হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
টানা তিনদিনের তীব্র ঠাণ্ডায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন হাওরাঞ্চলবাসী। নিত্যদিনের কাজকর্মে নেমে এসেছে স্থবিরতা। আশঙ্কাজনক হারে অসুস্থ হচ্ছে শিশু ও নবজাতক। গত দুইদিনে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮৫ শিশু এবং নবজাতক।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে দায়িত্বরত নার্স জবা আক্তার জানান, দুইদিনে ২৮ দিনের উপর বয়সের ৩৫ শিশু এখানে ভর্তি হয়েছে। প্রচণ্ড ঠাণ্ডার কারণে এরা নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়া প্রায় দুই মাস বয়সী কিছু শিশুও রয়েছে হাসপাতালে। এদের চিকিৎসা দিতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন ডাক্তাররা।
শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হবিগঞ্জ শহরতলীর বহুলা গ্রামের সোহেলা আক্তার জানান, শুক্রবার ঠাণ্ডার কারণে অচেতন হয়ে যায় তার সাড়ে ৩ বছরের শিশু নাঈমা আক্তার। পরে হাসপাতালে ভর্তির পর স্যালাইন পুশ করার কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফেরে।
ঠাণ্ডায় আক্রান্ত আজমিরীগঞ্জ পৌর এলাকার বাসিন্দা ৯ মাস বয়সী রিহাদ আহমেদকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তার মা জিবু আক্তার। বুধবার রাতে ঠাণ্ডায় আক্রান্ত হয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে রিহাদ। একপর্যায়ে প্রচণ্ড ডায়রিয়া দেখা দিলে তাকে নিয়ে সদর হাসপাতালে আসেন।
লাখাই উপজেলার ভরপূর্নি গ্রামের উর্মি রায় জানান, তার ৮ দিন বয়সী নবজাতকের নিউমোনিয়া হয়েছে। ডাক্তার বলেছেন ঠাণ্ডা লেগে এ অসুখ হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিক্যাল অফিসার দেবাশীষ দাশ বলেন, অতিরিক্ত ঠাণ্ডার কারণে রোটা ভাইরাসের প্রকোপ বেড়েছে। যে কারণে শিশুরা অল্পতেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়া নিউমোনিয়াও বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। হাওরাঞ্চলের শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।
বিশেষ করে নবজাতকের ব্যাপারে শ্রমজীবী মানুষদের অত্যন্ত সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, শীতে কাতরাচ্ছে বিভিন্ন বয়সের শিশুরা। আজমিরীগঞ্জের ৫ বছর বয়সী জোসনা বলে, শীতের কাপড় না থাকায় সারাক্ষণ ঘরের ভেতরেই থাকতে হয়।
অন্যদিকে গত দুইদিনে চা শ্রমিকসহ বিভিন্ন এলাকার ছিন্নমূল সহশ্রাধিক মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছেন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমী আক্তারসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতারা।