বায়ুদূষণের তালিকায় আবার এক নম্বরে নাম লিখিয়ে ফেলেছিল ঢাকা। দুই সপ্তাহের বেশি সময় এয়ার ভিজ্যুয়ালের তালিকায় ২০-এর মধ্যে ছিল না ঢাকা। ফের বায়ুদূষণে এক নম্বর অবস্থানে উঠে আসে রাজধানী।
বাংলাদেশে বায়ুদূষণের উৎস নিয়ে চলতি বছরের মার্চে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে বায়ুদূষণের প্রধান তিনটি উৎস হচ্ছে ইটভাটা, যানবাহনের কালো ধোঁয়া ও নির্মাণকাজ। আট বছর ধরে এই তিন উৎস ক্রমেই বাড়ছে। ভবন ও অবকাঠামোর উন্নয়নকাজ উন্মুক্তভাবে করার ফলে শহরের বাতাসে ধুলোবালির পরিমাণ অনেক বেড়েছে। শুধু ঢাকা নয়, অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও শিল্পায়নের ফলে বাংলাদেশের পরিবেশ মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শহরের দরিদ্র মানুষ ও শিশুরা। বায়ু, পানি ও কর্মক্ষেত্রের পরিবেশের দূষণ এবং শিশুদের ওপর ভারী ধাতু সিসার প্রভাবে বছরে ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের মোট দেশজ উৎপাদন অর্থাৎ জিডিপির প্রায় ২.৭ শতাংশ।
ঢাকার বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ যানবাহন। যানবাহন থেকে বের হওয়া কালো ধোঁয়া দূষণ ছড়াচ্ছে। রাতের বেলায় বর্জ্য পোড়ানো হচ্ছে। ২৫ নভেম্বর আদালত থেকে ঢাকার আশপাশে পাঁচটি জেলায় অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার আদেশ পাওয়ার পর ২৭ নভেম্বর থেকে মাঠে নেমেছিল পরিবেশ অধিদপ্তর। অভিযান পরিচালনার পর থেকে বায়ুদূষণের মাত্রা কমে আসে। পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে ইটভাটার পরই রয়েছে অবকাঠামো নির্মাণ। তৃতীয় ও চতুর্থ অবস্থানে রাতের বেলায় বর্জ্য পোড়ানো ও যানবাহনের ধোঁয়া। আদালতের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে রাজধানীর আশপাশের ইটভাটা ও নগরে চলমান বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্পে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু রাতে আবর্জনা পোড়ানো ও কালো ধোঁয়া নির্গমনকারী যানবাহনের বিরুদ্ধে কোনো অভিযান নেই।
রাজধানীতে চলছে মেট্রো রেলের কাজ। প্রায় পুরো রাজধানীজুড়ে চলছে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি। রাজধানী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ফিটনেসবিহীন যানবাহন। কালো ধোঁয়া পরিবেশ দূষিত করছে। ঢাকার বায়ুদূষণের এই প্রধান দুই কারণ চিহ্নিত হয়ে আছে অনেক আগে থেকেই। বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও নিয়ন্ত্রণে নেই। দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনো উদ্যোগ এখনই নিতে হবে।