ঘটনাটি ছিল সাজানো ॥ মদিনা মার্কেটে ছিনতাইর ঘটনায় গ্রেফতারকৃত মামলায় ২ জন কারাগারে প্রেরণ

12
মদিনা মার্কেটে ছিনতাইয়ের ঘটনায় আটক দুই জন ও উদ্ধারকৃত টাকা।

স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর মদিনা মার্কেট এলাকা থেকে ৩ লাখ ৬ হাজার টাকা ছিনতাইর ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ২ ছিনতাইকারীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুসা জানান, পুলিশ অভিযান চালিয়ে আব্দুল্লাহ আল সাদীর ঘর থেকে আড়াই লাখ টাকা উদ্ধার করেছে। আর ৫১ হাজার টাকা নাজমুল হকের তথ্যানুসারে তাদের ঘরেই ছিল। তিনি জানান, এ ঘটনায় আসাদ মিয়ার ভাগ্নে, ছাতকের জাহিদপুর মোহাম্মদপুরের রিদানুল ইসলাম আজাদ গতকাল সোমবার কোতোয়ালী থানায় ৪ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। পরে পুলিশ আব্দুল হক ও রাশেদকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।
একটি সূত্র জানায়, গত রবিবার ঘটে যাওয়া ছিনতাইয়ের ঘটনাটি আসলে দূর সম্পর্কের চাচার পাঠানো টাকা ছিনতাই হয়ে গেছে নাটক সাজিয়ে ভাতিজাসহ ৪ জন টাকাগুলো আত্মসাৎ করতে চেয়েছিলেন। তারা হচ্ছে- সুনামগঞ্চের ছাতকের গোবিন্দগঞ্জের রমজান আলীর পুত্র আব্দুল হক (১৯), ছাতকের নোয়ারাই গ্রামের মৃত শামসুদ্দোহা খানের পুত্র আব্দুল্লাহ আল সাদী (১৯), নগরীর জালালাবাদ থানার ব্রাহ্মণশাসনের উদ্দীপন-বি ৪ নং বাসার মারুফ আহমদের পুত্র কামরান মিয়া (২০) ও জালালাবাদের ডালিয়া গ্রামের রাশেদ (২০)। তন্মধ্যে আব্দুল হকের বর্তমান নিবাস কোতোয়ালী থানার পশ্চিম পাঠানটুলায়, আব্দুল্লাহ আল সাদীর জালালাবাদের আখালিয়াঘাটের এসডি ভবনে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ছাতকের জাহিদপুর মোহাম্মদপুরের যুক্তরাজ্য প্রবাসী আসাদ মিয়া (৩৩) বিভিন্ন কাজের জন্য ৩ লাখ ৬ হাজার টাকা প্রেরণ করেন। সেই টাকা উত্তোলনের জন্য পিন নম্বর তিনি প্রদান করেন ভাতিজা আব্দুল হককে। গত রবিবার বেলা পৌনে ১টার দিকে আব্দুল হক তার ছোট ভাই নাজমুল হককে (১২) নিয়ে রূপালী ব্যাংকের মদিনা মার্কেটস্থ শাখা থেকে টাকা উত্তোলন করেন। আব্দুল হক দুটি বান্ডিলে ৫১ হাজার টাকা রাখেন নাজমুল হকের কাছে। বাকি টাকা নিজের কাছে রাখেন। ব্যাংক থেকে নিচের নামার পর সিএনজি অটোরিক্সা যোগে দুজন ‘ছিনতাইকারী’ এসে আব্দুল হককে তুলে নিয়ে যায়। পরে তার কাছ থেকে টাকা ‘হাতিয়ে নিয়ে’ ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনার পরপরই নাজমুল হক হন্তদন্ত হয়ে বাসায় গিয়ে আব্দুল হককে অটোরিক্সা দিয়ে তুলে নেওয়ার বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের জানান। পরে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে টাকা ছিনতাই হয়েছে বলে কোতোয়ালী থানাকে খবর দেন। এরপরই ঘটনা মোড় নেয় অন্যদিকে। পুলিশ সিসি টিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ, স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ এবং নাজমুল হকের সাথে কথা বলে। সন্দেহজনক তথ্য মেলার পর আব্দুল হককে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুল হক ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়ে টাকা আত্মসাৎ করতে চেয়েছিলেন বলে স্বীকার করেন। নাটকে তাকে সহযোগীদের নাম-পরিচয়ও প্রকাশ করেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুল হক জানান, পূর্বপরিকল্পনা অনুসারেই ব্যাংক থেকে নিচে নামার পর আব্দুল্লাহ আল সাদী ও কামরান মিয়া সিএনজি অটোরিক্সাযোগে এসে তাকে (আব্দুল হক) তুলে নেওয়ার নাটক করেন। ঘটনাকে বিশ্বাসযোগ্য করতে আব্দুল হক ব্লেড দিয়ে নিজের হাতও কাটেন। সাদী, কামরান ও রাশেদ ছিনতাইয়ের নাটক সাজাতে সহযোগিতা করেন।