাহান মিয়ার পুত্র। তিনি বর্তমানে বিশ্বনাথ উপজেলা সদরের রাজনগর সড়কে নিয়ামত আলীর কলোনীতে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে আসছিলেন।
২৮ আগষ্ট বিকেলে সিলেট নগরীর ১০ নং ওয়ার্ডের কানিশাইল এলাকা সংলগ্ন সুরমা নদী থেকে সিলেটে আব্দুল ওয়াহিদ (৬০) নামে এক দলিল লেখকের লাশ উদ্ধার করে কতোয়ালি মডেল তানা পুলিশ। নিহত আব্দুল ওয়াহিদ সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার শ্রীরামপুর পশ্চিমপাড়ার মৃত মনির উদ্দিনের পুত্র। এ ঘটনায় নিহতের পিতা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
২৩ আগষ্ট সিলেট নগরীর মজুমদারি এলাকার ৮ নম্বর আবাসার চতুর্থ তলার একটি বাসা থেকে সানন্দা মলি¬ক (৩০) নামে ২ সন্তানের জননীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃত সানন্দা মলি¬ক মহানগর পুলিশের দক্ষিণ সুরমা থানার কনস্টেবল বাসুদেব মলি¬কের স্ত্রী। মহানগর পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম শাহাদাত হোসেন বলেন, ওই নারী মানসিক বিকারগ্রস্ত ছিলেন। বসত ঘরের ড্রইং রুমে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে তিনি আত্মহত্যা করেন। তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই।
১২ আগস্ট ছেলেদের জমাকৃত টাকা লুট করতেই খুন হন ফেঞ্চুগঞ্জের মোল¬াটিল¬া এলাকার বাসিন্দা জুলেখা বেগমকে (৪৫)। রাত ১১টায় ওই নারীর লাশ ফেঞ্চুগঞ্জের মোল¬াটিল¬া এলাকা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। খুনের আলামত বলতে ছিল লাশ উদ্ধারস্থলের পাশে তাজা রক্তের ছোপ। সেই আলামাতকে পুঁজি করে খুনির ঘরে পৌঁছায় পুলিশ। হত্যার পর মরদেহ পুতে ফেলা হয় বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরের একটি খোলা রিং ল্যাট্রিনে। আর এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে খুনিরা পেয়েছিল মাত্র ৪ হাজার ৮৪৮ টাকা। লুণ্ঠিত টাকার কিছু অংশও তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
১৩ আগষ্ট রাত সাড়ে ৮টার দিকে সিলেটে নর্থ ইষ্ট মেডিক্যালে কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা অবহেলায় এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। ফাতেহা বেগম (৩২) ওসমানীনগর উপজেলার নিজ মান্দারুকা গ্রামের সুমন আহমেদের স্ত্রী। জানা গেছে, অন্ত:সত্ত্বা ফাতেমা বেগমকে হাসপাতালে নর্থ ইষ্ট মেডিক্যালে কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন তার স্বজনরা। কিন্তু যথাসময়ে চিকিৎসা না পেয়ে তিনি মারা যান।
গত ১৩ আগষ্ট রাত সাড়ে ৮ দিকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার চান্দাই গ্রামে ভাতিজার লাথিতে আজমল আলী (৪৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগ উঠে। নিহত আজমল আলী ওই গ্রামের বাসিন্দা। তবে পরে জানা যায় তিনি জ্ঞান হারিয়ে মৃত্যুবরণ করেন
৯ আগষ্ট বিকেলে সিলেট নগরী র হাতিমবাগ ১ নম্বর রোডের ৪ নম্বর বাসায় নিজ শয়ন কক্ষে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে রশি দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় সিলেটে মৌমিতা দাস পপি (২৬) নামে কলেজ ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত মৌমিতা দাস পপি এমসি কলেজের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার কায়স্থঘাট গ্রামের রাজকুমার দাসের কন্যা। তারা সপরিবারে হাতিমবাগের ওই বাসায় বসবাস করতেন। নিহতের স্বজনদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, মৌমিতা প্যারালাইসেস রোগে আক্রান্ত ছিলেন। হতাশা থেকে তিনি আত্মহত্যা করেন।
২ আগষ্ট দিনগত রাত ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের অজোগ্রামে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আবুল মুন্না (৩০) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। নিহত মুন্না উপজেলার গঙ্গারজল ইউনিয়নের খাদিমান গ্রামের ইয়াছিন আলীর পুত্র।
