কাজিরবাজার ডেস্ক :
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা বুঝি বেজে উঠল। প্রতিশোধের আগুনে জ্বলছে খামেনির দেশ ইরান। এবার যুক্তরাষ্ট্রের ‘১৪০ স্থাপনা’ টার্গেট করেছে দেশটি। আক্রান্ত হলে তেহরান এই স্থাপনাগুলোতে হামলা চালাবে বলে পরিকল্পনা নিয়েছে।
ইরানের বিপ্লবী গার্ড সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে ইরাকে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ইরানের দুই দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর নতুন খবরটি পাওয়া গেল।
গত ৩ জানুয়ারি ভোরে মার্কিন বিমান বাহিনী অনেকটা চোরাগোপ্তা কায়দায় ইরানের বিপ্লবী গার্ডের অভিজাত শাখা কুদস্ ফোর্সের প্রধান জেনারেল সোলেইমানির গাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করে। ওই হত্যাকাণ্ডের পর ইরানের পক্ষ থেকে ‘কঠোর প্রতিশোধের’ হুমকি দেয়া হয় যুক্তরাষ্ট্রকে।
তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার ভোরে ইরাকে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে দুই দফায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এতে অন্তত ৮০ ‘মার্কিন সন্ত্রাসী’ নিহত হয়েছে বলে দাবি করে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন।
ওই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইট করে বলেন, ‘সবকিছু ঠিক আছে! ইরাকে অবস্থিত দুটি সামরিক ঘাঁটিতে ইরান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। এখন ক্ষয়ক্ষতি এবং হতাহতের তথ্য মূল্যায়ন করা হচ্ছে। যা হয়েছে, ভালো হয়েছে! আমাদের কাছে সবচেয়ে ক্ষমতাধর এবং সুসজ্জিত সামরিক বাহিনী রয়েছে। বিশ্বের যেকোনো স্থানে তারা রয়েছে।’
এরপর ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনী বলেন, ‘এই হামলা যুক্তরাষ্ট্রের গালে চপেটাঘাত মাত্র। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো গোটা অঞ্চলে মার্কিন সেনা উপস্থিতির অবসান ঘটাতে হবে। তারা এ অঞ্চলে যুদ্ধ, বিশৃঙ্খলা ও ধ্বংসযজ্ঞ নিয়ে এসেছে। বিভিন্ন দেশের অবকাঠামো ধ্বংস করে দিচ্ছে।’
সমানতালে দুই দেশের সামরিক কর্মকর্তারাও পাল্টাপাল্টি হুমকি-ধামকি দিতে থাকেন। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ বাঁধাতে চায় না। তবে বাঁধলে এর শেষ করে ছাড়বে।’
এরমধ্যেই ইরানের বিপ্লবী গার্ডের শীর্ষস্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেন, ওয়াশিংটন যদি ফের কোনো ভুল করে তবে তাদের কড়া জবাব দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের ১৪০টি স্থাপনার তালিকা বানিয়ে টার্গেট ঠিক করে রেখেছে ইরান।
অবশ্য এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো বক্তব্য এখনো মেলেনি। যদিও এর আগে ইরানের হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প বলেছিলেন, তারা ইরানের ৫২ স্থানকে টার্গেট করে রেখেছেন। ১৯৭৯ সালে ইসলামী বিপ্লবের সময় তেহরানে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস থেকে ৫২ জন আমেরিকানকে জিম্মি করার কথা স্মরণ করেই ওই ৫২ স্থানকে টার্গেট করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।