কাজিরবাজার ডেস্ক :
দুর্নীতির মাধ্যমে যারা অবৈধ অর্থের পাহাড় গড়েছেন এমন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার এ্যাকশন অব্যাহত রয়েছে। শুধু দৃশ্যমান সম্পদ নয়, বিভিন্ন ব্যাংকের লকার কারা ব্যবহার করছেন এমন তালিকাও চাওয়া হয়েছে দুদকসহ সরকারী বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে। এর ফলে তফসিলি ব্যাংকগুলোতে এখন লকার ব্যবহারকারীদের তালিকা প্রস্তুতির কাজ চলছে বলে ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের পটিয়ার সংসদ সদস্য ও হুইপ শামসুল হক চৌধুরীসহ ৫০ জনের দেশ ছাড়ার বিপরীতে নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হওয়ার পর এখন তাদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের পক্ষে এ ধরনের পত্র দেয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে সন্দেহজনক দুর্নীতিবাজদের হিসাব দিতে বলা হয়েছে। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, হুইপ শামসুল হক চৌধুরী ছাড়াও ব্যাংক হিসাবের তথ্য যাদের চাওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য নুরুন নবী চৌধুরী শাওন, ঢাকা দক্ষিণের যুবলীগ সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী স¤্রাট, যুবলীগ নেতা জিকে শামীম, গণপূর্তের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, বিসিবি পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়া, অনলাইন ক্যাসিনো ব্যবসায়ী সেলিম প্রধান, ঢাকা দক্ষিণের কাউন্সিলর মুমিনুল হক সাঈদ, কৃষক লীগ সভাপতি সফিকুল আলম ফিরোজ, গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগ সহ সভাপতি এনামুল হক প্রমুখ।
এদিকে ব্যাংকিং চ্যানেল সূত্র জানিয়েছে, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা রিপোর্ট দিয়েছে দুর্নীতিবাজদের অনেকে টাকাকে বিদেশী মুদ্রায় রূপান্তর করে বিশেষ করে ডলার, পাউন্ড ও ইউরো মুদ্রায় পরিণত করে বিভিন্ন ব্যাংকের লকারে রেখে দেয়ার ঘটনা রয়েছে। এছাড়া অনেক দুর্নীতিবাজ জায়গা, জমি, বাড়ি গাড়ি ক্রয় করেও ভোগ বিলাসে মত্ত রয়েছেন। তফসিলি ব্যাংকের প্রতিটি শাখায় কারা কারা লকার ভাড়া নিয়েছেন এমন ব্যক্তিদের তালিকা দেয়ার নির্দেশনা প্রদানের পর তা নিয়ে কাজ চলছে। প্রসঙ্গত, একটি লকারের চাবি সাধারণত দু’ভাবে থাকে। একটি চাবি থাকে লকার যিনি ব্যবহার করেন তার হাতে, আরেকটি থাকে ব্যাংকে। লকার ব্যবহারকারীর প্রয়োজনে ব্যাংকের পক্ষ থেকে রক্ষিত চাবি দিয়ে লকার খুলে দেয়া হয়। এরপর ব্যবহারকারী নিজেই তার চাবি দিয়ে আরেক দফা খোলেন। কিন্তু লকারে কি রয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সর্বদাই অজানা থাকে। এ অজানা থাকার সুবিধায় দুর্নীতিবাজদের অনেকে বিদেশী মুদ্রা লকারে রাখার পথ খুঁজে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলশ্রুতিতে লকার ব্যবহারকারীদের তালিকা চাওয়া হয়েছে।
বর্তমানে বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও সরকারী বিভিন্ন সংস্থার পক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে দেয়া চাহিদা অনুযায়ী আদিষ্ট হয়ে সন্দেহজনকদের তালিকা প্রস্তুত করে চলেছেন।