৩১ জুলাই সকালে সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজার করনসী রোডে নিজ বাসা থেকে রহিমা বেগম আমিনা (৭০) নামে যুক্তরাজ্য প্রবাসীর গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত রহিমা উপজেলার উমরপুর ইউনিয়নের কটালপুর গ্রামের মৃত আখলু মিয়ার স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানান, রহিমা যুক্তরাজ্যে থাকতেন। বেশ কিছুদিন ধরে তিনি গোয়ালাবাজারের বাসায় একাই থাকতেন। তার তিন ছেলে ও এক মেয়ে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন। ২৮ জুলাই রাত থেকে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ থাকায় স্বজনরা বৃহস্পতিবার রাতে এসে বাসা তালবদ্ধ দেখতে পান। এরপর স্বজনরা তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে মেঝেতে রহিমার গলা কাটা মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে রাতেই মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে শুক্রবার সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। ঘটনাটি জানতে পেরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।
সিলেটের জাফলংয়ে ট্যুরিস্ট গাইড সাদ্দাম হোসেন হত্যায় জড়িত দুই যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেফতারকৃতরা নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের দীন ইসলামের পুত্র মো. হুমায়ুন ও একই এলাকার মো. সানীর পুত্র মো. সজল। তাদের নিয়ে ২৮ জুলাই সংবাদ সম্মেলন করেন পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার মো. খালেদ উজ জামান। এসময় তিনি বলেন, জাফলং গ্রিনপার্ক এলাকা থেকে গত ১৫ জুলাই ট্যুরিস্ট গাইড সাদ্দাম হোসেনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সাদ্দাম পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের কালিনগর গ্রামের মৃত হাসেম মিয়ার পুত্র। এ ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত হুমায়ন ও সজলকে গত ২৭ জুলাই নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই। খালেদ উজ জামান বলেন, পর্যটকের ছদ্মবেশে সিলেটে এসে তারা সাদ্দামকে খুন করেন। গত ১৪ জুলাই তারা সিলেটে এসে টার্মিনাল সংলগ্ন হোটেল আল হকে রাত্রিযাপন করেন। হোটেলের রেজিস্ট্রারে সজল নিজের নাম উলে¬খ করলেও হুমায়ুন নিজের নাম সাগর হোসেন উলে¬খ করেন। এরপর গত ১৫ জুলাই তারা জাফলংয়ে ঘুরতে যান এবং সাদ্দামকে টার্গেট করেন। ঘোরাঘুরির এক পর্যায়ে তারা সাদ্দামকে বন বিভাগের গ্রিনপার্কে নিরিবিলি জায়গায় নিয়ে হত্যা করে তার সঙ্গে থাকা মোবাইল ও ক্যামেরা নিয়ে পালিয়ে যান। পুলিশ সুপার জানান, সজল পেশায় বাসের হেলপার ও হুমায়ুন জুতার দোকানের সেলসম্যান। হত্যাকাণ্ডের পর সাদ্দামের স্ত্রী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করে। পাশাপাশি পিবিআই এ ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে। কিন্তু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তেমন কোনো ক্লু পাওয়া যাচ্ছিল না। মামলার এজাহারে তিন মাস আগের একটি ঘটনা নিয়ে পূর্বশত্রুতার বিষয়ে কিছু তথ্য উলে¬খ ছিল। এ বিষয়টিকে মূল ধরে তদন্তের কাজ চালিয়ে যায় পিবিআই। এক পর্যায়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা যায় মারা যাওয়ার দিন দু’জন লোকের সঙ্গে সাদ্দামকে দেখা গেছে। তাদের স্থানীয়রা চিনে না। এসব তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৬ জুলাই থেকে উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুদিপসহ একটি টিম পুরোদমে কাজ শুরু করে। তদন্তের মাধ্যমে নানা তথ্য যাচাই-বাছাই করে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অভিযান পরিচালনা করে পিবিআই এবং ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত এ দু’জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে সাদ্দামের ব্যবহৃত স্যামসাং জে-২ মোবাইল ও ক্যানন ৭৫০ ডিএসএলআর ক্যামেরা উদ্ধার করা হয়।
