পৃথিবীর কোথাও অশান্তি নিয়ে কোনো টেকসই উন্নয়ন হতে পারে না এবং টেকসই উন্নয়ন ছাড়া শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। এ লক্ষ্যে সব নাগরিক, অংশীদার ও রাষ্ট্রের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে বৈশ্বিক অংশীদারি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতেই ২০১৫ সালে জাতিসংঘের উদ্যোগে দ্বিতীয়বারের মতো ১৫ বছরের এক বৃহৎ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। জাতিসংঘ সারা বিশ্বের উন্নয়ন টেকসই করতে ১৭টি লক্ষ্য নির্ধারণ করে, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি নামে পরিচিত। এসডিজির মাধ্যমে সব মানুষের সমৃদ্ধ ও নিরাপদ জীবনের নিশ্চয়তা, অর্থনৈতিক, সামাজিক-প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সমন্বয় এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাসহ সমাজে সব ধরনের ভয়ভীতি ও বৈষম্য দূর করা হবে। এসডিজি হচ্ছে মানুষ ও পৃথিবীর সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার একটি বৃহৎ কর্মপরিকল্পনা, যা ব্যক্তি স্বাধীনতা নিশ্চিত করাসহ বৈশ্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে। সম্পদের টেকসই উৎপাদন ও ব্যবহার, প্রাকৃতিক সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনা, জলবায়ুর নেতিবাচক পরিবর্তন রোধে ত্বরিত উদ্যোগ এবং বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পৃথিবীকে সব ধরনের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করাই এসডিজির লক্ষ্য।
এসডিজির লক্ষ্য অর্জনে কতটা সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ? বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ, সিপিডির এক মূল্যায়ন প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, জাতিসংঘ ঘোষিত এসডিজি অর্জনে সঠিক পথে নেই বাংলাদেশ। এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিচার-বিশ্লেষণ করার মতো তথ্য-উপাত্ত পর্যন্ত নেই। সিপিডি বলেছে, বৈষম্য দূরীকরণ, শান্তি ও ন্যায়বিচার, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা, কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার মতো বিষয়গুলোতে বাংলাদেশের এখনো কার্যকর অগ্রগতি হয়নি। তবে সবার জন্য শিক্ষা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে প্রাথমিকভাবে সাফল্য এসেছে। এসডিজি অর্জনে সফল হতে হলে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ ও রাষ্ট্রীয়ভাবে জবাবদিহি এবং সুশাসন নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছে সিপিডি। সংস্থাটি মনে করছে, নীতিগত অনেক সংস্কার প্রয়োজন। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে এ লক্ষ্যগুলো অর্জনে বিদ্যমান নীতিতে ব্যাপক সংস্কার এবং সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের তাৎপর্য ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে।
বৈশ্বিক অংশীদারি নিশ্চিত করতে এসডিজি অর্জনের কোনো বিকল্প নেই। আর সে কারণেই আমাদের যেকোনো দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে হবে।