কাজিরবাজার ডেস্ক :
চলতি বছর সরকারী ব্যস্থাপনায় তিনটি প্যাকেজের মাধ্যমে হজ্ব পালনের সুযোগ রেখে ‘হজ্ব প্যাকেজ, ১৪৪১ হিজরি/২০২০ খ্রিস্টাব্দ’ এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রী সভা। পাশাপাশি মন্ত্রী সভা বিদেশী প্রতিষ্ঠানকে দেশী বিধিবিধান পালন করে এককভাবে ব্যবসা করার সুযোগ দিয়ে ‘জাতীয় ডিজিটাল কমার্স (সংশোধিত) নীতিমালা-২০২০’ এর খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে। এছাড়াও মন্ত্রী সভা ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০২০’-এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার অনুষ্ঠিত মন্ত্রী সভার নিয়মিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়। তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রী পরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সরকারী ব্যবস্থাপনায় প্যাকেজ-১ এর আওতায় ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা, প্যাকেজ-২ এর আওতায় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও প্যাকেজ-৩ এর আওতায় খরচ পড়বে ৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা।
আগে দুটি প্যাকেজের মাধ্যমে হজ্বে যাওয়া যেত। সরকারী ব্যবস্থাপনার জন্য ২০২০ সালে প্রথমবারের মতো ৩ লাখ ১৫ হাজার টাকার নতুন প্যাকেজ-৩ প্রস্তাব করা হয়েছে। বিগতবারের চেয়ে এবার প্যাকেজ-১ এ খরচ বেড়েছে সাড়ে ছয় হাজার টাকা। আর প্যাকেজ-২ এ খরচ বেড়েছে ১৬ হাজার টাকা।
এই তিনটি প্যাকেজ অনুসরণ করে বেসরকারী ব্যবস্থাপনায়ও হজ্ব এজেন্সিগুলোকে যাত্রী পরিবহন করতে হবে জানিয়ে মন্ত্রী পরিষদ সচিব বলেন, দূরত্বের ওপর ভিত্তি করে এসব প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকারী ব্যবস্থাপনায় প্যাকেজ-১ এর হজ্বযাত্রীরা পবিত্র মসজিদুল হারাম চত্বরের সীমানা থেকে সর্বোচ্চ ৭০০ মিটারের মধ্যে, প্যাকেজ-২ এর হজ্বযাত্রীরা সর্বোচ্চ ১৫০০ মিচারের মধ্যে এবং প্যাকেজ-৩ এর হজ্বযাত্রীরা ১৫০০ মিটার এর অধিক দূরত্বে অবস্থান করবেন।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, এ বছর হজ্বযাত্রীদের কাছ থেকে বিমানের টিকিট বাবদ গৃহীত অর্থ এজেন্সের ব্যাংক থেকে উত্তোলন করতে পারবে না। হজ্বযাত্রীর সংখ্যা অনুযায়ী সরাসরি পে-অর্ডারের মাধ্যমে এয়ারলাইন্সকে পরিশোধ করতে হবে এবং সৌদি আরবের বিভিন্ন সার্ভিস চার্জ ও পরিবহন বাবদ গৃহীত অর্থ ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক এ্যাকাউন্ট নম্বরের (আইবিএএন) মাধ্যমে সৌদি আরবে প্রেরণ ব্যতীত এজেন্সি উত্তেলন করতে পারবে না।
সৌদি আরবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৯ জিলহজ্ব, ১৪৪১/৩০ জুলাই পবিত্র হজ্ব অনুষ্ঠিত হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ৩৭ হাজার ১৯৮ মুসল্লি হজ্বে যেতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারী ব্যবস্থাপনায় ১৭ হাজার ১৯৮ এবং বেসরকারী ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ২০ হাজার মুসল্লি হজ্বে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।
তিনি বলেন, এ বছরও রুট টু ইনভাইটেশনের অধীনে শতভাগ হজ্বযাত্রীর সৌদি আরবের প্রি-এরাইভাল ইমিগ্রেশন ঢাকায় সম্পন্ন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। হজ্বযাত্রীদের পাসপোর্টের মেয়াদ ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সাল পর্যন্ত থাকতে হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রত্যেক হজ্ব এজেন্সি কমপক্ষে ১০০ জন এবং সর্বোচ্চ ৩০০ জন হজ্বযাত্রী প্রেরণ করতে পারবে। হজ্ব এজেন্সি ব্যতীত অন্য কোন এজেন্সিকে হজ্বযাত্রীর টিকিট বিক্রয়ের জন্য দেয়া যাবে না। কোন হজ্ব এজেন্সিকে কোন অবস্থাতেই ৩০০ এর অধিক টিকিট প্রদান করা যাবে না।
প্রতি ৪৪ হজ্ব যাত্রীর জন্য একজন করে গাইড নিয়োগ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, হজ্বযাত্রীদের কুরবানি বাবদ ব্যয়ের অর্থ ইসলামী ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করার জন্য সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এই জন্য হজ্বযাত্রীকে প্যাকেজ মূল্যের অতিরিক্ত ৫২৫ সৌদি রিয়ালের সমপরিমাণ ১২ হাজার ৭৫ টাকা সঙ্গে নিতে হবে।
বিদেশী প্রতিষ্ঠানকে দেশী বিধি-বিধান পালন করে এককভাবে ব্যবসা করার সুযোগ দিয়ে ‘জাতীয় ডিজিটাল কমার্স (সংশোধিত) নীতিমালা-২০২০’ এর খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রী সভা। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রী পরিষদ সচিব বলেন, ডিজিটাল কমার্স খাতে বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান বিধি-বিধান প্রতিপালন করতে হবে বলে সংশোধনী এনেছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে বিদেশী কোন ডিজিটাল প্রতিষ্ঠান দেশী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগ ছাড়া ব্যবসা করতে পারবে না এবং দেশী ডিজিটাল প্রতিষ্ঠানগুলোর শর্তগুলো প্রাধান্য দেয়া হবে।
এটি বাস্তবায়িত হলে বিদেশী প্রতিষ্ঠান আমাদের বিধি-বিধান পালন করে এককভাবে ব্যবসা করতে পারবে। আর ডিজিটাল কমার্স খাতে বিদেশী কোম্পানির ৫১:৪৯ সমানুপাতে মালিকানা ব্যবস্থায় নিয়োগ করার কথা থাকলেও বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে শতভাগ মালিকানার প্রস্তাব করা হলে মন্ত্রী সভা অনুমোদন করেনি। বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে ডিজিটাল কমার্স খাতে বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান বিধি-বিধান প্রতিপালন করার বিষয় অনুমোদন করা হয়েছে।