গত ১৫ জুলাই সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ক্যামেরা হাতে পর্যটকদের ছবি তোলার জন্য পর্যটনকেন্দ্র সংগ্রাম বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ক্যাম্প এলাকায় যাওয়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন সাদ্দাম। এদিন বিকেলে জাফলং বন বিটের গ্রিনপার্কে নির্জন স্থানে মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা থানা পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ সাদ্দামের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে। এসময় ঘটনাস্থল থেকে একটি রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করা হয়।
১০ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে দক্ষিণ সুরমার বাবনা পয়েন্টে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সিলেট জেলা ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়নের সেক্রেটারি ইকবাল হোসেন রিপনকে (৪০) কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এছাড়া দুর্বৃত্তের হামলায় বাবলা নামে এক যুবলীগ নেতা আহত হয়েছেন। নিহত ইকবাল হোসেন রিপন দক্ষিণ সুরমার খোজারখলা এলাকার আবুল হোসেনের পুত্র। এদিকে, হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠেছেন ট্যাংকলরি শ্রমিকরা। ঘটনার পরপরেই তারা লাঠি হাতে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানান। এসময় সড়ক অবরোধ করে যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে। রাত পৌনে ১২ টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শ্রমিকরা রাস্তা অবরোধ করে রাখে।
২ জুলাই সন্ধ্যায় গোয়াইনঘাট উপজেলার বিছানাকান্দি সীমান্তের ১২৬০ মেইন পিলার সংলগ্ন ৮ নম্বর সাব পিলারের কাছে ভারতীয় খাসিয়াদের গুলিতে সিরাজ উদ্দিন (৪৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন নিহতের সহোদর নাজিম উদ্দিন। নিহত সিরাজ উদ্দিন ও আহত নাজিম উদ্দিন উপজেলার রুস্তুমপুর ইউনিয়নের দমদমা গ্রামের মৃত ওয়াহিদ আলীর পুত্র। নিহতের স্বজনরা জানান, আলী আমজদের ভাই ফিরোজের হারিয়ে যাওয়া গরু খুঁজতে গিয়ে ভারতের সীমানায় ঢুকে পড়েন দুই সহোদর সিরাজ উদ্দিন ও নাজিম উদ্দিন। এ সময় খাসিয়ারা ছররা গুলি ছুঁড়লে ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান। এ সময় ফিরোজ পালিয়ে আসে এবং আহত নাজিমকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
২৩ জুন দুপুরে সিলেটে জমির সীমানা প্রাচীর নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে চেরাগ আলী (৫২) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১২ থেকে ১৫ জন। দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোগলাবাজার ইউনিয়নের পূর্ব নেগাল গ্রামের ছয়দুর রহমান ও মানিক মিয়া পক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্র জানায়, নেগাল গ্রামের ছয়দুর রহমান ও মানিক মিয়ার মধ্যে জমির সীমানা (আইল) নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। এদিন স্থানীয় ইউপি সদস্য জমির বিরোধ মিটিয়ে দিতে সালিশ ডাকেন। কিন্তু সালিশে উভয়পক্ষ একমত না হতে পেরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে ছয়দুর রহমান পক্ষের হামলায় মানিক মিয়া পক্ষের চেরাগ আলী মারা যান। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন। খবর পেয়ে সিলেট এসএমপির মোগলাবাজার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
২০ জুন বিকেলে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সীমান্ত কালাইরাগ এলাকায় ভারতীয় খাসিয়া অধিবাসীদের গুলিতে বাবুল বিশ্বাস (৩৪) নামে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। নিহত গোপাল বিশ্বাস উপজেলার উত্তর রণিখাই ইউনিয়নের শাতাল শান্তিপুর গ্রামের গোপাল বিশ্বাসের পুত্র। বর্ডার গার্ড ৪৮ ব্যাটালিয়নের কোম্পানীগঞ্জ কালাইরাগ সীমান্ত ফাঁড়ির নায়েব সুবেদার হারিছ আলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সীমান্তের ১২৫১ নম্বর মেইন পিলারের ১১ নম্বর সাব পিলার সংলগ্ন সীমান্ত এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত) রজি উল¬াহ খান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। জানা যায়, শনিবার গোপাল বিশ্বাসসহ দুই-তিনজন কাজের উদ্দেশ্যে সীমান্ত পেরোতে যায়। সে সময় ভারতীয় খাসিয়ারা তাদের ওপর গুলি চালালে বাবুল বিশ্বাস গুরুতর আহত হন। পড়ে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক গোপালকে মৃত ঘোষণা করেন। এর আগে গত ১০ জুন সিলেটের গোয়াইঘাট সীমান্তে ভারতীয় খাসিয়াদের গুলিতে মিন্টু মিয়া (২৪) নামে আরও একই বাংলাদেশি তরুণ নিহত হন।
১১ জুন বিকেল ৩টার দিকে নগরীর দক্ষিণ সুরমার ধোপাঘাট এলাকার রাস্তার পাশে সাদা রঙের বস্তাবন্দী এক অজ্ঞাতনামা (৩৮) ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের মর্গে পাঠায় পুলিশ। ওইদিন রাতেই দক্ষিণ সুরমা থানায় ছবি এবং ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মরদেহ দেখে শামীমকে সনাক্ত করেন তার স্বজনরা। নিহত ইউনুছ আহমদ শামীম সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার ঘরপুর দত্তপুর গ্রামের আব্দুল আলীর পুত্র। তিনি সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী সহকারি ছিলেন।
১১ জুন দুপুরে সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের পারাইরচক ষাটঘর এলাকা থেকে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির (৪০) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয়রা জানান, এদিন সকালে লাশ পড়ে থাকতে দেখে থানায় খবর দেওয়া হয়। মৃত ব্যক্তির পরনে ছিল হাফশার্ট ও গ্যাবাটিন প্যান্ট। মহানগর পুলিশের মোগলাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন বলেন, মৃত ব্যক্তির পকেটে হার্টের ওষুধ ছিল। তবে তিনি রোগাক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন কিনা, এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।
১০ জুন দুপুরে গোয়াইঘাট সীমান্তে ভারতীয় খাসিয়ার গুলিতে মিন্টু মিয়া (২৪) নামে বাংলাদেশি এক তরুণ নিহত হয়েছেন। উপজেলার রুস্তমপুর ইউনিয়নের কুলুমছড়ার পার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মিন্টু মিয়া ওই গ্রামের আকবর আলীর পুত্র।
নিহতের ভাই নজরুল ইসলাম জানান, মিন্টু মিয়া ও তার সঙ্গীরা সীমান্তের ওপারে আম কুড়াতে গেলে খাসিয়ারা গুলি চালায়। এতে অন্যরা পালিয়ে আসলেও গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মিন্টু মারা যান। তারা খবর পেয়ে সীমান্ত এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল আহাদ বলেন, ‘গোয়াইনঘাট উপজেলার বিছনাকান্দি সীমান্তে কুলুম ছড়ারপার গ্রামের এক তরুণ ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় মারা যাওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) যীশু দত্ত মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠান। ’স্থানীয়দের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, আম কুড়াতে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়লে খাসিয়ারা গুলি করে। এতে ঘটনাস্থলে মিন্টু মিয়া মারা যান। পরকীয়ার জেরে সিলেটের বিয়ানীবাজারে আড়াই বছরের শিশু সায়েল আহমদকে হত্যা করেন তারই চাচি সুরমা বেগম। ৮ মে বিকেলে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছেন সুরমা বেগম। এছাড়া সুরমার কথিত প্রেমিকা অপর আসামি নাহিদুল ইসলাম ইব্রাহিমকে চার দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। সিলেটের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৫ম আদালতের বিচারক নওরীন করিম তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
আদালতে সুরমা বেগমের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর ও মিডিয়া) মো. লুৎফর রহমান বলেন, প্রেমিক ইব্রাহীমের সঙ্গে সুরমা বেগমের অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার সময় শিশু সায়েল দেখে ফেলায় তাকে হত্যা করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই বসতঘরের গোসল খানায় ড্রামে কম্বল মোড়ানো অবস্থায় শিশু সায়েলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সুরমা বেগম হত্যার দায় স্বীকার করেন এবং অপর আসামি ইব্রাহীমকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ৭ জুন) সন্ধ্যায় সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ারবাজার ইউনিয়নের উত্তর আকাখাজনা গ্রামে শিশু সায়েলের চাচির বাথরুম থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘাতক সুরমা বেগম নিহতের চাচা রুনুর স্ত্রী ও নাহিদুল ইসলাম ইব্রাহিম উপজেলার চারখাই গ্রামের কামাল মিয়ার পুত্র।
সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে সিলেটে চাচার ছুরিকাঘাতে ভাতিজা খুন হয়েছেন। ১ জুন ভোরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত আল আমিন (২৭) সিলেট সদর উপজেলার খাদিমনগর ইউনিয়নের সাহেববাজার ফড়িংউড়া গ্রামের মুসা মিয়ার পুত্র। স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ৩১ মে দুপুরে সিলেট সদর উপজেলার খাদিমনগর ইউনিয়নের সাহেববাজার ফড়িংউড়া গ্রামে আপন চাচা ইলিয়াস মিয়ার ছুরিকাঘাতে আল আমিন গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তার শরীরে জরুরিভিত্তিতে অস্ত্রোপচার করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন ভোরে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর থেকে ইলিয়াস ও তার সহযোগীরা পলাতক রয়েছেন। নিহতের বাবা মুসা মিয়া বলেন, সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে তার আপন ভাই ইলিয়াস ছুরিকাঘাত করে আল আমিনকে খুন করেছে।
২৬ মে রাত সাড়ে ৮টার দিকে সিলেট নগরীর সুবিদবাজারে আমির হোসেন (২৫) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। পল¬বী কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আমির সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের ইনাতাবাদ গ্রামের সুলতান মিয়ার পুত্র।
তিনি নগরের তেলিহাওরের আখলু মিয়ার ওয়ার্কশপে কাজ করতেন।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, রাতে নগরের শেখঘাট জিতু মিয়ার পয়েন্ট থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে বাড়ি ফিরছিলেন আমির। পথে পাঠানটুলা পল¬বী কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এলে দুই-তিনটি মোটরসাইকেলে করে এসে দুর্বৃত্তরা অটোরিকশার গতিরোধ করে তাকে এলাপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সিলেট চেইনশপ পানসিবাজারের নৈশপ্রহরী পার্থ দাসের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ১১ মে সকালে নগরীর মেডিক্যাল রোডের কাজলশাহ এলাকার পানসিবাজার শাখার সামনে থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃত পার্থ দাস সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। স্থানীয়রা জানান, সিলেটের বিখ্যাত পানসি রেস্টুরেন্টের অঙ্গে প্রতিষ্ঠান পানসিবাজারের কাজলশাহ শাখার আউটলেটে নৈশপ্রহরী ছিলেন। সকাল ১০টার দিকে প্রতিষ্ঠানটির সামনে তার রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা কোতোয়ালি থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে ওসমানি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সিলেটে ভাতিজার ছুরিকাঘাতে চাচা আব্দুল জব্বারের (৫৫) মৃত্যু হয়েছে। ৮ মে দুপুর আড়াইটার দিকে দক্ষিণ সুরমার লালাবাজার ইউনিয়নের ভরাউট গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আব্দুল জব্বার ওই গ্রামের টুটন উল¬াহর পুত্র। এ ঘটনায় ভাতিজা ফাহিম আহমদকে (২১) তাৎক্ষণিক আটক করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ফজল বলেন, একই বাড়িতে পাশাপাশি ঘরের বাসিন্দা তারা। বাড়ির জায়গা নিয়ে ঝামেলার জের ধরে ফাহিম তার চাচাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে খুন করেন। লাশের পিঠে বেশ কয়েকটি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
সিলেটে ক্বীন ব্রীজ থেকে পড়ে অজ্ঞাতপরিচয় এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। তবে মৃত বৃদ্ধের পরিচয় পায়নি পুলিশ। ২০ এপ্রিল সুরমা নদীর ওপর অবস্থিত ক্বীন ব্রীজের দক্ষিণপাড়ে নদী তীর থেকে ওই বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সিলেটের বিশ্বনাথে হাফিজ নুরুল আমিন (২৫) নামে এক গৃহশিক্ষককে খুন করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গৃহকর্তা সেলিম মিয়া ও তার ছেলেকে আটক করেছে পুলিশ। গত ৮ এপ্রিল দিনগত রাত ২টার দিকে সদর ইউনিয়নের পুরাণ সিরাজপুর গ্রামের সেলিম মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ৯ এপ্রিল ভোররাতে গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। নিহত শিক্ষকের বুকে, পেটে ও পায়ে একাধিক ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। হাফিজ নূরুল আমীন ওরফে লাইস মিয়া সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার শ্রীরামসী গ্রামের মৃত সজ্জাদ আলীর পুত্র। তিনি বিশ্বনাথ দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসার আলীম পরীক্ষার্থী ছিলেন।
সিলেটের সুরমা নদীর দক্ষিণ তীরে কদমতলী দরিয়াশাহ (র.) মাজার সংলগ্ন এলাকা থেকে সাগর (৩০) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ৯ এপ্রিল দুপুর ২টার দিকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ফজল বলেন, মাজারের পাশে পরনে লুঙ্গি ও খালিগায়ে একটি জামা হাতে থাকাবস্থায় মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশ খবর দেন স্থানীয়রা। পর পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী স্বামীকে ভিডিওকলে রেখে লুবনা বেগম (২৩) নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। ৫ এপ্রিল নগরীর জিন্দাবাজারের কাজী ইলিয়াস এলাকার পলাশী-৩৮/১ নম্বর বাসায় এ ঘটনা ঘটে। মৃত লুবনা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী তৌহিদ আহমদ নিপুর স্ত্রী। সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম মিঞা এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, স্বামী নিপুর সঙ্গে মোবাইল ফোনে ভিডিওকলে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে লুবনা আত্মহত্যা করেন। বাসায় তার শয়নকক্ষের দরজা ভেঙে মরদেহ উদ্ধার করে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানায়, ঘটনার আগ মুহূর্তে স্বামীর সঙ্গে ভিডিওকলে কথা বলার এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। পরে রাগের মাথায় লুবনা গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন। বাসার অন্যদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে।
দক্ষিণ সুরমা উপজেলা থেকে লাকি রানী দেবনাথ (২৩) নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ১ এপ্রিল উপজেলার লালাবাজার ইউনিয়নের শাহ সিকন্দর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এক সন্তানের জননী লাকি ওই গ্রামের ওমর দেবনাথের স্ত্রী। স্থানীয়রা জানায়, সকাল ১১টার দিকে নিজ কক্ষে লাকির ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান বাড়ির লোকজন। পরে এ ঘটনা জানাজানি হলে খবর পেয়ে দুপুরে দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ ওই বাড়িতে আসে। এরপর পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত শেষে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
সিলেটে সুরমা নদী থেকে পায়ে শিকল বাঁধা অবস্থায় এক যুবকের (৩৫) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ৩০ মার্চ সকালে জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাঘা ইউনিয়নের রুস্তমপুর এলাকায় সুরমা নদী থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। স্থানীয়রা জানান, সকালে নদীতে মরদেহটি দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
করোনা আতঙ্কের সময় কথা কাটাকাটির জেরে সিলেটে শাহীন মিয়া (২৭) নামে এক যুবককে খুন করছে দুর্বৃত্তরা। ২৮ মার্চ বিকেল ৩টার দিকে নগরীর রায়নগর আবাসিক এলাকায় ঘটনা ঘটে। নিহত শাহীন মিয়া রায়নগরের বিল¬াল মিয়ার পুত্র। স্থানীয়রা জানান, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে নিজ বাসার সামনে কয়েকজন যুবক শাহীনকে ছুরিকাঘাত করেন। এ সময় আশপাশ থেকে স্থানীয়দের চিৎকারে দুর্বৃত্তরা রক্তাক্ত অবস্থায় শাহীনকে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যায়। গুরুতর অবস্থায় তাকে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
১২ মার্চ দুপুরে সিলেটের বিশ্বনাথে নিখোঁজের চারদিন পর নদী থেকে যতীন্দ্র কুমার দাস (৫৫) নামে এক ব্যক্তির হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। উপজেলার অলংকারী ইউনিয়নের টেংরা দাসপাড়ার গ্রামের বাসিয়া নদী থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। যতীন্দ্র কুমার দাস ওই গ্রামের মৃত হরেন্দ্র কুমার দাসের ছেলে। তিনি চার কন্যা সন্তানের জনক।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় অজ্ঞাতপরিচয় (৫৫) এক বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ৯ মার্চ দুপুরে নগরীর প্রবেশদ্বার হুমায়ুন রশীদ চত্বর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। দক্ষিণ সুরমা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহিন আহমদ জানান, দুপুরে হুমায়ন রশিদ চত্বর এলাকায় মরদেহটি পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা থানা পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করছে, ওই বৃদ্ধ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
সিলেটে দুই ভাইয়ের ঝগড়া থামাতে গিয়ে আরিফুন নেছা নামে বৃদ্ধা খুন হয়েছেন। ৮ ফেব্রুয়ারী বিকেলে ওসমানীনগর উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের ফকিরাবাদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আরিফুন নেছা ওই গ্রমের আব্দুর রউফের স্ত্রী। স্থানীয়রা জানান, ওই গ্রামের আবুল মিয়ার পুত্র ইমন মিয়া ও তার চাচা আব্দুর রহিমের পুত্র আজিজুলের মধ্যে ঘরের মধ্যে বাথরুমের টাংকি মেরামত নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে একে অপরকে আঘাত করতে গেলে দেবরের ছেলেদের ঝগড়া থামাতে এগিয়ে আসেন আরিফুন নেছা। এ সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাত লাগলে গুরুতর আহত হন তিনি। এ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী একটি হাসাপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সিলেট নগরীর টিলাগড়ে অভিষেক দে দ্বীপ (২১) নামে এক ছাত্রলীগ কর্মী খুন হয়েছেন। গত ৬ ফেব্রুয়ারী রাত সাড়ে নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ছাত্রলীগ কর্মী অভিষেক দে দ্বীপ নগরের শিবগঞ্জ সাদিপুরের দ্বীপক দে’র পুত্র। তিনি গ্রীণহিল কলেজের ছাত্র ও আওয়ামী লীগ নেতা রনজিত গ্রুপের অনুসারী বলে জানা গেছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, ঘটনার সময় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সিলেট সরকারি কলেজের ছাত্র ও ছাত্রলীগ কর্মী সৈকতের নেতৃত্বে একদল যুবক দ্বীপের ওপর হামলা চালায়। এসময় দ্বীপকে ছুরিকাঘাত করে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখে যায় তারা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট এমএজি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সিলেটের শাহপরান (র.) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তারা দলীয় কর্মী হলেও সরস্বতী পূজার দিন কথা কাটাকাটিরর জের ধরে খুনের ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, তারা পরস্পরকে ছুরিকাঘাত করে। সৈকতের ছুরিকাঘাতে দ্বীপ মারা যায়।
সিলেটে নিখোঁজের দুই দিন পর দেবাশীষ রাজকুমার নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ৬ ফেব্রুয়ারী বিকেল ৫টার দিকে নগরীর মাছিমপুর শুটকির আড়তের পেছনে থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। দেবাশীষ রাজকুমার নগরীর মাছিমপুর মনিপুরী পাড়ার বাসিন্দা।
নিহত যুবকের স্বজনদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গত ২ ফেব্রুয়ারী দেবাশীষ নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও তাকে কোথায়ও পাওয়া যায়নি। এরপর বুধবার বিকেলে নগরের মাছিমপুর শুটকির আড়তের পেছনে তার মরদেহ দেখতে পেয়ে কোতোয়ালি থানায় খবর দেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতের পর ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সিলেটের সীমান্তবর্তী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় পাথর কোয়ারি ধসে রুবেল মিয়া (২৬) নামে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুই জন। ২ ফেব্রুয়ারী সকালে উপজেলার কালাইরাগ হাজিরডানা লালপাথর এলাকায় নুরুজ্জামান গংদের কোয়ারিতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। রুবেল নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুরি উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের ফরিদ মিয়ার পুত্র।
আহত দু’জনের নাম-পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ। কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সজল কুমার কানু বলেন, এ ঘটনায় কোয়ারি মালিকদের কাউকে আটক করা যায়নি।
সিলেটে ট্রাক থেকে উদ্ধার হওয়া দুই চালক হত্যার শিকার হয়েছেন। হত্যার পর পরিকল্পিতভাবে তাদের লাশ একটি ট্রাকে করে সিলেট সিটি করপোরেশনের ময়লার ভাগাড় সংলগ্ন সড়কের পাশে রেখে যায়। ঘটনাটি যাতে দুর্ঘটনা মনে করা হয়, এজন্য ট্রাক রাস্তার পাশে রেখে খুলে নেওয়া হয় ছয়টি চাকা। ২৪ জানুয়ারি উদ্ধার করা নিথর দেহ দু’টির বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখে পুলিশ এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে। ঘটনার পর রাতভর অভিযান চালিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত তিনজনকে আটক করা হয়েছে। ২৫ জানুয়ারি দুপুরে সিলেট মহানগর পুলিশের মোগলাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আটক ৩ জনের দুইজন হত্যাকারী। অপরজনের কাছ থেকে লাশ রাখা গাড়ির ছয়টি চাকা জব্দ করা হয়েছে। নিহতরা হলেন-চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা বাগদী গ্রামের কাদেরের পুত্র জাহাঙ্গীর মিয়া (২৫) ও দীন মোহাম্মদের পুত্ররাজু আহমদ (২৫)। তারা পেশায় দু’জনই গাড়িচালক।
সিলেট নগরীর ঘাসিটুলা মজুমদার পাড়ার একটি কলোনী থেকে শাহাদাত হোসেন (১৪) নামে এক কিশোরের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ২১ জানুয়ারি রাত পৌনে ৮টার দিকে ওই এলাকার বাছিত মিয়ার কলোনীর একটি আধাপাকা ঘর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। শাহাদাত ওই বাসার ভাড়াটে বাসিন্দা রফিক মিয়ার পুত্র। তার গ্রামের বাড়ি সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার ডিবির হাওর সংলগ্ন এলাকায়।
পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম মিয়া জানান, এখানে পরিবারের সঙ্গে থাকতো শাহাদাত। পাশাপাশি তার ভগ্নিপতির সঙ্গে মাংসের দোকানে কাজ করতো। ওইদিন ঘটনার সময় তার ভগ্নিপতি দোকানে ছিলেন। বোন ডিম আনার জন্য টাকা দিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে যান। পরে তারা বাসায় ফিরে জানালা দিয়ে ঘটনাটি দেখতে পান। তিনি আরও জানান, স্থানীয়দের খবরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে।